২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মরক্কো-ইসরাইল সম্পর্কের পরিণতির ব্যাপারে আলজেরিয়ার হুঁশিয়ারি

মরক্কো-ইসরাইল সম্পর্কের পরিণতির ব্যাপারে আলজেরিয়ার হুঁশিয়ারি
মরক্কো-ইসরাইল সম্পর্কের পরিণতির ব্যাপারে আলজেরিয়ার হুঁশিয়ারি - সংগৃহীত

ইহুদিবাদী ইসরাইল বহু আগে থেকেই আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা আরব দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছে এবং এর পেছনে আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এর ফলে আফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে বিশেষ করে মরক্কো ও আলজেরিয়ার মধ্যে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

আলজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রামাথান লা'মামের এ অঞ্চলে ইসরাইলের আধিপত্য বিস্তারের নজিরবিহীন চেষ্টার পরিণতির ব্যাপারে সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, উত্তর আফ্রিকায় ইসরাইলের অবস্থান পাকাপোক্ত করার কাজে মরক্কোর কর্মকর্তাদের সহযোগিতা সমগ্র ওই অঞ্চলকে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদানের পর গত বছর ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী চতুর্থ আরব দেশ হচ্ছে মরক্কো। সম্প্রতি ইসরাইলের কর্মকর্তারা দফায় দফায় মরক্কো সফর করেছেন এবং ওই দেশটির সাথে সর্বাত্মক সম্পর্ক বিস্তারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী গান্তেজ সম্প্রতি মরক্কো সফরে গিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি সই করেছেন। এরপর মরক্কো ও ইসরাইলের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বিষয়েও সমঝোতা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

মরক্কো ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার ফলে আঞ্চলিক সংকট বিশেষ করে আলজেরিয়ার সাথে মরক্কোর মধ্যকার উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার অজুহাতে ইসরাইল অনেক দিন ধরেই আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। বিশেষ করে ইসরাইলের কয়েকটি কোম্পানি মরক্কোর একটি বাধ তৈরির প্রকল্প হাতে নেয়ায় ইথিওপিয়া, মিশর ও সুদানের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আফ্রিকার ১৪টি আরব দেশের তীব্র বিরোধিতা সত্বেও ইসরাইল আফ্রিকান ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক সদস্যের মর্যাদা পেয়েছে। বর্তমানে তারা মরক্কোর সাথে সর্বাত্মক সম্পর্ক স্থাপন করায় আফ্রিকার অন্য দেশগুলোতে তীব্র সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা।

আফ্রিকায় প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে ইসরাইল শুধু যে এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে তাই নয় একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির মাধ্যমে সামরিক ক্ষেত্রে এ অঞ্চলে ইসরাইল তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। আফ্রিকার আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পেছনে ইসরাইলের আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসনে ওই দেশগুলোকেও সাথে রাখা। আলজেরিয়ায় ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিরোধী পিপলস ফ্রন্টের সমন্বয়কারী আহমাদ ইব্রাহিম বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অর্থ হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের অধিকার ধ্বংস করা যা কিনা আরব ও অন্যান্য মুসলমানদের জন্য বড় হুমকি।

তবে মরক্কো সরকার ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করলেও সেদেশের জনগণ ইসরাইলের সাথে কোনো সম্পর্ক চায় না। এ কারণে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সাম্প্রতিক রাবাত সফরকালে মরক্কোর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করারও দাবি জানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement