২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমনে পোকা, দুশ্চিন্তায় কৃষক

-

আর মাত্র কয়েক দিন পরেই আমন ধান কাটার উৎসব শুরু হবে। অথচ এ সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমন ধান ক্ষেতে ক্ষতিকর কারেন্ট পোকা বা বাদামি গাছ ফড়িংয়ের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। প্রতিষেধক ওষুধ বা কীটনাশক প্রয়োগ করেও পুরোপুরি প্রতিকার না পেয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আমন ধানের চাষিরা।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুতের গতিতে ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে বাদামি গাছ ফড়িং পোকার স্থানীয় নাম কারেন্ট পোকা। আক্রান্ত ধান গাছের গোড়ায় খুব ছোট আকৃতির এই পোকা দেখা যায়। এর আক্রমণে দ্রুত ক্ষেতের ধানগাছ নষ্ট হয়ে যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর, নাচোল ও ভোলাহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান ক্ষেতে ক্ষতিকর এই কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
কৃষকরা জানান, এবার মাঠজুড়ে ধান ভালোই ছিল। আর মাত্র ১০-১২ দিন পরেই ধান কাটা শুরু হবে। ভালো ফলন আশা করছিলেন তারা। কিন্তু হঠাৎ করে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করে কিছুটা প্রতিকার মিললেও আবারো দেখা দিচ্ছে এই পোকার আক্রমণ। সময়মতো পোকা দমন করতে না পারলে ধানের ফলন মার খাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আমনুরা হাসেনপুর মাঠের আমন চাষি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘এবার ৬ বিঘা জমিতে তিনি আমন চাষ করেছেন। প্রথম থেকে ধানের অবস্থা ভালো ছিল। ধান এখন পাকতে শুরু করেছে। আশা ছিলও খুব ভালো ফলন হবে। কিন্তু হঠাৎ জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিষ স্প্রে করার পর পোকা কম হয়েছিল। কিন্তু আবার পোকা দেখা দিয়েছে। এখন আবার বিষ স্প্রে করছি। এতে যদি পোকা দমন হয়ে যায় তা হলে খরচ বাড়লেও ফলনটা তেমন কমবে না বলে আশা করছি। কিন্তু যদি কাজ না হয় তা হলে তো আশানুরূপ ফলন পাবো না। তাই দুশ্চিন্তায় আছি।’
নাচোল উপজেলার জোনাকি পাড়ার কৃষক জাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘ধানে পোকা লেগে গেছে। বিষ দিতে দিতে হয়রান হয়ে গেলাম। বারবার বিষ দিতে হচ্ছে। এতে করে খরচও বাড়ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এবার ২০ বিঘার মতো জমিতে আমন আবাদ করেছি। ধানের চোহারা খুব ভালো ছিল। কিন্তু কারেন্ট পোকা আমার সর্বনাশ করে দিয়েছে। এর কারণে ফলন কম পাবো।’
বেচেন্দা এলাকার চাষি সাইফুদ্দিন বলেন, ‘এবার ধান দেখে তো বুক ভরে যাচ্ছিল। তার পরে ১০-১৫ দিন আগে কারেন্ট পোকার আক্রমণের কারণে বিষ দিয়েছিলাম। একটু কমেছিল কিন্তু আবার পোকা দেখা দিয়েছে। এতে খরচ বাড়ছে। কারো কারো তো তিনবার বিষ দিতে হলো। শেষ দিকে এলো পোকার আক্রমণ, দেখা যাক আল্লাহ কী করেন।’
এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এতে কৃষকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, এটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ঠেকাতে সঠিক এবং পরিমিত কীটনাশক ব্যবহারে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী বলেন, ‘এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১ হাজার ১৬১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৫৩ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা ব্রি-ধান ৫১, ৫২, ৩৪, ৭১, ৭৩, ৭৫, স্বর্ণা এই জাতগুলো আবাদ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ধান কাটতে আর বেশি দিন বাকি নেই। তবে শেষ মুহূর্তে আমরা মাঠে ঘুরে দেখেছি অনেক জায়গাতে পোকার উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। জেলায় প্রায় ৭ দশমিক ৯ হেক্টর জমিতে আমরা পোকার উপদ্রব দেখতে পেয়েছি। আমাদের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে যাচ্ছেন। কৃষকদেরকে ধানের মাঠে বিলি কেটে ধান গাছের গোড়ায় প্রতিষেধক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পোকার আক্রমণ হয়েছে তাতে ফলনের মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে আমরা মনে করছি না।’
‘তবে এতে কৃষকের বাড়তি পরিশ্রম হচ্ছে এবং কীটনাশক স্প্রে করাতে তাদের উৎপাদন খরচটা বেড়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। আশা করা যায় আমনের উৎপাদনে তেমন প্রভাব ফেলবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা আটক জীবন্ত মানুষকে গণকবর আগ্রাসন ও যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃষ্টির জন্য সারা দেশে ইসতিস্কার নামাজ আদায় আরো ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট তাপপ্রবাহ মে পর্যন্ত গড়াবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ গ্যাসের ছাড়পত্র ছাড়া নতুন শিল্পে ঋণ বিতরণ করা যাবে না

সকল