২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসরাইল-হামাস অস্ত্রবিরতি সম্পর্কে কাতারের ‘সতর্ক আশাবাদ’

ইসরাইল-হামাস অস্ত্রবিরতি সম্পর্কে কাতারের ‘সতর্ক আশাবাদ’ - ফাইল ছবি

কাতারের কর্মকর্তারা ‘সতর্ক আশাবাদ’ প্রকাশ করে বলেছেন যে গাজায় যুদ্ধের ব্যাপারে ইসরাইল ও হামাস নতুন অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছাতে পারবে এবং হামাসের কাছে আটক আরো পণবন্দীকে মুক্ত করতে পারবে। মঙ্গলবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এ কথা জানিয়েছেন।

দোহায় আলোচনা শেষে মাজেদ আল আনসারি এই অনুকুল মূল্যায়ন করেন। তবে আনসারি বলেন, 'এখনো সাফল্য ঘোষণার সময় আসেনি।' ওই আলোচনায় ইসরাইলের গোয়েন্দাপ্রধান ডেভিড বার্নিয়াও যোগ দিয়েছেন।

ছয়-সপ্তাহের জন্য অস্ত্র বিরতি বিবেচনা করা হচ্ছে। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই লড়াইয়ে এটি হবে সম্ভাব্য দ্বিতীয় অস্ত্রবিরতি। প্রথমটি হয়েছিল নভেম্বর মাসে, এক সপ্তাহের জন্য। এই সংঘাতে বিরতি হলে এখনো হামাসের হাতে শতাধিক পণবন্দীর মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে মুক্ত করা যাবে। আর এর পরিবর্তে ইসরাইলে কারাবন্দি কয়েক শ' ফিলিস্তিনিকে মুক্ত করা হবে। আর এর ফলে ইসরাইল গাজায় আরো খাদ্য ও মানবিক ত্রাণ সামগ্রী পাঠাতে পারবে।

একজন হামাস কর্মকর্তা বলেছেন, এই প্রস্তাবিত চুক্তিতে ইসরাইলি বাহিনীকে ‘সকল শহর ও জন অধ্যূষিত এলাকা’ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, বিস্তারিত বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এবং এই আলোচনা শেষ হতে বেশ কিছু দিন, এমনকি সপ্তাহদুয়েক সময়ও লাগতে পারে। ইতোমধ্যেই কোনো কারণ ছাড়াই এই আলোচনার সময়সীমা কয়েক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে। তবে কোনো নিস্পত্তি হয়নি।

এ দিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতেনিয়াহু সাম্প্রতিক দিনগুলিতে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন যে রাফাহতে তিনি তার পরিকল্পিত আক্রমণ নিয়ে এগিয়ে যাবেন। গাজা-মিসর সীমান্তবর্তী এ শহরটি থেকে ইসরাইল হামাসকে উৎখাত করতে চায়।

একই ঙ্গে ইসরাইলের এই নেতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এই অনুরোধে রাজি হয়েছেন যে আগামী সপ্তাহের শুরুতে তারা একটি ইসরাইলি প্রতিনিধিদলকে ওয়াশিংটনে পাঠাবেন। রাফাহতে কোনো আক্রমণ ছাড়াই এবং ওই অঞ্চলে আশ্রয় নেয়া দশ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির সুরক্ষা নিশ্চিত করে ইসরাইল কিভাবে তার সামরিক লক্ষ্য অর্জন করবে তা নিয়েই এই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হবে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, গাজায় ইসরাইলের হামলায় প্রায় ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের দুই –তৃতীয়াংশই ছিল নারী ও শিশু। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, তারা হাজার হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের চাপ

ইসরাইল ও হামাসকে যুদ্ধ বিরতিতে রাজি করাতে যুক্তরাষ্ট্র তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এ সপ্তাহে সৌদি আরব ও মিসর সফরে যাচ্ছেন । সেখানে তাদের আলোচনার মূল বিষয় হবে লড়াই থামানো, ফিলিস্তিনি হামাস যোদ্ধাদের কাছে আটক পণবন্দিদের মুক্তি এবং যুদ্ধোত্তর গাজার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন।

ফিলিপাইনে তার সফরের সময়ে মঙ্গলবার ব্লিংকেন সংবাদদাতাদের বলেন যে গাজায় সুশাসন, নিরাপত্তা, মানবিক সহযোগিতা এবং পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ব্লিংকেন বলেন, একটি পরিকল্পনা থাকা এবং এ রকম আশা যে এই সংঘাত শিগগির শেষ হবে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে বোঝাতে পেরেছে।

গাজায় হামাসের যেকোনো ধরণের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিহ্ন করতে ইসরাইলের আক্রমণে গাজার অধিকাংশ অবকাঠামো এবং ঘর-বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

গাজার পরিস্থিতিকে ব্লিংকেন তার কথায় 'ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি' বলে বর্ণনা করে জাতিসঙ্ঘ প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন। তাতে বলা হয়েছে গোটা জনসংখ্যার প্রয়োজন মানবিক সহায়তা।

নিজেকে রক্ষা করার ইসরাইলের অধিকারের প্রতি ব্লিংকেন সমর্থন প্রকাশ করেন এবং এ ব্যাপারটিও নিশ্চিত করতে চান যে এই রকম হামলা যেন আর না ঘটে। তবে তিনি এ কথাও বলেন যে বেসামরিক লোকজনকে রক্ষায় অগ্রধিকার প্রদান এবং যাদের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে তাদের সেই রকম সহায়তা প্রদান করা ইসরাইলের 'অতি আবশ্যিক কর্তব্য'।

গাজার পরিস্থিতির জন্য ব্লিংকেন হামাসকে দোষারোপ করে বলেন, এই গোষ্ঠিটি ইসরাইলের উপর হামলা শুরু করে এবং এই যুদ্ধ থেমে যেত যদি হামাস বেসামরিক লোকজনের আড়ালে রাখা তাদের অস্ত্র সমর্পণ করত এবং সকল পণবন্দিকে মুক্ত করতো।

হোয়াইট হাউসে

এক মাসেরও বেশি সময় পরে বাইডেন সোমবার এই প্রথম নেতেনিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন। ইসরাইল যেভাবে এই যুদ্ধ পরিচালনা করছে এবং রাফাহ আক্রমণ করার ইসরাইলের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান বলেন, টেলিফোনে বাইডেন ইসরাইলি নেতাকে বলেন, 'আমরা হামাসকে পরাস্ত করার অভিন্ন লক্ষ্যে আছি । আমরা এটাই শুধু বিশ্বাস করি যে সেটা সম্ভব করার জন্য আপনার কৌশল হবে সমন্বিত ও টেকসই'।

রাফাহতে সব কিছু তছনছ করে প্রবেশ করে স্থল আক্রমণ চালানোর নেতেনিয়াহুর পরিকল্পনাকে সালিভান ভুল বলে বর্ণনা করেন। ওই অঞ্চলে বিশাল সংখ্যক ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন এবং অনেকেই ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর নির্দেশেই গাজার উত্তরাঞ্চল ত্যাগ করে রাফাহতে এসেছেন।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement
হামাস ও ফিলিস্তিনি গ্রুপগুলোর মধ্যে ঐক্য আলোচনার আয়োজন করছে চীন গফরগাঁওয়ে রাজিব হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার ও বিচার দাবি লক্ষ্মীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ আটক টিভিতে বিব্রতকর সাক্ষাৎকারের পর অবস্থান পাল্টালেন বিএনপি নেতা শ্বশুরের ঘর থেকে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রির কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদানে অধ্যক্ষ-চেয়ারম্যান গ্রেফতার আবারো পিএমএল-এনের সভাপতি হচ্ছেন নওয়াজ শরিফ বিষখালী নদী থেকে ২২ ঘণ্টা পর নিখোঁজ জেলের লাশ উদ্ধার ৩ জেলায় বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ছত্তিশগড়ে ২৯ জন মাওবাদী নিহত হওয়ার পর এলাকায় যে ভয়ের পরিবেশ

সকল