০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাজিপুরে যমুনার বুকে জেলেদের দূর্বিষহ জীবন

মাছ শিকারিদের নৌকাগুলো সিংলাবাড়ি ঘাটে নিরাপদ স্থানে -

করোনার কারণে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় যমুনা নদী থেকে মাছ ধরতে না পারায় কর্মহীন হয়ে হতদরিদ্র মৎস্যজীবী পরিবারের লোকজন দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে।

উপজেলার পূর্ব পাশ দিয়ে বহমান যমুনা নদী। যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ৪৫ বছরে হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বসত বাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়ে তারা আজ নিঃস্ব। অনেকে মাতৃভূমির মায়া ত্যাগ করে এলাকা ছেড়ে শহর কিংবা অন্যত্র চলে গেছে। অনেক পরিবারের লোকজন নাড়ির টানে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বাঁধে আশ্রিত অধিকাংশ পরিবারের লোকজন যমুনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।

করোনার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। যমুনা নদীতে মাছ শিকারিদের দুর্ভোগ বেড়েছে। মাছ শিকারিদের কষ্টের যেন শেষ নেই। জেলেরা সারারাত নদীর বুকে নৌকা বয়ে জাল দিয়ে বিভিন্ন জাতের মাছ ধরে। সকাল হওয়ার সাথে সাথে ওই মাছ নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি আড়তে নিয়ে যায়। মাছ বিক্রির টাকায় চলে ওদের সংসার। হাঁসি খুশিভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বচ্ছলভাবে দিন কাটতো তাদের। কিন্তু প্রকৃতির এই আচরনে জেলেদের মুখে নেই হাসি। পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন মহা সংকটে। কিভাবে চলবে তাদের সংসার। এদিকে সরকারি অনুদানের তালিকায় আছে মাত্র ১২শ’ পরিবার। তাদেরকে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। কোন কারণে মাছ ধরতে না পারলে সেদিন ওদের উপোষ থাকতে হয়। যমুনা তীরের মৎস্যজীবী প্রায় ২ হাজার পরিবারে নিত্যদিনের এমন চিত্র।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাছ শিকারিদের নৌকাগুলো সিংলাবাড়ি ঘাটে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। করোনার কারণে নদীতে নৌকায় একসাথে চালানো যায় না। ফলে নদী থেকে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। যমুনা নদীর ঘাটে নৌকা রেখে তারা দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে।

মৎস্যশিকারি তারাকান্দি গ্রামের বিমল, বরইতলী গ্রামের বিকাশ জানায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে তারা কয়েক দিন ধরে নদী থেকে মাছ ধরতে পারছে না। কারণ আড়তে ও হাট-বাজারে মানুষ পাওয়া যায় না। ফলে তারা খুবই অভাবে পড়েছে। ঋণের টাকায় সংসার চালাতে হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা অতিকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

কাজিপুর উপজেলার মেঘাই পাইকারি বাজারের আড়তদার রুবেল ও কালু জানায়, ৬টি ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণার কারণে মাছ ধরা এবং বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছের আমদানীও কমে গেছে। কাজিপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, সরকারিভাবে প্রায় ১২শ’ মৎস্যজীবীকে চাল দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রায় ২ হাজার মৎস্যজিবী রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement