চাপ ছিলই। ইরানের উপর চাপ আরো বাড়ল। এ বার আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির উপর চাপ তৈরি করল ইউরোপের তিনটি দেশ। জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। মঙ্গলবার তারা জানিয়ে দিয়েছে যে ইরান যদি এখনও এই চুক্তি অমান্য করে চলে, তবে তাদেরও ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরমাণু চুক্তিসহ একাধিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ইরানের সঙ্গে সাপে-নেউলে সম্পর্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। ইরানের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নেয়ার হুমকিও একাধিকবার দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানও। সেই বিতর্ক এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসিম সোলাইমানিকে হত্যা করে আমেরিকা। কিন্তু তাতেও উত্তেজনা কমেনি, বরং বেড়েছে। আমেরিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ঘোষণা করেছে ইরান। একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির কোনও শর্তই তারা মানবে না। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সীমাও তারা মেনে নেবে না বলে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।
ইরানের হামলার পরপরই বেশ কিছু দেশ তাদের কোনো সৈন্য নিহত হয়নি জানালেও, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানায়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ রাতে টুইট করে ‘সব ঠিক আছে’ বললেও ক্ষতির পরিমাণ আমেরিকার স্থানীয় সময় সকালে জানাবেন বলেও জানান ট্রাম্প৷ ভাষণের সময় ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক স্পেনসার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা ছিলেন ট্রাম্পের পাশে৷
রাশিয়াও বিষয়টির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। কিন্তু ইউরোপের তিনটি দেশ যেভাবে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে, রাশিয়া তার বিরোধিতা করেছে। রাশিয়ার বক্তব্য, এমনিতেই যে পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আছে, তাতে যুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল। তার উপর এখন ইরানকে এ ভাবে হুমকি দিলে তা পরিস্থিতি আরো জটিল করবে।
ইরান অবশ্য জানিয়েছে, জাতিসঙ্ঘের এই চুক্তিকে বাঁচানোর জন্য যেকোনো গঠনমূলক পদক্ষেপ নিতে তারা তৈরি। অতীতেও তারা তাই করেছে। তবে একই সঙ্গে ইরানের বক্তব্য, অমান্য করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তবে একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, ইউরোপের দেশগুলো যে হুমকি দিয়েছে, তা বাস্তবে ঘটলে প্রতিক্রিয়া হবে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য খুব স্পষ্ট করেই বলেছেন, দীর্ঘ দিন ধরে ইরান চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। আর তা হতে দেয়া যাবে না। এ বার প্রশ্ন করতেই হবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে