২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মালিক সমিতির অভিযোগ

রেস্তোরাঁ মালিকদের হুমকি দিয়ে চাঁদা নেয়া হচ্ছে

-

রাজধানীর বেইলি রোডে রেস্তোরাঁয় আগুনের ঘটনার পর মালিকদেরকে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে নানান ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। এসব হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদা না দিলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।
গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন- সমিতির সভাপতি ওসমান গনি, নবাবী ভোজের মালিক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, যুগ্ম মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন প্রমুখ।
ইমরান হাসান লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, সারা দেশে রেস্তোরাঁ রয়েছে চার লাখ ৮১ হাজারের অধিক। এ সেক্টরে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক মিলে কর্মরত রয়েছে ৩০ লাখ মানুষ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ শিল্পের ওপর নির্ভশীল প্রায় দুই কোটি মানুষ। দেশে রেস্তোরাঁ শিল্পের আর্থিক পরিমাণ ৩ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এই সেক্টরে বিনিয়োগ দুই লাখ কোটি টাকা। সমিতির ৬০ হাজার সদস্য আছেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কায়দায় রেস্তোরাঁগুলো সিলগালা করে দিচ্ছে। কেন সিলগালা করছে তার জন্য কোনো কাগজপত্রও দেয়া হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবি তুলে অনেকেই ব্যবসা করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবি তুলে ব্যবসা করে অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে। আমরা সে পথে না গিয়ে সঠিকপথে ব্যবসা করতে চাই। তিনি বলেন, সারা দেশে মোট ৮০০ রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারমধ্যে সরকারিভাবে ২০০ রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
করপোরেট কোম্পানিগুলো এ সেক্টরকে ধ্বংস করে নিজেরা নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, করপোরেটরা সবকিছু নিজের আয়ত্তে নিতে চায়। আগুনের প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন না করে এ সেক্টরকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। এ পর্যন্ত কোনো সরকারি দল, সুশীল সমাজ, সরকারি কর্মকর্তারা কোনো ধরনের কথা বলছেন না। রাষ্ট্রে পুঁজিপতিদের জয়জয়কার। আমাদের সেখানে কোনো অংশগ্রহণ নেই।
সরকার অভিযান না করে কী করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটা টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। রেস্তোরাঁগুলো যদি ঝুঁকিমুক্ত হয় তাহলে তাদের ব্যবসা করতে দিতে হবে। তা না হলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে। আমাদের ব্যবসা করতে হলে ১২ জায়গা থেকে সার্টিফিকেট আনতে হয়। বর্তমানে রাজউকের ব্যর্থতার কারণে ঢাকা শহর জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। রাজউক সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত অভিযানে এক হাজার ২৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারমধ্যে ৮০০ জন ছিল রেস্তোরাঁর কর্মচারী, সেখানে ১৯ জনের এখনো জামিন হয়নি। তা ছাড়া এ পর্যন্ত ৫৭৫টি রেস্তোরাঁকে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
ওসমান গনি বলেন, দেশে খাওয়া নিয়ে ছিনিমিনি চলছে। এ অবস্থায় আমরা কোথায় যাবো? আমাদের ব্যবসা করতে দেয়া হচ্ছে না। প্রতিটি পদে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এ অবস্থায় ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। দেশে ১০টি কোম্পানি এলপিজি বিক্রি করছে। তারা কোনো ধরনের সিলিন্ডার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো কথা বলছে না বলে জানান তিনি।
রুফটপ অবৈধ হলে এর আগে কেন ব্যবসার অনুমতি দিয়েছে প্রশ্ন রেখে কামরুল হাসান বলেন, ১২টি লাইসেন্স থাকার পরও আমার রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দিয়েছে। আমরা শতভাগ চেষ্টা করি সৎভাবে ব্যবসা করতে; কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা সেই সুযোগ দিচ্ছে না। ৫ মার্চ থেকে আমার রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দিলেও এখনো খুলে দেয়নি এবং কোনো কাগজপত্রও দেয়া হয়নি।
রেস্তোরাঁ সেক্টরের চলমান সমস্যার সমাধান ও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে আগামীকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে স্মারকলিপি দেয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন ইমরান হাসান।


আরো সংবাদ



premium cement