২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কোরবানিতে অফুরন্ত সওয়াব

কোরবানিতে অফুরন্ত সওয়াব। - ছবি : সংগৃহীত

মুসলিম উম্মাহর সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। গ্রাম-গঞ্জে এ ঈদের আনন্দটাই হয় ভিন্নরকম। ঈদের নামাজ শেষেই শুরু হয় পশু জবাই। পশু শোয়ানোর জন্য গ্রামজুড়ে চলে হৈহুল্লোড়। পুরো গ্রামে ঘুরে ঘুরে পশু শোয়াতে সহযোগিতা করে কিছু সাহসী যুবক। আর ছোট্ট শিশুরা ছুটে বেড়ায় তাদের পিছু পিছু। এরপর শুরু হয় পশুর চামড়া ছাড়ানো ও গোশত কাটা । পরে কিছু গোশত একত্রিত করে তা বিলানো হয় সমাজের দরিদ্রদের মাঝে।

তবে কোরবানি নিছক খুশি ও আনন্দেরই বাহক নয়, বরং এটি তাকওয়া অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ। তাই কোরবানির নিয়ত হতে হবে বিশুদ্ধ। লৌকিকতা বা গোশত খাওয়ার নিয়ত থাকলে কোরবানি কবুল হবে না। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এসব পশুর রক্ত, গোশত আল্লাহর কাছে কিছুই পৌঁছে না। বরং তোমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের তাকওয়াই তাঁর কাছে পৌঁছে।' (সূরা হজ: ৩৭)

সব আমলের ফলাফল নির্ভর করে নিয়তের ওপর। নিয়ত বিশুদ্ধ না হলে আমল কবুল হয় না। হাদিস শরিফে পরিষ্কার ভাষায় বিবৃত হয়েছে। হজরত ওমর রা: বলেন, আমি প্রিয়নবী সা:-কে বলতে শুনেছি যে, ‘আমলের ফলাফল নির্ভর করে নিয়তের ওপর। সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়া লাভের জন্যে অথবা কোনো নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশে হিজরত করবে সে তা পেয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে পাওয়ার জন্য হিজরত করবে সেও তাঁদেরকে পেয়ে যাবে।' (সহিহ বুখারি :৩৮৯৮)

বান্দার সবকিছু হতে হবে শুধুমাত্র রবের সন্তুষ্টির জন্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ- সবই সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত।' (সূরা আনআম : ১৬২)

এই কোরবানি ইবরাহিম আ:-এর সুন্নত। এর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একেকটি নেকি দেয়া হবে। হজরত জায়েদ বিন আরকাম রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহ সা:-কে প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ কোরবানি কী? উত্তরে তিনি বললেন, এটি তোমাদের আদি পিতা হজরত ইবরাহিম আ:-এর সুন্নত। তাঁরা পুনরায় প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এতে আমাদের জন্য কী প্রতিদান রয়েছে? উত্তরে তিনি বললেন-কোরবানির পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি দেয়া হবে । তাঁরা আবারো প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ভেড়ার পশমের কি বিধান? তিনি বললেন, ভেড়ার প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি করে নেকি দেয়া হবে।' (সুনানে ইবনে মাজাহ:৩১২৭)

আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, ‘কোরবানির ঈদের দিন মানুষের সব নেক আমলের মধ্যে সর্বাধিক প্রিয় আমল হলো কোরবানি করা। কিয়ামতের ময়দানে জবেহকৃত জন্তু তার শিং, পশম, খুরসহ এসে হাজির হবে। নিশ্চয়ই কোরবানির রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহর কাছে তা কবুল হয়ে যায়। অতএব, তোমরা খুশি মনে কোরবানি করো।' (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩১২৬)

কোরবানি করলে অতীতের সগিরা গুনাহ মাফ হয়। হজরত আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, ‘রাসূলুল্লাহ সা: হজরত ফাতেমা রা:-কে বলেন, তুমি তোমার কোরবানির জন্তু জবাইয়ের স্থানে উপস্থিত থাকো। কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তোমার অতীতের সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করবেন। হজরত ফাতেমা রা: বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এই গুনাহ ক্ষমা হওয়ার বিষয়টি আমাদের জন্য নির্ধারিত, নাকি সব মুসলমানের জন্য? নবীজি সা: বললেন, আমাদের ও সব মুসলমানের গুনাহ ক্ষমা করা হবে।' (মুস্তাদরাক হাকিম :৭৫২৪ )

কোরবানি জাহান্নামের প্রতিবন্ধক
প্রিয়নবী সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি খুশি মনে সওয়াবের আশায় কোরবানি করবে, ওই কোরবানির জবেহকৃত পশু তার জন্য জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হবে।’ (আল মুজামুল কাবির : ২৭৩৭) আল্লাহ আমাদেরকে বিশুদ্ধ নিয়তে কোরবানি করার তাওফিক দান করুন! আমীন।

লেখক : মুহাদ্দিস-জামিয়া ইসলামিয়া হামিদিয়া বটগ্রাম, সুয়াগাজী, সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা।


আরো সংবাদ



premium cement
‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সকল