২১ মে ২০২৪, ০৭ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫
`


‘বিশ্বের প্রত্যন্ত সব অঞ্চলে করোনা টিকাদান কর্মসূচি’

স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা টিকা নিয়ে চড়ছেন পাহাড়ে - ছবি সংগৃহীত

যত কঠিন পথই হোক না কেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা টিকা নিয়ে চড়ছেন পাহাড়, পেরোচ্ছেন নদী। বিশ্বের প্রত্যন্ত সব অঞ্চলে করোনার টিকাদান নিয়ে চলছে তোড়জোর। এ বিষয়ে নানা দেশের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন তাদের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা।

টিকা নিয়ে পাহাড়ে
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় টিকা দিতে গেলে স্বাস্থ্যকর্মীদের জানতে হয় পাহাড় চড়ার নানা কৌশলও বলে জানিয়েছেন ডা: জেইনেপ এরাল্প।

তিনি বলেন, ‘মানুষ এসব অঞ্চলে অনেক কাছাকাছি বাস করে, ফলে সংক্রমণ সেখানে তাড়াতাড়ি ছড়ায়। আর মানুষ হাসপাতালে যেতে কিছুটা অনিচ্ছুক বলেই আমরা তাদের কাছে যাই।’

ঘন তুষার পেরিয়ে
আল্পস পর্বতমালার একটি অঞ্চল ইটালির পশ্চিমাঞ্চলের মাইরা উপত্যকায় রয়েছে এখন ঘন তুষারের আস্তরণ। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ বয়স্ক বাসিন্দারা নিকটবর্তী টিকাদান কেন্দ্রে যেতে পারেন না। ফ্রান্স-ইটালি সীমান্তের কাছের এ অঞ্চলে আশি বছরের বেশি বয়সীদের করোনা টিকা দিতে তাদের বাড়ি যান স্বাস্থ্যকর্মীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উত্তরের অঞ্চলে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন নার্স আলাস্কার ছোট শহর ইগলের দিকে গেছেন টিকাদান কর্মসূচি পালনে সাহায্য করতে। তার সাথে রয়েছে একটি মাত্র টিকার বোতল, যা দিয়ে সম্পন্ন হবে স্থানীয় এক শ’ জন বাসিন্দাকে টিকা দেবার কাজ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম বলছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকার কারণে যদি বাসিন্দারা নিকটতম টিকাদান কেন্দ্রে যেতে না পারেন, ওই ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আকাশপথেও পৌঁছে যাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা, তা সেখানের জনসংখ্যা যত কমই হোক না কেন।

সবাই টিকা নিতে ইচ্ছুক নন
বিশ্বের বেশ কিছু অংশ থেকেই শোনা যাচ্ছে টিকা-ভীতির কথা। টিকার বদলে সংক্রমণ ঠেকাতে জড়িবুটি, তুকতাক বা ধর্মীয় গুরুদের ওপর ভরসা করছেন বেশ কিছু মানুষ। কলম্বিয়ার মিসাক গোষ্ঠীর অনেকের মধ্যে টিকা-ভীতি কমাতে স্বাস্থ্যকর্মী আনসেলমো তুনুবালা ঘুরে ঘুরে স্থানীয় ভাষায় টিকার সুফলের কথা বলেন ও টিকা দেন।

দীর্ঘ যাত্রার পর
মধ্য মেক্সিকোর নুয়েভা কোলোনিয়া অঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত গ্রামের টিকাদান কেন্দ্রে পৌঁছাতেও ভিহারিকা গোষ্ঠীর সদস্যদের অন্তত চারঘণ্টার পথ হেঁটে আসতে হয়। এ গোষ্ঠীকে অনেকে চেনেন হুইছল নামে।

নৌকায় টিকা যাচ্ছে যেখানে
ব্রাজিলের রিও নেগ্রো নদীর পাশ ধরেই বাস নোসা সেনহরা দো লিভ্রামেন্তো গোষ্ঠীর। তাদের কাছে টিকা পৌঁছানোর একমাত্র ভরসা নৌকা। স্থানীয় বাসিন্দা ওলগা পিমেন্তেল তার নৌকায় চেপে টিকাদান কর্মীদের নৌকার পাশে যান। এক নৌকা থেকে আরেক নৌকায় টিকাদানের দৃশ্যই এখানে স্বাভাবিক।

৭২ বছর বয়েসি ওলগার বক্তব্য, ‘আমার কোনো ব্যাথাই লাগেনি! জয় ব্রাজিলের গণস্বাস্থ্য পরিষেবার জয়!’

মোমের আলোয় টিকাদান
দীর্ঘদিন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো করোনা টিকাদানের বিপক্ষে থাকলেও বর্তমানে দেশটিতে চলছে টিকাদানের কাজ। সর্ব প্রথম, টিকা দেয়া হয় বিভিন্ন আদিবাসী ও সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীদের। রাইমুন্দা নোনাটা এমনই এক গোষ্ঠীর সদস্য, যাদের অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। ফলে তার টিকাদান হলো মোমের আলোতেই।

টিকা নিয়ে ঘরে ফেরা
উগান্ডার সরকার চেষ্টা করছে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে টিকা পৌঁছাতে। সরকারে এমন কঠোর উদ্যোগের কারণে উগান্ডার বুনিয়োন্যি লেকের বোয়ামা দ্বীপের বাসিন্দারা টিকা নেয়ার পর ঘরে ফিরেন নৌকায় চেপে।

জলপথে, কিন্তু নৌকায় নয়
জিম্বাবুয়ের জারি অঞ্চলে টিকা দিতে যাওয়ার সময় স্বাস্থ্যকর্মীদের গাড়ি চালিয়ে যেতে হয় বন্যাগ্রস্ত রাস্তা দিয়ে। আফ্রিকার স্বাস্থ্য সংস্থা ‘আফ্রিকা সিডিসি’ জানাচ্ছে যে, ওই দেশের এক শতাংশেরও কম মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। সবার আগে টিকা পেয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীরা।

জাপানে যেমন
ঝাঁ চকচকে শহর শুধু নয়, জাপানের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বাস করে দূরদুরান্তের গ্রামেও। মাত্র কয়েকশ বাসিন্দার গ্রাম কিটাআইকিতে যাদের পক্ষে শহরে গিয়ে টিকা নেয়া সম্ভব নয়, তাদের বাড়িতে খোদ ডাক্তার এসেই টিকা দিয়ে যাচ্ছেন।

টিকা পাহারা যেখানে
ইন্দোনেশিয়ায় করোনা টিকা দেবার কাজ শুরু হয় জানুয়ারি মাসে। বান্দা আচে থেকে নৌকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা নিয়ে পৌঁছেছেন বহু দূরের দ্বীপে। এ টিকাকে এতটাই দামী মনে করা হচ্ছে যে, প্রতি দলের সাথে থাকছে নিরাপত্তারক্ষীও।

টিকাদান কর্মসূচি ঘিরে সংক্রমণের আশঙ্কা
গত কয়েক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের ঢেউ নাড়িয়ে দিয়েছে ভারতকে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি, ব্রহ্মপুত্র নদীর পাশে বাহাকাজারি গ্রামে পৌঁছায় করোনার টিকাদান কর্মসূচির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা। তাদের লক্ষ্য বেশ কিছু স্থানীয় নারীকে টিকা দেয়া। দেখা গেছে ওই গ্রামে টিকাদানের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার দৃশ্য হলো এই যে সেখানকার কোনো ব্যক্তির মুখে নেই মাস্ক আর শারীরিক দূরত্বও বজায় রাখছেন না কেউ। ফলে টিকা কার্যক্রমের সময় সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছেই।

সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement
প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে অব্যাহতি সাবেক সেনাপ্রধান আজিজের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা : যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতার ব্যবস্থা সৌদি আরবের গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত গাজায় যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতারের আবেদনে ফ্রান্স-বেলজিয়ামের সমর্থন গাজায় গণহত্যা হচ্ছে না : বাইডেন মিঠাপুকুরে জাল ভোট দেয়ার সময় ২ জন আটক রাজবাড়ীতে ভোট দিতে গিয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে বাংলাদেশ নীতি সহায়তার অভাবে বিকশিত হচ্ছে না দেশীয় কসমেটিকস খাত গোটা বাংলাদেশ এখন কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে আছে : রিজভী

সকল