২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বাংলাদেশে ফেসবুকের বিজ্ঞাপনী কার্যক্রম সীমিত

বাংলাদেশে ফেসবুকের বিজ্ঞাপনী কার্যক্রম সীমিত। - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনের কার্যক্রম সীমিত করেছে ফেসবুকসহ পুরো মেটা প্ল্যাটফর্ম। সম্প্রতি চিঠির মাধ্যমে এমনই এক ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশে ফেসবুকের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এইচটিটিপুল।

গ্রাহকদেরকে কাছে পাঠানো এইচটিটিপুলের ওই চিঠি থেকে জানা গেছে, ডলার সঙ্কট ও বিদেশে রেমিট্যান্স জটিলতা অর্থাৎ অর্থ স্থানান্তরে সমস্যার কারণে তাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এর ফলে এফ-কমার্স হিসেবে পরিচিত ফেসবুকনির্ভর বাংলাদেশের বহু উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে সমস্যায় পড়বেন।

এইচটিটিপুল হলো ফেসবুক তথা মেটার বাংলাদেশী সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ। তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রাহকরা ফেসবুকে যেকোনো বিজ্ঞাপনের বিল ডলারে না দিয়ে টাকায় দিতে পারে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের কারণে এইচটিটিপুলের মাধ্যমে আপাতত বাংলাদেশ থেকে ফেসবুকসহ মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইনের মূল্য পরিশোধ করা যাবে না বা এটি সীমিত থাকবে।

সাম্প্রতিক এ পরিস্থিতির ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলে চিঠিতে জানিয়েছেন এইচটিটিপুল বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক সানি নাগপাল। সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে তারা ডিজিটাল মাধ্যমে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। পরিষেবাটি চালু হওয়া মাত্র তারা বিষয়টি সবাইকে জানাবেন বলে চিঠিতে জানানো হয়।

এইচটিটিপুলের সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর মেটার এ সিদ্ধান্তে উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এইচটিটিপুলের মাধ্যমে যেটা করা হয় সেটা বৈধ। অনেকে ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে ফেসবুক বা অন্য মাধ্যমের বিজ্ঞাপনের অর্থ পরিশোধ করে থাকে। সেসব পথ অবৈধ। এইচটিটিপুলের এ জটিলতার কারণে আবার না সেই পথটাই উদ্যোক্তাদের বেছে নিতে হয়।

তিনি আরো জানান, ‘দারাজ, উবার, ফুডপান্ডার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো সমস্যা হবে না। ফেসবুক বিজ্ঞাপনের মূল্য তাদের মূল প্রতিষ্ঠান থেকে পরিশোধ করা হয়। বেশি সমস্যায় পড়বে দেশী প্রতিষ্ঠানগুলো।’

কিছু বিকল্প সমাধানের কথা জানিয়েছে তারা। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সদস্যদের কাছে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের কো-ব্র্যান্ডেড প্রিপেইড কার্ড। এ কার্ড ব্যবহার করে এর সদস্যরা ফেসবুকে তাদের বিজ্ঞাপন দিতে পারবে।

দেশের সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বেসিসের সদস্যদের কাছে কো-ব্র্যান্ডের ক্রেডিটকার্ড রয়েছে। তার মাধ্যমে সাধারণত হোস্টিং, সফটওয়্যার লাইসেন্সের বিল পরিশোধ করা যায়। সেই কার্ড দিয়ে ফেসবুক বা অন্য মাধ্যমের বিল পরিশোধ করা যাবে না এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বেসিস সদস্যরা সেই কার্ড ব্যবহার করেও কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন।

ফেসবুকভিত্তিক উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্ম উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্টের (উই) প্রেসিডেন্ট নাছিমা আক্তার নিশা বলেন, ‘আমরা এইচটিটিপুলের সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে যে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কোনো সমস্যা হবে না। তারা আগের মতোই ফেসবুকে কনটেন্ট বুস্ট করতে পারবে, পেজ প্রোমোশন করতে পারবে। সেই বিলের অর্থ এইচটিটিপুলের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।’

আপাতত বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশি সমস্যা হতে পারে। নাছিমা আক্তার নিশা জানান, এইচটিটিপুল দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করবে বলে তারা তাকে আশ্বস্ত করেছে।

এইচটিটিপুল বাংলাদেশ নয় মাস ধরে ফেসবুকের বিল বকেয়া রেখেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। নয় মাসের বিল পরিশোধ না করার কারণে ফেসবুক ‘বিজ্ঞাপন সীমিতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। যদিও এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement