১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫
`


‘তুই মরণের জন্য তৈরি হ’

রংপুর, সাংবাদিক
হাসপাতালে চিকীৎসাধীন সাংবাদিক আব্দুর রহমান রাসেল - ছবি: নয়া দিগন্ত

দৈনিক প্রতিদিন সংবাদের রংপুর প্রতিনিধি আব্দুর রহমানের রাসেলের উপর হামলা চালিয়েছে পীরগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালমান ইকবাল সানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে দশটায় রংপুরের পীরগাছার পাওটানা এলাকায় তাঁর ওপর হামলা হয়।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎধীন আহত সাংবাদিক আব্দুর রহমান রাসেল জানান, শুত্রুবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে গ্রামের বাড়ী পীরগাছার পাওটানাহাট থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। পাওটানা বাজারের ঢাকা কোচ কাউন্টারে পৌঁছামাত্রই পীরগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালমান ইকবাল সান ও সদস্য উদয়ের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ১০/১২ জন নেতাকর্মী আমার মোটরসাইকেলের পথরোধ করে আমাকে সান ও উদয়ের মোটরসাইকেলের মাঝে বসিয়ে নিয়ে যেতে থাকে।

রাসেল বলেন, কামারপাড়া ব্রীজের কাছে এনে আমার ওপর চাকু মারে। এসময় আমি চিৎকার দিয়ে লাফ দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এসময় তারা আমার কাছে থাকা ল্যাপটপ, টাকা পয়সা, ড্রাইভিং লাইসেন্স বাসার চাবি ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার চেইন দিয়ে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার গলায় ছুরি চালানোর জন্য উদ্যত হয়। জীবন বাঁচাতে আমি দৌড় দিয়ে পাশের এক শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে উঠি। এরপর তারা খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে চলে যায়। পরে বিষয়টি আমি ওসিকে জানালে স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে এসআই নুর আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে আমাকে তাদের গাড়িতে করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। আমি এখন হাসপাতালের ৬ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছি।

সাংবাদিক রাসেল আরো জানান, তারা আমাকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে বলে তুই বহু বেড়েছিস। তোকে আজ মেরে ফেলবো। আমি তাদেরকে কেন মারবেন জানতে চাইলে তারা বলে তোর সেটা শুনে লাভ নেই। তুই মরণের জন্য তৈরি হ।

সাংবাদিক রাসেল জানান, ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। আমি বিভিন্ন সময় এসব বিষয় নিয়ে রিপোর্টিং করেছি। এছাড়াও মাদকের বিষয়গুলো নিয়ে আমি এলাকাবাসির অনুরোধে পুলিশকেও অবহিত করেছি। একারণে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা আমার উপর হামলা চালায়। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরেস চন্দ্র জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমি দ্রুতগতিতে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে পাঠিয়েছি। এখনও কোন মামলা হয় নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি।

এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারসহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিষ্টৈ এসোসিয়েশন, রংপুর, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও পাঠাগারসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।


আরো সংবাদ



premium cement