০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে অনিয়ম

-


একটি জেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসার অবলম্বন ‘জেলা সদর হাসপাতাল।’ প্রতিটি জেলাতেই সরকারি এই হাসপাতাল রয়েছে। তবে জানা যায় অধিকাংশ জেলার সরকারি হাসপাতালের দশা বেহাল। গাইবান্ধা জেলা সদরে অবস্থিত ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ‘সদর হাসপাতাল’ যেন অনিয়মের আঁতুর ঘর। নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স, পরিচ্ছন্নতাকর্মী। নেই চিকিৎসার নিরাপত্তা। সাধারণ মানুষের কাছে এই হাসপাতাল থাকা না থাকার মতোই। কেননা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কোনো রোগী নিয়ে গেলেই কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় শহর রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। তা ছাড়া পুরো হাসপাতাল যেন ময়লার ভাগাড়। জরুরি বিভাগ, পুরুষ ওয়ার্ডসহ কোথাও ওয়াশ রুম পরিষ্কার নেই। কোনো কোনো ওয়াশরুমে সাবান বা হ্যান্ড ওয়াশ পর্যন্ত নেই। হাসপাতাল কর্মী, নার্সরাও আছেন বিপর্যয়ে। জানা যায়, ডাক্তারদের ব্যবহারের ওয়াশ রুম ছাড়া হাসপাতালের কোনো ওয়াশ রুমই ব্যবহার উপযোগী নয়। সে কারণে তাদের আশপাশের পরিচিত কারো বাড়িতে যেতে হয়, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়। দুর্গন্ধে হাসপাতালে ঢোকা যায় না। সুস্থ মানুষ অসুস্থ হওয়ার মতো অবস্থা বিরাজ করে। হাসপাতালের সিঁড়ির পাশে আগাছায় পরিপূর্ণ ও জমে থাকা ময়লা-পানি মশার নিরাপদ প্রজনন ক্ষেত্র। বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ভাঙাচোরা চিকিৎসা সরঞ্জাম, বেড, ফোম, ম্যাট্রেস। দেখার কি কেউ নেই?
সেবা প্রদানকারী নার্সদের যারা রাতে ডিউটিরত থাকেন তাদের বিশ্রাম নেয়ার মতো জায়গা পর্যন্ত নেই। যখন যে তত্ত্বাবধায়ক আসেন, তখন তারা শুধু নিজের কক্ষ আর নিজের বাথরুমটা ফিটফাট রাখেন; কিন্তু অভিযোগ, যারা সার্বক্ষণিক সেবা দেয়, তাদের দিকে নজর দেন না।
হাসপাতালের অসংখ্য বেড ভাঙা। ব্লাড ব্যাংক আর প্যাথলজিতে মাত্র দু’জন টেকনোলজিস্ট। করোনার মধ্যেও বাড়েনি সংখ্যা। বিভিন্ন টেস্টের সাথে করোনা নমুনা সংগ্রহ করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমনকি ব্লাড ব্যাংকের ফ্রিজ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির বেশির ভাগই অকেজো। অনেক পুরনো মাইক্রোস্কোপ দিয়ে কাজ চলায় রিপোর্ট ভুল আসার শঙ্কা কাজ করে। তবু নীরব দায়িত্বরত ঠিকাদার।
টিভি নিউজের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে আরেক তথ্য। আউটসোর্সিংয়ে যারা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন, ২৫ মাস ধরে তাদের বেতনভাতা বন্ধ থাকায় কাজের আগ্রহ কমে গেছে। মালামাল ও জনবল চেয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেয়া হলেও তেমন সাড়া মেলেনি। এমনকি হাসপাতালের ড্রেন সচল করতে গণপূর্ত বিভাগকে তাগিদ দিয়েও সচল করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি হাসপাতালে এক ব্যক্তির লাশ রাখা হয়। পরদিন দেখা যায়, লাশের একটি চোখ নেই। চোখ কোথায় গেল, এ হিসেবও মেলেনি। এত অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন জাগে। জেলার মাতৃসদনসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেন অনিয়মের মাঝে বেড়ে উঠছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারির আহ্বান জানাই। কারণ জেলার সাত উপজেলার লাখ লাখ মানুষের ভরসার এই সদর হাসপাতাল। কিন্তু ন্যূনতম ভরসা করার উপায় নেই এর ওপর। সবার চাওয়া এই হাসপাতালে সুষ্ঠু চিকিৎসা হোক, পরিচ্ছন্ন থাকুক, এটা আস্থার নাম হয়ে উঠুক। সবার প্রাণের দাবি একটাই, ভোগান্তি থেকে যেন পরিত্রাণ পেতে পারে। কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি এই বিষয়ে। সেই সাথে দেশের অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসার মানোন্নয়ন হোকÑ এটাই দেশবাসীর চাওয়া।
বিশাল সাহা
ব্রিজরোড, গাইবান্ধা।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজীপুরে তুলার গুদামে আগুন স্টপেজের দাবিতে ফরিদপুরে প্রথম দিনই ট্রেনের গতিরোধ সন্দেশখালির ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো, বিজেপি নেতার ভিডিওতে তোলপাড় খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বজ্রপাতে মা-ছেলের মৃত্যু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় পূর্ব আফ্রিকায় মানবিক সঙ্কটের অবনতির হুমকি স্বরূপ এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ ঘোষণা অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে কর্মবিরতিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভিসা অব্যাহতি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে বাংলাদেশ-মিসরের আলোচনা দুই অঞ্চলে ঝড়ের আভাস আ’লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা আজ রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের খারকিভ-নিপ্রো অঞ্চলে আহত ৬

সকল