০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


শবে বরাত : আতশবাজি ও হালুয়া-রুটির প্রচলন

শবে বরাত : আতশবাজি ও হালুয়া-রুটির প্রচলন - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের, বিশেষ করে ঢাকার, মানুষ শবে বরাত বলতে মানুষ বুঝতো এমন একটি দিনকে, যেদিন সবার ঘরে ঘরে হালুয়া তৈরি করা হবে ও তা বিতরণ করা হবে আত্মীয়-স্বজন ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে। মসজিদে মসজিদে সারারাত জিকির করা বা নামাজ পড়ায় ব্যস্ত থাকবে পুরুষরা। আর সন্ধ্যার পর পোড়ানো হবে আতশবাজি।

শবে বরাতে এই আতশবাজি পোড়ানো ও আলোকসজ্জা করার রীতি কয়েক শ’ বছরের পুরনো।

ভারতীয় ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিদ্যাধর মহাজন তার বই ‘হিস্টরি অব মিডিইভাল ইন্ডিয়া’য় লিখেছেন যে- দিল্লির সুলতানদের আমলে এবং মোঘল আমলে শবে বরাতের রাতে বাদশাহদের প্রাসাদ ও মসজিদ আলো দিয়ে সাজানো হতো।

মোঘল আমলে শবে বরাত পালনের এই চিত্র উঠে এসেছে পার্বতী শর্মার ‘জাহাঙ্গির : অ্যান ইনটিমেট পোর্ট্রেট অব এ গ্রেট মোঘল’ বইয়েও, যেখানে সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমলে (১৬০৫-১৬২৭) শবে বরাত উদযাপনের সময় হালুয়া মিষ্টি জাতীয় খাবার বিতরণ ও আলোকসজ্জা করা হতো বলে লিখেছেন তিনি।

১৮৮০ সালে প্রকাশিত বৃটিশ পাদ্রী এডওয়ার্ড সেলের লেখা বই ‘ফেইথস ইন ইসলামে’ উঠে আসে যে সেসময় আতশবাজির পেছনে বিপুল পরিমাণ খরচ করা হতো। এডওয়ার্ড সেল ১৮৬৫ সাল থেকে তৎকালীন ভারতবর্ষের মাদ্রাজে পাদ্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অন্যদিকে, হালুয়া তৈরি করে আত্মীয় ও স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে বিতরণ করার সাথে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিম।

তিনি বলছিলেন, ‘আমরা জানি যে- রাসূলুল্লাহ সা: মিষ্টি খুব পছন্দ করতেন। তার পছন্দের জিনিসকে উম্মতরা পছন্দ করবেন, সেটাও তাকে পছন্দ করার একটা ধরণ। ফলে মিষ্টি হিসেবেই হালুয়া বানানোর প্রচলন শুরু, কারণ হালুয়া বানানোর উপকরণ এই অঞ্চলে রয়েছে।’

‘আর আনন্দের ভাগ অন্যদের দেয়ার জন্য বিতরণের রেওয়াজ তৈরি হয়েছে। এর সাথে ধর্মীয় অনুভূতি আর সামাজিকতা রক্ষা- দুটো বিষয়ই জড়িত রয়েছে।’
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement