০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


হজ পালন শুরু

-

আজ ৯ আগস্ট শুক্রবার থেকে হজের আহকাম পালন শুরু হচ্ছে। সৌদি আরবের গণনা অনুযায়ী আজ ৮ জিলহজ। হাজীদের মক্কার অদূরে মিনার তাঁবুতে অবস্থানের দিন। আগামীকাল ১০ আগস্ট শনিবার ৯ জিলহজ মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিন অর্থাৎ হজের দিন। যদিও অধিকসংখ্যক হজযাত্রীর কারণে ভিড় এড়াতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই হজযাত্রীদের মিনার তাঁবুতে অবস্থান শুরু হয়। মূলত ৮ জিলহজ ফজরের নামাজের পর থেকেই ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ করতে করতে হাজীদের মিনার তাঁবুতে গিয়ে অবস্থান করার নিয়ম। সে হিসাবে হজের দিনগুলোর আনুষ্ঠনিক সূচনা আজ থেকেই। 

মিনায় অবস্থান করেই হাজীরা হজের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। সেখান থেকেই ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে রওনা হবেন। দিন শেষে আরাফাতের ময়দান থেকে ফেরার পথে মুজদালিফায় রাত যাপন করে সকালে আাবার মিনার তাঁবুতে ফিরে যাবেন। সেখান থেকে গিয়েই জামারাহ তথা শয়তানের প্রতিকৃতিতে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন। কোরবানি করবেন এবং তাওয়াফে জিয়ারাহ করে আবার মিনার তাঁবুতে ফিরে আসবেন। পরের দুই দিনও একইভাবে মিনার তাঁবু থেকে গিয়েই জামারাহতে পাথর নিক্ষেপ করবেন। ১২ অথবা ১৩ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ সমাপ্ত করে হাজীরা মিনার তাঁবু ত্যাগ করে হজের আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি ঘটাবেন। এরপর মক্কা ত্যাগ করার আগে বিদায়ী তওয়াফ করে যে যার দেশে বা অবস্থানে ফিরে যাবেন। মিনার তাঁবুতে হাজীরা ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনি তথা তালবিয়া পাঠ ছাড়াও এবাদাত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন। হজের মাসলা-মাসায়েল নিয়ে নিজেরা আলোচনা করেন। আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে মুনাজাত করেন।

কাল শনিবার ৯ জিলহজ মিনা থেকেই হাজীরা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে অবস্থান নেবেন। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের অন্যতম ফরজ। এখানে কেউ অবস্থান করতে না পারলে তার হজই আদায় হবে না। 

৯ জিলহজ ফজরের নামাজ পড়ে হাজীদের আরাফাতের উদ্দেশে রওনা দেয়ার নিয়ম। মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানের দূরত্ব সাত থেকে আট কিলোমিটার হবে। অনেকে হেঁটে আরাফাতের দিকে রওনা হন। দুপুরের আগেই হাজীরা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে অবস্থান নেবেন। অত্যধিক ভিড় এড়াতে আজ রাত থেকে হাজীদের আরাফাতের ময়াদানে নেয়া শুরু হবে। সেখানে হাজীদের বসা ও বিশ্রামের জন্য হালকা তাঁবুর ব্যবস্থা থাকে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থা আছে। আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরাহ থেকে গ্র্যান্ড মুফতি জোহরের ওয়াক্ত শুরু হলেই খুতবা দেবেন। সেখানে জোহর ও আসরের নামাজের পর পর জামাত হবে। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত ওই ময়দানে অবস্থান করে হাজীরা আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করে কান্নাকাটি করে কাটাবেন। সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ময়দান ত্যাগ শুরু করবেন। মিনায় ফেরার পথে মাঝে মুজদালিফা নামক স্থানে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়ে রাত যাপন করবেন। ১০ জিলহজ সকালে ওই ময়দান ত্যাগ করে মিনায় ফিরে আসবেন। 

মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভই হজ পালনের প্রধান উদ্দেশ্য। হজ পালনের মধ্যে যেমন আর্থিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তেমন শারীরিক পরিশ্রমের বিষয়ও রয়েছে। আর হজের প্রতিটি কাজের মধ্যেই আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য প্রকাশ, তার মুখাপেক্ষী হওয়া, তার কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ এবং তার নির্দেশিত পথে বাকি জীবন পরিচালনার বিষয়াদির স্বীকৃতি ও অনুশীলনই প্রকাশ পায়। এভাবে একজন হাজী আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মহান আল্লাহর ঘনিষ্ঠতা লাভ করে আত্মিক শক্তি অর্জন করেন, যা তার বাকি জীবনকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে বেশি করে উৎসাহিত ও প্রভাবিত করে। এ জন্যই হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, ‘হজে মাবরুর বা কবুল হওয়া হজের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।’ এ জন্য হাজীরা সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন আল্লাহ যেন হজ পালনকে সহজ করে দেন এবং তার হজকে মাবরুর হজ হিসেবে কবুল করেন।


আরো সংবাদ



premium cement