২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অ ভি ম ত : বিএনপির সমাবেশ নিশানা করে পরিবহন ধর্মঘট

-

যাত্রাকালে কাটা নাক অর্থাৎ রক্ত দেখলে যাত্রা নাকি অশুভ, অসম্পূর্ণ বা অকল্যাণকর হয়, পরশ্রীকাতর তাই প্রতিপক্ষের যাত্রা অশুভ করতে, কাটা নাক দেখানোর জন্য কষ্টকর চেনেও নিজের মহামূল্যবান নাক কেটে অপরের ক্ষতি করতে প্রস্তুত থাকে, তারপরও যদি প্রতিপক্ষের ক্ষতি না হয়ে উপকার হয় তখন হিংসুটের দুঃখ আর ক্ষতির কোনো সীমা-পরিসীমা থাকে না। নাক, কষ্ট, চিকিৎসা সবই বৃথা।
বিএনপির গত কয়েকটি বিভাগীয় সম্মেলনের দিন পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হয়। বলা হয়- বিভিন্ন দাবিতে এ ধর্মঘট- সরকারের এতে হাত নেই, সম্মেলনের সাথে এ ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে সরকারের এমন বক্তব্য কারো কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়নি। তাই বলা যায়-কী দরকার ছিল এমন বলার! হঠাৎ ধর্মঘট, দাবি আদায় দূরের কথা, কোনো আশ্বাস ছাড়া দু-এক দিনের ধর্মঘট শেষ। এ কেমন আন্দোলন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর! ধর্মঘট বাস মালিকদের। কারণ ব্যাখ্যা করে সরকার। কী আজব কারবার!
রাজনীতিতে ভুল তথ্য অহরহ বলা হয়। এক হাজার মানুষকে ত্রাণ দিয়ে এর চেয়ে কয়েক গুণ বাড়িয়ে বলা হয়, কারণ, কে গুনে দেখবে; কিন্তু যা গণনা করা যায়, তা নিয়েও এমন প্রতারণা! সরকার এখন এমন ভুল করছে। রাজনৈতিক ভাষা এমন যে, ক্ষতিকর হলেও বলা হয়- কল্যাণকর।


অন্যদিকে, এ ধর্মঘট বিএনপির জন্য উপকারই বয়ে এসেছে। সমাবেশে উৎসুক অনেক পথচারী এমনি এমনিই আসেন। ধর্মঘটের কারণে সে সুযোগ তেমন ছিল না। নিবেদিত ও প্রকৃত বিএনপি নেতাকর্মীর আশাতীত সমাগম হয়ে দারুণভাবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সফল হয়েছে, যা এতদিন বিএনপি করতে পারেনি। আর একটি উপকার হয়েছে বিরোধী দলের, গাড়ি চললে যে কেউ নাশকতা করলে নিশ্চিতভাবে বিএনপির ঘাড়ে তা চাপানো হতো। এতে করে মামলা হতো এবং অনেক নেতাকর্মী হয়রানির শিকার হতেন। তা থেকে ষোলআনা সুরক্ষা পেয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিকে সরকারদলীয় কর্মীরা বিএনপিকে মোকাবেলা-দমন করবে ইত্যাদি বক্তব্য দিচ্ছেন। এটি কতটা আইনসঙ্গত।
গত আন্দোলনে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হাতে বোমা ধরিয়ে দিয়ে তাদের দায়ী করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এভাবে আন্দোলন দমানো যায় বটে, কিন্তু দীর্ঘ দিন সত্য চাপা দিয়ে রাখা যায় না। যত বাধাই আসুক না কেন, গণজোয়ারকে দক্ষতার সাথে চূড়ান্ত পর্যায়ে এগিয়ে নিতে হবে। এ দায়িত্ব বিরোধী দলের নেতৃত্বের ওপর বর্তেছে। এতে অবহেলা করার সুযোগ নেই। শুধু উপচেপড়া মহাসমাবেশ করলেই বিরোধী দলের চলবে না। ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষ থেকে ফল পর্যন্ত সবই নিরাপদ করতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতি পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও কল্যাণকর হোক, এ প্রত্যাশা সবার।
সিদ্দিক উল্লাহ
কুতুব খালী, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬


আরো সংবাদ



premium cement

সকল