সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বিএনপির মত বড় একটি দল অথচ তারা দলে কোন নেতা খুজে পাচ্ছে না। আগে শুনেছি জমি ও গরুর বর্গা দেয়া হয়, এখন দেখছি দল বর্গা দেয়ার জন্য ড.কামাল ও বি. চৌধুরীর কাছে ধর্ণা দিচ্ছে বিএনপি। যে বি. চৌধুরী আমাদের সাথে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, বলেছে- বিএনপির কোন বেল নেই। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাকেই এখন শক্তি মনে করছেন।
বৃহস্পতিবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) এর উদ্যোগে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রদত্ত অসুস্থ নির্মাণ শ্রমিকদের মাঝে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ১৭ জন দূরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত অসহায় নির্মাণ শ্রমিকদের ৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান করা হয়। ইনসাবের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা. এ.এম.এম আনিসুল আউয়াল পিএইচডি, ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, জি.এম দেলোয়ার হোসেন, মোঃ সাহেব আলী প্রমুখ।
জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যের নামে দেশে শয়তানে শয়তানে জোট হচ্ছে। এদেশে শয়তানদের রাজত্ব কায়েম করতে দেয়া হবেনা। তিনি আগামী নির্বাচনে আবারও ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি দূর করতে হলে এ সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আনা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রসঙ্গে মেনন বলেন, ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলা হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেলহত্যা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে দেশে যে বিচারহীনতার রাজনীতি চালু ছিলো তা থেকে জাতি পরিত্রাণ পেয়েছে। ১৪ বছর পর গ্রেনেড হামলা হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এ হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করার জন্য কিভাবে অপতৎপরতা চালিয়েছে তা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, হত্যাকারীদের শাস্তি হয়েছে, কিন্তু যারা স্বজন হারিয়েছন তাদের ক্ষতিপূরণ কে দিবে? তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অথবা যারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের কাছ থেকে এ ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।
আরো পড়ুন : ২১ আগস্ট মামলার রায় একতরফা নির্বাচনের কারসাজি : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক ১১ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:৪৫
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গতকাল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে সাজা দেয়া হয়েছে তা ‘স্টেট স্পন্সর্ড জাজমেন্ট’। আসলে বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার জন্যই সরকারের বিশেষ ব্যক্তির মনোবাঞ্ছা পূরণে এই রায়।
তিনি বলেন, এই রায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ জন্য যে, একতরফা নির্বাচন করার জন্য এই রায় একটি কারাসাজি। সেইসাথে মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বাসা-বাড়িতে তল্লাশির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। এসময় দলের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার জিয়াউর রজমান খান, সেলিমা রহমান, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মো: মুনির হোসেন ও আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
রিজভী বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ফাঁসানোর জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে কি নির্মমভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে আপনাদেরকে (সাংবাদিকদের) ইতোপূর্বে অবহিত করেছি। হাত-পায়ের নখ তুলে নিয়ে অকথ্য শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে সম্পূরক জবানবন্দী নেয়া হয়েছিল। মুফতি হান্নান দাবি করে বলেন, ব্যাপক নির্যাতন করে সিআইডির লিখিত কাগজে তার সই আদায় করা হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২০১১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো পত্রিকায়- ‘সম্পূরক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন মুফতি হান্নানের’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছে- ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের জড়িয়ে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন মুফতি হান্নান....। তিনি স্বেচ্ছায় আদালতে এধরনের কোনো জবানবন্দী দেননি। অবশ্য রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তির পর মুফতি হান্নানের সই নিয়ে তার আইনজীবী আবার আদালতে আবেদনটি জমা দেন। তবে এ নিয়ে আদালত কোনো আদেশ দেননি। হাতে লেখা ১০ পৃষ্ঠার প্রত্যাহার আবেদনে বলা হয়, গ্রেফতারের পর এ পর্যন্ত মুফতি হান্নানকে ৪১০ দিন রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।’ মুফতি হান্নান সেদিন আরো বলেছিলেন- ২১ আগস্ট বোমা হামলায় তারেক রহমান বা বিএনপির কেউ জড়িত নয়।
তিনি বলেন, সুতরাং বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যই কারো ইচ্ছা পূরণে গতকাল এই রায় দেয়া হয়েছে। কিন্তু জনগণ এই রায় প্রত্যাখান করেছে। এই রায়ের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিভাবে সারাদেশে বিক্ষোভ করেছে বিএনপিসহ সাধারণ জনগণও। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে বন্দুকের জোরে তাড়িয়ে দেয়া এবং সঠিক বিচার করতে গিয়ে জেলা জজ মোতাহার হোসেনকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। সুতরাং গতকাল নিম্ন আদালত যদি সঠিক রায় দিতো তাহলে তাকেও দুর্ভাগ্য বরণ করতে হতো।
