২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মায়ের পরকীয়ার জন্য প্রাণ দিতে হয় পারভেজকে

মা-সহ আটক ৬
মা-সহ আটককৃতরা - ছবি : নয়া দিগন্ত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মায়ের পরকীয়ার কারণেই প্রাণ দিতে হয়েছে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র পারভেজ মোশাররফকে। মায়ের অনৈতিক সম্পর্ক জেনে ফেলায় এবং তা বাবাকে বলে দেয়ার হুমকি দিলে তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র‌্যাব ও পিবিআই।

এ ঘটনায় মা, মায়ের প্রেমিক, আপন চাচাসহ পাঁচজনকে র‌্যাব ও এক যুবককে আটক করেছে পিবিআই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে র‌্যাব কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে হত্যাকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততার কথা জানান র‌্যাব-১৪ ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপ-অধিনায়ক মেজর মো: ফজলে রাব্বি।

জানা যায়, নিখোঁজের দুই দিন পর গত রোববার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে পারভেজের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহতের চাচা নুরুল আমিন গত সোমবার রাতে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও র‌্যাব তদন্ত শুরু করে। এতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হত্যাকাণ্ডের সাথে মা ও তার প্রেমিকসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।

র‌্যাব অভিযান চালিয়ে কিশোর পারভেজের মা রুজিনা বেগম (৩০), তার প্রেমিক এমদাদুল হক (৩৮), মো: গণি (৪৫), সুলতান উদ্দিন (৪০) ও নিচতের চাচা রুহুল আমিনকে (৫৮) আটক করে।

র‌্যাব জানায়, পারভেজের মা রুজিনা বেগমের সাথে পরকীয়া ছিল এমদাদুল হকের। পারভেজ মায়ের পরকীয়া জানতে পারায় হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। অর্থের বিনিময়ে লোক ভাড়া করে পারভেজকে হত্যা করার কথা আটককৃতরা স্বীকার করেছে।

এদিকে, পারভেজ হত্যা মামলাটি তদন্তের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে পিবিআই ময়মনিসংহ শাখা। তদন্তভার গ্রহণের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআই গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে রবিউল ইসলাম (১৭) নামে একজনকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, স্কুলছাত্র পারভেজের মা একাধিক পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েছিলেন। মায়ের অসংলগ্ন সম্পর্ক, মোবাইল ফোনে কথা বলা সব কিছুতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ছেলে। মাকে সতর্কও করে। কিন্তু মা সতর্ক না হওয়ায় পরকীয়ার বিষয়টি বাবাকে জানানোর হুমকি দেয়। এতে মা প্রতিবেশী রবিউলকে ৫০ হাজার টাকার প্রলোভন দেখায় ছেলেকে হত্যার জন্য।

ঘটনার দিন রাতে মা কৌশলে পারভেজকে নদীর পাড়ে পাঠায়। নদীর পাড়ে গিয়ে মোবাইল ফোন দিয়ে ফেরার পথে মাথায় আঘাত করতে শুরু করে রবিউল। হত্যা করে পারভেজের লাশ নদীতে ফেলে দেয়। আদালতে রবিউল হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পারভেজকে মোবাইল ফোনে জরুরি কথা আছে জানিয়ে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। কিন্তু সে রাতে পারভেজ আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। রোববার সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ব্রহ্মপুত্র নদে লাশ পাওয়া যায় পারভেজের।

পারভেজ মোশাররফ উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচার চর উত্তরপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মঞ্জুরুল হকের ছেলে। সে মরিচার চর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিল।


আরো সংবাদ



premium cement