২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রূপকল্প ২০৪১: উন্নত বাংলাদেশ

রূপকল্প ২০৪১: উন্নত বাংলাদেশ - ফাইল ছবি

বর্তমান সরকার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিগত বছরগুলোতে নানা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে ২০৪১ সালকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে রূপকল্প-২০৪১ নামক দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) অনুমোদন দিয়েছে। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবে রূপায়ণ : বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১ এনইসি সভায় অনুমোদিত হয়।

আমরা ২০২৪ সালে পা রেখেছি। কিন্তু এই বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে গত কয়েক বছর তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। ২০২০ সালে করোনার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সবার অগোচরে থেকে যায়। আগামীতে নিশ্চয় রূপকল্প-২০৪১ নিয়ে আলোচনা হবে। হবে সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ প্রভৃতি। তার মাধ্যমে এই বিশাল পরিকল্পনার অনেক বর্ধন হবে। অনেক কিছুর পরিবর্তন আসবে। তত্ত্ব-তথ্য দিয়ে দেখানো হবে-এর শক্তি, দুর্বলতা, সম্ভাবনার দিক। আমরাও বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করি। কিছু কিছু আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করি ১৯৮ পৃষ্ঠার এ পরিকল্পনায় কী আছে, কিভাবে আছে!

রূপকল্প-২০৪১ এর মূল ভিত্তিমূলে দু’টি বিষয় প্রধান। এক. ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ, যেখানে মানুষের মাথাপিছু আয় হবে ১২,৫০০ ডলারের বেশি, দুই. বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা যেখানে দারিদ্র্য হয়ে যাবে অতীতের ঘটনা। এ লক্ষ্য অর্জনের পথে আগামী দুই দশকে পরিবর্তন আসবে কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, যোগাযোগ, ব্যবসার ধরন এবং কর্ম সম্পাদন পদ্ধতিতে। ধারাবাহিকভাবে এ পরিবর্তনের সুফল সমাজের সর্বস্তরে সুষম বণ্টনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে এ ‘ভিশন দলিল’ পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা বর্ণনা করা হয়েছে মোট ১২টি অধ্যায়ে।

রূপকল্প-২০৪১ এ প্রথম অধ্যায় রয়েছে একটি উচ্চ আয় অর্থনীতি অভিমুখে শীর্ষক শিরোনাম। প্রথম অধ্যায়ে ‘উদ্দীপনায় সূচনা’ হিসাবে ধরা হয়েছে জাতির পিতার আজন্ম লালিত স্বপ্ন দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতি ও শোষণহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাকে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামী দুই দশকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৯.০২ শতাংশ হারে। প্রবৃদ্ধির এই হারে বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ ২০৩১ সালে হবে একটি উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ। তখন মাথাপিছু জাতীয় আয় হবে ৩,২৭১ ডলার। ২০৪১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২১ কোটি ৩ লাখ। যাদের মাথাপিছু আয় হবে ১২,৫০০ ডলার। চরম দরিদ্র লোক, যাদের দৈনিক আয় থাকবে ২.১৬ ডলারের কম এমন লোকের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে ০.৬৮ শতাংশে। আর যারা দরিদ্র তাদের দৈনিক আয় থাকবে ৩.২০ ডলার, এমন লোকের সংখ্যা হবে ২.৫৯ শতাংশ। বলা যায়, এটি প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো ঘটনা। এই টার্গেট অর্জনের জন্য রফতানিমুখী শিল্পায়ন, কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, নগরের বিস্তার, দক্ষ জ্বালানি ও অবকাঠামো, দক্ষ জনশক্তি তৈরি প্রভৃতি কৌশলগত কাজ করার অস্বীকার করা হয়েছে।

ভিশন ২০৪১ এর দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে, দেশের ‘প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি ও সুশাসন নিশ্চিতকরণের অঙ্গীকার। এ পরিকল্পনা নির্ভর করছে সুশাসন, গণতন্ত্রায়ন, বিকেন্দ্রীকরণ এবং সক্ষমতা অর্জন- এ চারটি মৌলিক ভিত্তির ওপর। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুণগত মান উন্নয়নের বিষয়টি এখানে দেখা হচ্ছে।

সময়ের আলোচিত ‘Why nations Fail’ বইয়ে টেকসই উন্নয়নের জন্য ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক প্রতিষ্ঠান’- এর প্রয়োজনীয়তার কথা বারবার বলা হয়েছে। রূপকল্প ২০৪১ ঠিক তেমনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিচারব্যবস্থা নিয়ে বলা হয়েছে, স্বাধীনভাবে, সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তখনই দেশে সুশাসন ও বৈষম্যহীন উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে।

অধ্যায় তিন-এর শিরোনাম ‘একটি উচ্চ আয় অর্থনীতির দিকে ত্বরান্বিত অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো।’ আগামী দুই দশকের মধ্যে ‘সামষ্টিক অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নিয়ামক’ যেমন : প্রকৃত খাত (জিডিপি, মুদ্রাস্ফীতি, বিনিয়োগ, জনসংখ্যা ইত্যাদি- আর্থিক খাত (রাজস্ব আদায়, উন্নয়ন ব্যয়), ঋণ সংশ্লিষ্ট (অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণপ্রবাহ), বহিঃস্থ অর্থনীতি (রেমিট্যান্স প্রবাহ, আমদানি রফতানি, বিনিময় হার, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স), মুদ্রা সংশ্লিষ্ট (ব্রডমানি, নিট সম্পদ) এসবের বছরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যস্থির করা- হয়েছে এই অধ্যায়ে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, রাজস্ব আয়ে প্রত্যক্ষ করের বর্তমান অবদান মাত্র ৩০ শতাংশ। ২০৪১ সালে তা দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।

২০৪১ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হবে জিডিপির ৪৬.৮৮ শতাংশ, যা বর্তমানে রয়েছে ৩২.৭৬ শতাংশ। রফতানি আয় ২০২১ সালের কাক্সিক্ষত ৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০৪১ সালে দাঁড়াবে ৩০০ বিলিয়ন ডলার।

এক সময় ড. আকবর আলি খান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, গত ৪৯ বছরে ‘দারিদ্র্যের অনেক চিহ্ন বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছে।’ এরই ধারাবাহিকতায়, আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ ‘একটি দারিদ্র্যশূন্য দেশ’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে ‘ভিশন-২০৪১’ এর চতুর্থ অধ্যায়ে। ‘কাউকে পেছনে ফেলে নয়’, এসডিজির মূলনীতিকে গ্রহণ করা হয়েছে অনুপ্রেরণা হিসেবে। আগামী দিনের শ্রমবাজার হবে দক্ষতানির্ভর। তাই দ্রুত পরিবর্তনশীল আগামীর শ্রমবাজার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য গড়ে তুলতে হবে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে। সমাজের আয় বৈষম্য কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ঋণ বাজারের উন্নয়ন, সম্পদের সুষম বণ্টন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বৃদ্ধিকরণই হবে আগামী দিনের সরকার- যন্ত্রের অন্যতম করণীয়।

২০১৯ সালের ইউএনডিপির প্রতিবেদন অনুযায়ী ‘মানবসম্পদ উন্নয়ন’ সূচক ০.৬১৪ স্কোর নিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৫তম। এ সূচকের উত্তরণ ঘটানো জরুরি। ‘মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে মানব উন্নয়ন এবং জ্যামিতিক লভ্যাংশ আহরণ’ শীর্ষক পঞ্চম অধ্যায়ে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করার কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার- এসবের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ ২০১৮ সালে ছিল জিডিপির মাত্র ২.০ ও ০.৭৫ শতাংশ, ২০৪১ সালে এই ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে ৪.০ ও ২.০ শতাংশ।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে জিডিপিতে সেবা খাতের অবদান ৭০-৮০ শতাংশ। ২০১৯ সালে আমাদের দেশে সেবা খাতের অবদান মাত্র ৫১.৮২ শতাংশ। উন্নতির পথে আমাদের অর্থনীতির রূপান্তর ঘটবে কৃষি থেকে শিল্প খাতে। এজন্য প্রয়োজন হবে আন্তঃসম্পর্কিত বাণিজ্য ও শিল্পনীতির সমন্বিত প্রয়োগ। এ লক্ষ্যে ‘একটি ভবিষ্যদ্বাণী বিশ^ব্যবস্থার শিল্পায়ন, রফতানি বহুমুখীকরণ ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সপ্তম অধ্যায়ে অঙ্গীকার করা হয়েছে অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, শ্রমশক্তির দক্ষতা ও মান উন্নয়ন, উৎপাদনের সবপর্যায়ে উদ্ভাবন বিস্তারে গবেষণা, ব্যবসায় পরিবেশের উন্নতিকরণ, পিপিপির মাধ্যমে অর্থের জোগান, জলবায়ু সহিষ্ণুতা নিশ্চিতকরণের।

বর্তমানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বেশ উন্নতি হয়েছে। ২০১৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮,৯৬১ মেগাওয়াটে। আগামী বছরগুলোতে দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চাহিদা বেশ বৃদ্ধি পাবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে হবে ৫১,০০০ মেগাওয়াট।

‘একটি উচ্চ আয় দেশের জন্য টেকসই বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি’ শীর্ষক অষ্টম অধ্যায়ে বর্ণিত কৌশল মোতাবেক সে বছর ৫৬,৭৩৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করবে বাংলাদেশ। এ সময়ে বিদ্যুৎ খাতে যুক্ত হবে পারমাণবিক প্রযুক্তি। ২০৪১ সালে জ¦ালানি বিন্যাস হবে ৩৫ শতাংশ গ্যাস, ৩৫ শতাংশ কয়লা, ১২ শতাংশ পারমাণবিক, ১ শতাংশ তরল তেল এবং ১ শতাংশ জলীয়। বাকি ১৬ শতাংশ করতে হবে আমদানি।
২০৪১ সালে একটি আইসিটি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা লালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য একটি উদ্ভাবনমুখী অর্থনীতি সৃজনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এ অধ্যায়ে। উক্ত অধ্যায়ে ওয়াদা করা হয়েছে বর্তমানের নাগরিকের আইসিটি অভিগম্যতার স্কোর ৩৫.৭ থেকে বৃদ্ধি করে ২০৪১ সালে ৮৫-তে উন্নীত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশে^ ২০তম স্থান অর্জন করতে সক্ষম হবে।

দশম অধ্যায়ে শিরোনাম রাখা হয়েছে, ‘অব্যাহত দ্রুত প্রবৃদ্ধির জন্য পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো বিনির্মাণ’। এই অধ্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী দিনে রফতানি ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার জন্য দরকার হবে ভারী যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির। প্রয়োজন হবে উৎপাদিত পণ্য দ্রুত ও সময়মতো আন্তঃপ্রবাহ এবং বহিঃবাংলাদেশ যোগাযোগ। নগর যোগাযোগ ব্যবস্থায় এমআরটি ও মেট্রোরেলের সংযোগ, মহাসড়ক করিডোরের বর্তমান গড় প্রতি ২৫-৩০ কিমি./ঘণ্টা থেকে ৮০-১০০ কিমি./ঘণ্টায় উন্নীতকরণ, সব রেললাইনকে ব্রডগেজ সিস্টেমে উন্নীতকরণ ও আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল, স্থাপন, জাহাজের ‘নোঙর দিবস’ ও ‘গ্যাংশিফট’- এর উন্নয়ন, ড্রেজিং, নদীশাসন ও বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে নাব্যতার উন্নতিসাধন, বিমানবন্দরে অতিরিক্ত রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে স্থাপন, মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে আগামী দুই দশক ধরে মাশুল আদায় প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ।

নগরায়ণ ও উন্নয়ন অত্যন্ত গভীর ও ইতিবাচকভাবে সম্পর্কযুক্ত। উচ্চ অর্থনৈতিক ঘনত্বের কারণে শহরাঞ্চলই প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। উন্নত দেশের মতো আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশও মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ শহরে বাস করবে।
সেজন্য একটি উচ্চ আয়ের অর্থনীতিতে নগর পরিবর্তনশীলতার ব্যবস্থা শীর্ষক শিরোনাম একাদশ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ নীতির অধীনে গ্রামাঞ্চলে শহরের সব সুবিধা প্রসারিত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ঢাকাকেন্দ্রিক নগরায়ণ না করে প্রত্যেকটি জেলাকে কেন্দ্র করে নগরীর উন্নয়ন করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। নগরের বায়ুর মান, গণপরিবহন, ট্রাফিক, পয়ঃনিষ্কাশন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ব্যাপকভাবে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হবে।

দ্বাদশ অধ্যায়ে ‘একটি গতিশীল প্রাণবন্ত বদ্বীপ টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ ও জলবায়ুসহিষ্ণু জাতি বিনির্মাণ এবং সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা উন্মোচন’ শীর্ষক শিরোনামে জলবায়ু অভিযোজন প্রচেষ্টার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। জোয়ারের স্ফীতি, লবণাক্ততা, বন্যা, নদীভাঙন, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস বাংলাদেশের নিয়মিত বৈশিষ্ট্য, যা উন্নয়নের অন্তরায়। প্রণীতি ‘বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর আওতায় সুনীল অর্থনৈতিক সম্পদ (মৎস্য, সি-উইড, খনিজসম্পদ) আহরণ করতে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বর্তমান পরিকল্পনায়। ‘প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ নিঃসন্দেহে একটি সুলিখিত, উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন দলিল। খোলা চোখে তাতে হয়তো কিছু অসঙ্গতিও ধরা পড়বে। আজ থেকে বিশ বছর পরে হয়তো কিছু চাওয়া অধরা থেকে যাবে। অর্থনীতিবিদরা হয়তো তাতে সমালোচনা করবেন, নানা প্রশ্ন তুলবেন, হবে নানা ভাবে আত্মসমালোচনা।

সেসব নিয়ে আপাতত নাই লিখি। আমরা আত্মবিশ্বাসী হই- বিগত দিনের অর্জন দেখে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী ট্যানেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রভৃতি দেখে আমাদের আস্থা দৃঢ়তর হয়।

২০২১-২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা মূলত এক সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ অর্জনের উন্নয়ন রূপকল্প, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যসমূহ একটি কৌশলগত বিবৃতি এবং তা বাস্তবায়নের পথ-নকশা হিসেবে কাজ করবে। এই ‘পথ-নকশা’ ধরে আমরা ২০৪১ সালে অর্জন করব উন্নত, সমৃদ্ধ, সোনার বাংলা।

e-mail:aqhaider@youthgroupbd.com


আরো সংবাদ



premium cement