রিজভী বলেন, লক্ষীপুরে অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে প্রকাশ্যে খুন করে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নিয়ে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তথ্যমতে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিশেষ ক্ষমতায় অন্যান্যদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজারের মতো ভয়ঙ্কর আসামীদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং সরকার এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত বিচার প্রক্রিয়া দুষ্টকে পালন করারই দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সুতরাং যতদিন এই ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতায় থাকবে ততদিন কেউ ন্যায়বিচার পাবে না বলেই জনগণ মনে করে।
সারাদেশে গ্রেফতার, হামলা ও নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে তল্লাশির চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে কেরানীগঞ্জ, জিঞ্জিরা, আবদুল্লাহপুর, শুভাড্যাতে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বিএনপি নেতাকর্মীদের দোকানপাট, বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা চালায়। হামলা চালিয়ে উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। কেরানীগঞ্জ (দক্ষিণে) এখন ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তিনি আরো জানান, মতিঝিল থানা বিএনপি নেতা হাসিবুর রহমান মান্নু, পল্টন ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মাখি আলম এবং মোঃ মনা, সরকারী কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদল নেতা খন্দকার ইরফান আহমেদ ফাহিম, নেত্রকোণা জেলা যুবদলের ওয়ারেশ উদ্দিন কারাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের খালিদ সাইফুল্লাহ মুন্নাসহ ১০ জন নেতাকর্মী, মাদারীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শাহাদাৎ হোসেন এবং সৈয়দপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবু সরকার, মো: বাবলু, মো: জাবেদ এবং মো: শাকিলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
রিজভী বলেন, বরিশাল মহানগর যুবদলের অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান শামীম, মাসুদ হাসান মামুন, তারেক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ যুবদলের সিরাজ ও মহিউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা যুবদলের আমির হোসেন ঢাকায় বংশাল থানা বিএনপি নেতা খালেদ হাসান টুটুল, মুগদা থানা বিএনপি নেতা মো: শাহজাহান, গেন্ডারিয়া থানা বিএনপি হাজী মো: ফারুক, খিলগাও থানা বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন দুলাল, নিজামউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম বাবুল, আরিফ, লিয়াকত, কাওছার, তোহিদ, ডেমরা থানা বিএনপি নেতা মো: মিন্টু, সাইদুর রহমান টিটু, মাসুদ রানা, আল আমিন, মো: রমজান, মো: ফিরোজ মিয়া, মো: শহিদুল রিপন খান, মো: খালেক, শ্যামপুর থানা বিএনপি নেতা মাসুদ পারভেজ, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা যুবদলের মো: ওমর ফারুক সেলিম, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ যুবদলের মো: মশিউর রহমান, ভোলার দক্ষিণ আইশা থানার ছাত্রদলের সাইফুল ইসলাম, দুলারহাট থানার কামরুল ইসলামকে গতকাল পুলিশ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করেছে এবং ভোলা জেলায় মোট ৪টি মিথ্যা মামলা রুজু করেছে।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত মঙ্গলবার ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিলের ওপর পুলিশ গাড়ী উঠিয়ে দিয়ে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করেছে। এছাড়া নেত্রকোনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ মুন্নাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সৌদি আরব পূর্বাঞ্চল বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক আ ক ম রফিকুল ইসলামকে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে ও নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সালেহ আহমেদ কাঞ্চনকে ঢাকায়, লালমনিরহাটে নূরুল ইসলাম প্রধান, হাতিবান্ধা খন্দকার মো: নুর নবী কাজল এবং সাতক্ষীরা ইসমাইল হোসেন নীরবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রিজভী বলেন, এছাড়াও শিবচর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমানের চট্টগ্রামের বাসায় পুলিশ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তল্লাশীর নামে ব্যাপক তান্ডব চালায় এবং বাসার আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে।
স্বেচ্ছাসেবক দল লালমনিরহাট জেলার সভাপতি আবু ইয়াহিয়া ইউনুস আহমেদের বাসায় তল্লাশীর নামে ব্যাপক ভাংচুর ও তান্ডব চালিয়েছে পুলিশ। দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা দায়ের, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন এবং বাসায় বাসায় তল্লাশীর নামে পুলিশী তান্ডবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী। একইসাথে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির ও বাসায় বাসায় পুলিশী তান্ডব বন্ধেরও দাবি জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা