২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এক মাসের ছুটি নিয়ে এক বছর আমেরিকায় প্রাথমিকের শিক্ষিকা

সৈয়দপুরে প্রাথমিকের শিক্ষিকা এক মাসের ছুটি নিয়ে এক বছর যাবত আমেরিকায় - ছবি : নয়া দিগন্ত

এক মাসের ছুটি নিয়ে আমেরিকায় গিয়ে এক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা। দীর্ঘ দিনে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ অন্যান্য সহকর্মী ও শিক্ষা অফিসার কারো সাথেই যোগাযোগ নেই তার। ফলে তিনি জীবিত না মৃত অথবা কোথায় আছেন, কী করছেন বা কর্মস্থলে কেন অনুপস্থিত এ বিষয়ে কারো কাছে কোনো তথ্য নেই।

এমনই ঘটনার সূতিকাগার নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের রহমাতুল্লাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা ও পুরাতন বাবুপাড়া দারুল উলুম মাদরাসা মোড় এলাকার মাহমুদ আলমের স্ত্রী মোসাম্মৎ আশরাফী। তিনি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সপরিবারে এক প্রকার লাপাত্তা।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষিকা হাফিজা খাতুন বলেন, আমেরিকায় অবস্থানরত অসুস্থ শাশুড়িকে দেখার জন্য গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটির আবেদন করেন আশরাফী। তাতে আমি নিজে সুপারিশ করে শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা অধিদফতরে প্রেরণ করা হয়।

পরে তিনি ডিজি’র অনুমতি সাপেক্ষে বিদেশে চলে যান। তবে যাওয়ার সময় ছুটি মঞ্জুরির কোন প্রকার কাগজ বা প্রমাণপত্র বিদ্যালয়ে বা উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেননি। গৃহীত একমাসের ছুটি শেষ হলেও তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করলে টিও সারের নির্দেশে ১২ অক্টোবর ২০২১-এর পর থেকে হাজিরা খাতায় তাকে অনুপস্থিত দেখিয়ে আসছি।

প্রধান শিক্ষিকা আরো বলেন, তার সাথে আশরাফীর কোনো প্রকার যোগাযোগ নেই। কেন তিনি এতদিন ধরে আমেরিকায় তা জানি না। আপনার অধীনস্থ একজন ছুটি ছাড়া কিভাবে এতদিন বিদেশে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি চাকুরির বিধিমতে পাঁচ বছর পর্যন্ত ছুটি বর্ধিত করা যায়। হয়তো সেভাবেই আশরাফী ছুটি নিয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি প্রধান শিক্ষিকা।

সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহজাহান আলী মণ্ডল একইভাবে কোনোরকম কাগজপত্র বা আপডেট তথ্য দিতে পারেননি। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন। আমাদের আর কিছুই করার নাই।

আপনার লিখিত ফরওয়ার্ডিং-এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা অধিদফতর বা মন্ত্রণালয় কী ফিডব্যাক দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আর কোনো যোগাযোগ করিনি। সর্বশেষ কী অবস্থা সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আশরাফীর পরিবারের কাছ থেকেও কোনো তথ্য জানার চেষ্টা করেননি এই কর্মকর্তা।

এদিকে ওই শিক্ষিকা না থাকায় তার ক্লাসগুলো দীর্ঘ একবছর ধরে অন্য শিক্ষিকারা সমন্বয় করে নিচ্ছেন। এতে তাদের ওপর বাড়তি চাপ পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। শিক্ষিকারা আরো বলেন, ‘আশরাফী কারো সাথেই যোগাযোগ রাখেনি। এমনকি ফেসবুক একাউন্টটাও লক করে রেখেছে।’

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মতে, শিক্ষিকা আশরাফী মূলতঃ শাশুড়ির অসুস্থতার অজুহাতে আমেরিকায় গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। পাশাপাশি চাকরিও করছেন। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষিকাসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসার অবগত এবং ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকেও তারাই ম্যানেজ করে রেখেছেন। আর আমাদেরকে অতিরিক্ত খাটাচ্ছেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার মোবাইল ফোনে বলেন, শিক্ষিকার ছুটি বা অনুপস্থিতি বা ছুটির বিষয়ে আমি কোনো কিছু জানি না। তবে অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রংপুর বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোনো কিছু জানি না। কারণ ছাড়া ছুটিতে থাকতে পারে না।


আরো সংবাদ



premium cement
‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সকল