৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


পরিকল্পিতভাবে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার সংকুচিত করা হচ্ছে

পরিকল্পিতভাবে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার সংকুচিত করা হচ্ছে। - সংগৃহীত

মাদরাসা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের আহবায়ক হাফিজ মোহাম্মাদ জাকির হোসাইন ও সদস্য সচিব শামিম আহমদ বলেছেন, শিক্ষা জাতির মৌলিক অধিকার। কিন্ত সরকার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরই নানা ভাবে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকারকে সংকুচিত করে বৈষম্য তৈরির মাধ্যমে তাদেরকে বঞ্চিত করে আসছে। যার সর্বশেষ নজির চলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সেখানে আবারো ভর্তি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন মাদরাসা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি কলা ও মানবিক অনুষদে ভর্তির ক্ষেত্রে ‘বিজ্ঞান’, ‘মানবিক’, ব্যবসা শিক্ষা ও মাদরাসা ও কারিগরি নামে চার ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। কিন্তু মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম বা এইচএসসি পাস করে আসা বিজ্ঞান বিভাগ ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘বিজ্ঞান’ ও ‘মানবিকে’ অন্তর্ভুক্ত না করে তাদেরকে আলাদা করা হয়। সেখানে অনুষদের মোট ৩৩৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ১৩টি আসন দেয়া হয়েছে। কলা অনুষদের সাতটি বিভাগের জন্য মাত্র দুইজন মাদরাসা ছাত্রীকে সিলেক্ট করা হয়েছে। যা বৈষম্যের আরেকটি নিকৃষ্ট নজির। যে জাবিতে মেয়েদের প্রাধান্য দেয়া হয়, সেই ক্যাম্পাসেই এখন মেয়েদের অবজ্ঞা ও অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে, শুধু মাদরাসায় পড়ার কারণেই। প্রতিটি বিভাগেই এমন ভাবে বৈষম্য করা হচ্ছে।

অথচ মাদরাসা শিক্ষার্থীরা সব শর্ত পূরণ ও হাইকোর্টের আদেশের ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছু মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সমপর্যায়ে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ২০০ নম্বরের সিলেবাস পড়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তারপরও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাথে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদ কর্তৃপক্ষ। ভর্তিতে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিভাগ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দোহাই দিয়ে ডিন বিভাগ আরো বৈষম্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে অন্যায়ের আশ্রয় নিয়ে নিয়ম ও মেধার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। অমান্য করা হচ্ছে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও। কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ও আইনত ভিত্তি ছাড়াই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মাদরাসা বোর্ডের শিক্ষার্থীদেরকে তাদের প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা একটি জাতির অগ্রগতির হাতিয়ার। পৃথিবীর কোন দেশে শিক্ষায় বৈষম্য দেখা যায় না। বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় মুসলিম দেশ হয়েও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বৈষম্যর শিকার হচ্ছে। মেধার সর্বোচ্চ স্বাক্ষর রাখলেও সুকৌশলে বৈষম্য সৃষ্টি করে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এ বৈষম্য মেনে নেয়া হবেনা। বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকগণ বলেছেন, একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির হস্তক্ষেপে কার্যকর ভাবে এ বৈষম্য বিলোপ করা সম্ভব।

সুতরাং অবিলম্বে এ বৈষম্য বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা ভিসি'র প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement