১০ বছর পর ‘মেসিয়ানিক এরা’র প্রথম অ্যালবাম
- আলমগীর কবির
- ০৬ জুলাই ২০২১, ১০:০৩
প্রথম অ্যালবামের জন্য ১০ বছর সময় নিয়েছে মেসিয়ানিক এরা। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ড দলটি চলতি বছরের ১৮ জুন প্রকাশ করেছে তাদের প্রথম অ্যালবাম। ব্যান্ডের সাথে মিলিয়ে নাম রাখা হয়েছে মেসিয়ানিক এরা। গান রাখা হয়েছে ৯টি। যার প্রথম ও শেষ গান দু’টি ইনস্ট্রোমেন্টাল, বাকি সাতটি গান লিরিক্যাল।
ব্যান্ডের প্রধান ভোকালিস্ট নাভিদ এহসান জানিয়েছেন, অ্যালবামের গানগুলো বাছাই করার ক্ষেত্রে সব শ্রেণীর শ্রোতাদের কথা মাথায় রাখা হয়েছে। তাই বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি গানও স্থান পেয়েছে। গানগুলো হলো- অ্যারাইভাল (আগমন), মুখোশ, অস্বীকার, জয়োৎসব, ইল্যুশান (কল্পনা), রূপান্তর, বারজাখ (কবরের জীবন)। নাবিদ বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের অনেকেই এখন ওয়েস্টার্ন মিউজিকের দিকে ঝুঁকছেন। ওই শ্রোতারাও যেন আমাদের গান শোনেন সে দিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’ গীতিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের একজন লিরিসিস্ট আছেন। তার নাম সামিন ইয়াসার। আমি তাকে কিছু আইডিয়া দিয়েছিলাম তার ওপর ভিত্তি করে সেসব গান লিখেছে। আমি সুর করে দেয়ার পর সে আমাকে হেল্প করেছে ‘ওয়ার্ড’গুলো দিয়ে। সাতটি গানের চারটি লিখেছে সামিন। বাকি তিনটি গান লিখেছেন মাথুর মান্নান ও আখলাকুর রহমান। গানগুলো শ্রোতারা কোথা থেকে শুনতে পারবে এমন প্রশ্নের জবাবে এহসান বলেন, এটি আমরা করেছি ইন্ডিপেন্টেলি করেছি। আমাদের ব্যান্ডের ইউটিউব চ্যানেলে গানগুলো পাওয়া যায়, স্পটিপাইতে পাওয়া যায়। ‘গান’ নামের একটি প্লাটফর্ম আছে সেখানেও গিয়েও শ্রোতারা শুনতে পারবেন গানগুলো।
মেসিয়ানিক এরা’র লাইনআপে আছেন চারজন। তারা হলেন- নাভিদ এহসান (ভোকালিস্ট, গিটারিস্ট), তাহমিদ রহমান (গীতারিস্ট), রক্তিম (বেজিস), রাফায়েত জীম (ড্রামার)। তবে শুরু দিকে যে চারজন ছিলেন এখন সেখানে আরো দু’জন যুক্ত হয়েছেন। তবে ব্যান্ডের সদস্য সংখ্যা বাড়েনি কারণ পুরনো দু’জন চলে যাওয়ার পর নতুন দু’জন প্রবেশ করেছেন ২০১৫-১৬ সালের দিকে। নাভিদ এহসানের ভাষায় বর্তমান লাইনআপটিই আমাদের সেরা। তিনি বলেন, প্রথম দিকে যে চারজন ছিলাম তাদের নিয়ে খুব বেশি এগোতে পারছিলাম না। তবে এখন আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।
ব্যান্ডের নাম মেসিয়ানিক এরা রাখার কারণ প্রসঙ্গে নাভিদ বলেন, ‘প্রথমে আমরা চিন্তা করেছিলাম মেসিয়াহ নাম রাখার। কিন্তু এই নামে আগে থেকেই একটি ব্যান্ড রয়েছে। তাই আমরা এর কাছাকাছি কিছু খুঁজতে থাকি এবং মেসিয়ানিক এরা নামটি পেয়ে যাই। এর পেছনে বিষয় হলো, রক ও মেটাল মিউজিকের সাথে জড়িত বিশালসংখ্যক লোক তাদের ব্যান্ডের নাম ও লিরিকের ক্ষেত্রে সহিংসতা নিয়ে আসে। আমরা এ জায়গায় ইতিবাচক মনোভাব তথা শান্তিময় ভঙ্গি নিয়ে এসেছি।’ প্রথম দিকে অ্যালবামটি প্রকাশের কথা ছিল ২০১৭ সালে, কিন্তু সেটি শ্রোতাদের কাছে পৌঁছেছে চলতি বছর। শ্রোতাদের এত দিন অপেক্ষায় রাখার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা এত সময় নিয়েছি নিখুঁত কিছু তৈরি করতে, এমন কিছু যা শুনে আমাদের ভালো লাগে। যেহেতু আমরাই আমাদের প্রথম শ্রোতা। আমাদের মতে, যদি কোনো কিছু শুনতে আমাদের ভালো লাগে তবে তা নিয়েই আমাদের জন্য অগ্রসর হওয়া ভালো। আর ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে বলতে হয়, আমরা কল্পনা করতে পারিনি একটি অ্যালবাম বের করা কতটা বিশাল কাজ হতে পারে। রূপান্তর ও মুখোশের মতো কিছু কিছু ট্র্যাকে এর মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে, যা মিউজিক বিষয়ে আমাদের অনুধাবনের পরিবর্তনের ফলে ঘটেছে।
অ্যালবামটি তৈরির চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অ্যালবামটি তৈরিতে আমরা যে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি, তা হলো অর্থ ও সময়। সাথে সাথে কোভিড-১৯ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আমাদের সামনে দাঁড়িয়েছিল। এর বাইরে অ্যালবাম তৈরিতে আমাদের বড় কোনো বাধা ছিল না।’
অ্যালবাম প্রকাশ হলেও রাতারাতি বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছে না মেসিয়ানিক এরা। এ প্রসঙ্গে এহসান বলেন, আমরা রাতারাতি বড় হওয়ার আশা করি না। সব কিছুই সময়ের সাথে সাথে বেড়ে ওঠে। যে বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের বর্তমান শ্রোতাদের ধরে রাখা এবং ধীরে ধীরে তা বাড়ানো। করোনার পরিস্থিতি যদি না থাকত তবে আমরা কনসার্ট আয়োজনের মতো বড় উদ্যোগের দিকে যেতাম। যেহেতু গান শুধু রেকর্ড করার বিষয় নয়, বরং সরাসরি পরিবেশনেরও বিষয়। আমরা প্রার্থনা করি যাতে অবস্থার উন্নতি হয় এবং লাইভ কনসার্টের আয়োজন করতে পারি।’ তিনি বলেন, আমাদের শিগগির একটি মিউজিক ভিডিও করার পরিকল্পনা আছে এবং সম্ভবত তা ‘নির্জনতা’ ট্র্যাকটি নিয়ে করা হবে। ‘রূপান্তর’ নিয়েও আমাদের মিউজিক ভিডিও করার পরিকল্পনা রয়েছে; যদিও কবে করব তার বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে এহসান বলেন, ২০১৮-১৯ সালের দিকে রক মিউজিক নিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশেও একটি ইউথ সিলেকশন রাউন্ড হয়েছিল। যেখান থেকে বাংলাদেশের একটি ব্যান্ড সিলেকশন করা হয়েছিল। তার পর ওই ব্যান্ড চলে গিয়েছিল ভারতে। ওখানেও সিলেকশন হওয়ার পর ব্যান্ডটি চলে গেল জার্মানিতে। বিদেশী অনেক বড় বড় ব্যান্ডের সাথে বাংলাদেশী ব্যান্ড সেখানে পারফর্ম করেছে। ওই ব্যান্ডটির মতো আমরাও ভবিষ্যতে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে চাই। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা