কয়েক বছর আগে সৌদি আরবে খুবই অকল্পনীয় একটি বিষয় ছিল, নারীরা গাড়ি চালাচ্ছে। সেই অকল্পনীয় ধারণা ভেঙে সৌদির বিভিন্ন রাস্তায় শা শা করে গাড়ি চালাচ্ছেন সৌদি নারীরা।
বিশে^ একমাত্র সৌদি আরবেই মেয়েদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল। যে নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে গত বছর। যে দেশে এত দিন পর্যন্ত মেয়েদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল, সে দেশেরই এক মেয়ে এ বার রেসিং কার চালিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়, মেয়েদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে। এর পরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেয়ার জন্য ভীড় জমায় সৌদি নারীরা।
২০১৮ সালের ২৪ জুন মধ্য রাত হতে উঠে যায় নারীদের গাড়ি চালানোতে কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞা। স্টিয়ারিং হাতে রাস্তায় নামেন নারীরা। সেই ধারাবাহিকতায় রেসিং কারে ওঠে বসেন আরেক সৌদি নারী রীমা আল জুফালি। জুনে লাইসেন্স পাওয়ার পর অক্টোবরেই প্রথম রেসে অংশ নেন রীমা।
কলেজে পড়ার সময়েই ফর্মুলা ওয়ানের অনুরাগী হয়ে উঠেছিলেন রীমা। তার পর রেসিং কার লাইসেন্সের জন্য আবেদন। ফর্মুলা কার রেসিং স্কুলে ট্রেনিংও নিয়েছেন তিনি।
২৬ বছর বয়সী রীমার বসবাস জেদ্দাতে। অবশ্য দেশের বাইরে তিনি অনার্স পর্যায়ের স্তরের পড়াশোনাও করেছেন। সেখানেই তার আগ্রহ তৈরি হয় রেসিং-এর প্রতি। দেশে ফিরে এসে রেসিং শুরুর ইচ্ছে ছিল তার।
রীমা বলেন, যখন আমি অনার্স শেষ করলাম, তখন আমি একটি স্কুলে ফর্মুলা কারের তিনদিন মেয়াদী একটি কোর্সে ভর্তি হই। এটি ছিল চোখজুড়ানো, মন ঠা-া করা একটি অভিজ্ঞতা। সে সময়ই আমি প্রথমবারের মতো একটি রেসিং কারের মধ্যে বসি এবং সেটি চালাই।
রীমা আরো জানান, শুধু গাড়ি চালানোই নয়, কার রেসিংয়েও যে সে দেশের মেয়েরা কারো চেয়ে কম নয়, সেটা প্রমাণ করতেই তার এই পদক্ষেপ। তবে রেসিং প্রতিযোগিতায় তার অংশ নেয়ার পথটি এতটা মসৃণ ছিল না। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য পরিবারকে চার বছর ধরে বুঝিয়ে রাজি করিয়েছেন রীমা। প্রথমে তো গাড়ি চালানোরই অনুমতি ছিল না দেশে। পরে সৌদি যুবরাজের সংস্কার প্রক্রিয়ায় নারীদের গাড়ি চালানোর বিষয়টি অনুমোদন পেলে লক্ষ্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে অনেকখানি এগিয়ে যান রীমা।
এ ব্যাপারে রীমা বলেন, যতজন তাঁর কাজের বিরোধিতা করেছেন, তার দশ গুণ মানুষ তার সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। জিটি-৮৬ কার দিয়ে প্রথম রেসিং শুরু করেন তিনি। সিঙ্গল সিটারে রেস করেছেন তিনি। রীমার মতে, সব কিছুই কেমন যেন দ্রুতই হয়ে যাচ্ছে।
গত ডিসেম্বরে জিতেছেন একটি রেসেও। ফলে নতুন উদ্যমে চালিয়ে যাচ্ছেন তার রেসিং। তার এ সাফল্যে এগিয়ে আসতে চাইছে আরো অনেক সৌদি নারী।
যখন পুরুষরা তাকে রেসিং কার চালাতে দেখে, তখন তাদের কী রকম প্রতিক্রিয়া হয়, জানতে চাইলে রীমা বলেন, প্রতিক্রিয়া খুবই ইন্টারেস্টিং।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা