২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিজ্ঞানী হত্যাকারীর সাজা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার খামেনির

-

ইরানের অন্যতম শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে হত্যার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, হত্যাকারী ও এর নির্দেশদাতাদের সাজা নিশ্চিত করাই ইরানের অগ্রাধিকার।
গত শুক্রবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ওই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত গবেষণা ও উদ্ভাবনী সংস্থার প্রধান মোহসিন ফাকরিজাদেহকে বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী ও তার দেহরক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত ফাকরিজাদেহকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে চিকিৎসক দল তাকে বাঁচাতে সব রকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আর কিছুক্ষণ আগে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
এক বিবৃতিতে ফাকরিজাদেহকে ‘দেশের বিশিষ্ট পরমাণু ও প্রতিরক্ষামূলক বিজ্ঞানী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেছেন, ‘হত্যাকারী এবং যারা এ হত্যাকাণ্ডের আদেশ দিয়েছিল, তাদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করাটাই এখন ইরানের অগ্রাধিকারে বিষয়।’ এ সম্পর্কে আর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি খামেনি।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ইরানের চারজন পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যার শিকার হন। এসব হত্যায় আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরাইল জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান। ২০১৮ সালের মে মাসে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত এক উপস্থাপনায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিশেষভাবে মোহসিন ফাকরিজাদেহর নাম উল্লেখ করেন।
সংযমের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের
তবে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জাতিসঙ্ঘের একজন মুখপাত্র মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপট তৈরি হওয়ায় সব পক্ষকে সংযম রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।
ফাখরিজাদেহর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা যেকোনো হত্যাকাণ্ড বা বিচারবহির্ভূত হত্যার নিন্দা জানাই। গত শনিবার তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সংযম দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছি। এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়তে পারে; এমন যেকোনো পদক্ষেপ এড়ানোর আহ্বান জানাই।’
হত্যার অভিযোগ অস্বীকার ইসরাইলের
এ দিকে রয়টার্স জানায়, ফাখরিজাদেহকে হত্যার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে ইরান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ দাবি করেছেন, এ ঘটনায় ইসরাইলের হাত রয়েছে। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হচ্ছে। ফাখরিজাদেহকে ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিবেচনা করে থাকে পশ্চিমা বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
ইসরাইলের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও সেটেলমেন্ট অ্যাফেয়ার্স-বিষয়ক মন্ত্রী তাজাচি হানেগবি গত শনিবার দাবি করেছেন, তেহরানের ওই বিজ্ঞানীকে হত্যার নেপথ্যে কে আছে, সে বিষয়ে তাদের বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। উল্লেখ্য, হানেগবি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ইসরাইলের টিভি চ্যানেল এন১২-এর মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ইসরাইলি মন্ত্রী হানেগবি বলেন, ‘এটা কে করেছে, সে সম্পর্কে আমার ধারণা নেই। আমি দায়ী বলে মুখবন্ধ তা নয়, আসলেই আমার কাছে কোনো সূত্র নেই।’


আরো সংবাদ



premium cement