১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


মার্কিন পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনে শান্তি আসবে না : মাহমুদ আব্বাস

ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস : এএফপি -

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আবারো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা বা ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনে শান্তি আসবে না। রোববার রামাল্লায় ফাতাহ দলের নেতাদের সাথে আলাপের সময় তিনি এ কথা বলেন।
আব্বাস বলেন, ট্রাম্পের এ চুক্তি ফিলিস্তিনিদের জন্য অপমানজনক এবং অর্থ সহায়তার লোভ দেখানোর মাধ্যমে তিনি ফিলিস্তিনিদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছেন। ফিলিস্তিন সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কোনো চুক্তিই হবে না। রাজনৈতিক সমাধানের আগে অর্থনৈতিক সমাধান নিয়ে আলোচনা হওয়াই উচিত নয়। আর সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে কেবল রাজনৈতিক উপায়েই সঙ্কট সমাধান সম্ভব। ফিলিস্তিন সঙ্কটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত টাম্পের ওই চুক্তি কোনোভাবেই পাস হতে পারে না। সারা বিশ্বই ওয়াশিংটনের বিতর্কিত শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করবে। এই প্রস্তাবকে বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনিরা। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশন (পিএলও)-এর নির্বাহী কমিটির অভিজ্ঞ সদস্য হানান আশরাবি বলেন, প্রথমে গাজা উপত্যকার ওপর থেকে ইসরাইলি অবরোধ তুলে নিতে হবে। ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনিদের ভূমি ও সম্পদ চুরি করছে তা থামাতে হবে। আমাদের চলাফেরার স্বাধীনতা দিতে হবে। নিজেদের স্থল, নৌ ও আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের দিতে হবে। এরপরই স্বাধীন দেশের নাগরিকরা অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে অগ্রসর হতে পারেন। ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরাইলের দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব শেষ করার একমাত্র উপায় রাজনৈতিকভাবে তা সমাধান করা।
এ ছাড়া প্রস্তাবের বিরোধিতা করে গাজার নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামী প্রতিরোধ অন্দোলন হামাস বলছে, ‘ফিলিস্তিন বিক্রয়ের জন্য নয়’। গাজা উপত্যকায় হামাসের কর্মকর্তা ইসমাঈল রাদওয়ান বলেন, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত সবদিক থেকেই আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি প্রত্যাখ্যান করছি। ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি একটি জাতীয় সঙ্কট। তারা ইসরাইলি দখলদারিত্ব থেকে নিস্তার পেতে চান। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কোনো বিক্রির বিষয় নয় এবং এটি নিয়ে কোনো দরকষাকষি হতে পারে না। ফিলিস্তিন পবিত্র ভূমি। এখানে দখলদারিত্ব অবসানের কোনো বিকল্প নেই।
হামাসের রাজনৈতিক দফতরের প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়া গাজায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মার্কিন সরকারের কথিত ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি ফিলিস্তিনিদের মসজিদুল আকসা থেকে আলাদা করতে পারবে না। বায়তুল মুকাদ্দাস প্রাচ্যেরও নয়; পাশ্চাত্যেরও নয় বরং এটি হচ্ছে ইসলামের, এটি থেকে আমাদের আলাদা করা যাবে না।
হামাসের পলিট ব্যুরোর সদস্য ওসামা হামদান বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ফিলিস্তিনকে চাপ দিতে আরব দেশগুলোকে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা যে সমাধানের কথা বলছে সেটা আসলে ইসরাইলের স্বার্থ সংরক্ষণ করে।
ইলেকট্রনিক ইন্তিফাদার সহ-প্রতিষ্ঠাতা আলী আবুনিমাহ বলেন, মার্কিন পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে কোনো বিনিময় ছাড়াই ফিলিস্তিনকে কিনে নেয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র শান্তি পরিকল্পনা নয় বরং ফিলিস্তিনিদের জন্য আত্মসমর্পণের দলিল তৈরি করেছে। কত টাকা দেয়া হচ্ছে, তার ওপর ভিত্তি করে এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনিরা কখনোই মেনে নেবে না। এটা শান্তি পরিকল্পনা নয় বরং আত্মসমর্পণের দলিল। কোনো পরিমাণ অর্থ দিয়েই এটাকে গ্রহণযোগ্য করা যাবে না।
ফিলিস্তিনের অর্থমন্ত্রী শুকরী বিশারা মিসরের কায়রোতে আরব দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের দেশ গড়ার জন্য এই সপ্তাহে বাহরাইনে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বৈঠকের দরকার নেই, আমাদের শান্তি প্রয়োজন। এ পরিকল্পনাটির মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ অবাস্তব এবং বিভ্রান্তিকর। সবকিছুর আগে আমাদের জমি এবং আমাদের স্বাধীনতা আমাদের দাও।’
মাহমুদ আব্বাস গত বছরই ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টাকে ‘শতাব্দীর সেরা চপেটাঘাত’ বলে অভিহিত করেছিলেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী ফিলিস্তিন নামে কোনো দেশ থাকবে না। গাজা উপত্যকা, যিহুদিয়া পার্বত্য এলাকা এবং পশ্চিম তীরের সামারিয়া এলাকা নিয়ে গঠিত হবে নতুন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিউ প্যালেস্টাইন। পশ্চিম তীরের ইসরাইলি বসতিগুলোর ওপর তার কোনো সার্বভৌমত্ব থাকবে না। উভয় দেশের অখণ্ড রাজধানী জেরুসালেম নগরীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসরাইলের জেরুসালেম পৌরসভার কাছে ট্যাক্স ও পানির বিল সরবরাহ করবে নিউ প্যালেস্টাইন। নগরীর আরব বাসিন্দারা নিউ প্যালেস্টাইনের নাগরিক আর ইহুদিরা ইসরাইলি নাগরিক হিসেবে সেখানে বসবাস করবেন। ফিলিস্তিনে একটি বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য মিসর নতুন জমি দেবে। তবে ফিলিস্তিনিরা এখানে বসবাসের সুযোগ পাবে না। নিউ প্যালেস্টাইন লিজ বাবদ মিসরকে মূল্য পরিশোধ করবে, কোনো সামরিক বাহিনী প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাবে না, বিদেশী আগ্রাসন থেকে দেশ রক্ষায় ইসরাইলকে অর্থ দেবে, হামাস তার সব অস্ত্র মিসরের কাছে জমা দেবে। পিএলও যদি এ চুক্তি মেনে নেয় এবং হামাস ও ইসলামিক জিহাদ যদি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে তাহলে দল দু’টির নেতারাই এর জন্য দায়ী থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement
৪২ বছর পর স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে জানতে পারলেন তিনি মুসলিম, অতঃপর...! নুসিরাতে ইসরাইলি হামলায় ২০ জন নিহত চেলসিতেই যাচ্ছেন মেসিনিয়ো! প্রতিকূল ফ্রান্স ছাড়ছেন মেধাবী মুসলিম পেশাজীবীরা রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ, বাসে হামলা সোনাতলায় শ্বশুরবাড়িতে জামাই খুন : স্ত্রীসহ আটক ২ এডব্লিউএস কমিউনিটি ডে বাংলাদেশ উদযাপন কাঁচের ভবনের কারণে তাপদাহ বাড়ছে? কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলা, নিহত সাবেক বিজেপি নেতা উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার তীব্র আক্রমণের আশঙ্কা জেলেনস্কির মেট্রোরেল টিকেটে ভ্যাট আরোপ পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : সেতুমন্ত্রী

সকল