২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পায়রা সেতু উদ্বোধন, ফেরিমুক্ত বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক

রিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালিতে পায়রা নদীর উপর নির্মিত ‘পায়রা সেতু’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। - ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত পায়রা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৪ অক্টোবর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি এই সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি।

উদ্বোধনের পর বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালি এলাকায় অবস্থিত এই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।

পটুয়াখালীর লেবুখারী প্রান্তের ডিজিটাল টোলপ্লাজা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম গাড়ি নিয়ে সেতুতে ওঠেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো: আবদুস সবুর। পায়রা সেতুতে প্রথম টোল দেওয়া যাত্রীবাহী বাসের চালক মো: ছত্তার বলেন, উদ্বোধনের পর সেতুতে উঠতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে। সেতুটি পার হওয়ার অনুভূতিটা ছিল অন্যরকম। তবে ফেরির থেকে সেতুতে টোলের পরিমাণ বেশি।

যান চলাচল শুরু হওয়ার পর সেতুটি পার হওয়ার সময় দক্ষিণাঞ্চলের এ রুটের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে। এদিকে সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার আগে সকালে চারটি ফেরি শেষবারের মতো চলাচল করেছে লেবুখালি ফেরিঘাটে।

প্রসঙ্গত, বরিশাল বিভাগে এটিই প্রথম ফোরলেন সেতু। আর এ সেতু পারাপারের ক্ষেত্রে টোল আদায়ে যে ডিজিটাল টোলপ্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে সেটিও প্রথমবারের মতো বিভাগের কোনো সেতুতে সংযুক্ত টোলপ্লাজা। এছাড়া এ সেতুর বরিশাল প্রান্তে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে।

সেইসাথে দেশের কোনো সেতুতে প্রথমবারের মতো ‘ব্রিজ হেলথ মনিটরিং সিস্টেম’ সংযোজন করা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন দুর্যোগ বা ওভারলোডেড গাড়ি চলাচলের ফলে সেতুতে যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, তার (ক্ষতির) পূর্বাভাস পাওয়া যাবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো: নজরুল ইসলাম জানান, পায়রা সেতু নির্মাণের বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে সহজসাধ্য মনে হলেও এর তলদেশে পানির স্রোত ছিল তীব্র এবং নদীর গতি-প্রকৃতি ছিল অভিনব, যাকে পদ্মা নদীর সঙ্গে তুলনা করা চলে। এছাড়া চ্যানেলের তলদেশে গভীরতা পাওয়া যায় ৪৩ মিটার।

আধুনিক প্রযুক্তি যন্ত্রপাতির ব্যবহার করা হয়েছে এ সেতু নির্মাণে। ভায়াডাক্টসহ ৩৩৮টি পাইলের মধ্যে ৪০টি পাইলের গভীরতা ১৩০ মিটার। যা এযাবতকালের সর্বোপেক্ষা গভীর। নদীর মধ্যে পিয়ার টু পিয়ার বা স্প্যানের গ্যাপ রাখা হয়েছে ২ শত মিটার। এটিও এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), কুয়েত ফান্ড এবং ওপেক ফান্ডের অর্থায়নে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। আর সেতুর সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ১২৬৮ মিটার ও প্রস্থ ২২ দশমিক ৮০ মিটার। এ সেতুতে ৩২টি স্প্যান ও ৩৩৮টি পাইল রয়েছে। যার মধ্যে মূল সেতুর পাইল সংখ্যা ৫২টি। এছাড়া পিয়ার সংখ্যা ৩১টি।


আরো সংবাদ



premium cement