৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মায়ের সাথে ঈদ করতে পারবে না শিশু নূরী, হাফসার জামিন শুনানি ২২ এপ্রিল

আপিল বিভাগে হাফসার জামিন শুনানি ২২ এপ্রিল - ছবি : নয়া দিগন্ত

নাশকতার অভিযোগে মামলায় কারাবন্দী শিশু নুরজাহান নূরীর ও আকলিমার মা হাফসা আক্তার ঈদের আগে মুক্তি পচ্ছে না। বুধবার হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিতাদেশ তুলে নিতে আপিল বিভাগের চেম্বর আদালত তার আবেদনে সাড়া দেননি।
বুধবার শুনানি শেষে আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলামের আদালত জামিন স্থগিতাদেশ তুলে নিতে তার আবেদনের ওপর আগামী ২২ এপ্রিল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য করেছেন।

এতে শিশু নুরজাহান নূরীর ও আকলিমার মা হাফসা আক্তার ঈদের আগে মুক্তি পচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, এই দুই শিশু তার মার সাথে ঈদ করতে পারবেন না।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র এখন সাধারণের পাশাপশি নারী ও শিশু নিপিড়কের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়েছে। এই শিশু নূরী ও মা হাফসা আক্তার ৩০ বা ৩২ বছরের একজন নারী তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তার শিশু নূরী তাদেরকে নিপিড়ন করছে এই রাষ্ট্র। হাইকোর্ট হাফসাকে জামিন দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষে আবেদন জামিন স্থগিত করা হয়েছি। জামিন স্থগিতাদেশ তুলে নেয়ার আবেদন রাষ্ট্রপক্ষে বিরোধীতার কারণে আবার পিছিয়েছে। আমাদের সিনিয়র কাউন্সেল আদালতে বলেছেন, এই নারীটাকে চার মাস ধরে আটক রাখা হয়েছে। অথচ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তাকে আটক রেখে রাষ্ট্রের কী লাভ।
শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ঈদের আগে দুই শিশুর মা হাফসাকে জামিন দেয়ার আবেদন জানান। তিনি বলেন, আরো এক মাস তাকে জেলে রেখে রাষ্ট্রের কী লাভ হবে।

তখন চেম্বার আদালত বলেন, গত ১০ মার্চ আমরা যে আদেশ দিয়েছিলাম। তা দেখে শুনে দেয়া হয়। আগামী ২২ এপ্রিল আপিল বিভাগে শুনানির তারিখ দিয়ে দেই। এ সময় আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী হাফসার দুই শিশুকেও দেলে দেয়ার কথা বলেন।

এরপর আদালত বলেন , আগে ৮ সপ্তাহ স্থাগিতাদেশ ছিল। ২২ এপ্রিল আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দিলাম।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সাথে ছিলেন আইনজীবী মো: মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনির।

এর আগে গত ১০ মার্চ শিশু নুরজাহান নূরীর মা হাফসা আক্তারকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

গত ৬ মার্চ বিচারপতি মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে হাফসার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

ওইদিন আদালতের তার চার বছর বয়সী নূরজাহান নূরী ও তার সাত বছর বয়সী বড় বোন আকলিমা উপস্থিত ছিল।
হাইকোর্টের আদেশের ফলে নূরীর মা হাফসার মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

এর আগে গত ৪ মার্চ মায়ের জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় দাদির হাত ধরে হাইকোর্টে আসে চার বছর বয়সী নূরজাহান নূরী।

ওইদিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগসংক্রান্ত ফুটেজ রাষ্ট্রপক্ষকে আদালতে দাখিল করতে বলেছেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে উপস্থিত হতে বলতে বলা হয়েছে।

এ মামলায় গ্রেফতারের পর গত বছরের ২৭ নভেম্বর থেকে কারাগারে আছেন হাফসা। এ মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। এরপর তিনি জামিন চেয়ে রোববার হাইকোর্টে আবেদন করেন। সোমবার আবেদনটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে ওঠে।

গত ২৯ নভেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন হয়েছিল। সেদিন নূরজাহান ও আকলিমার মতো মানববন্ধনে এসেছিল আরো কিছু শিশু। মানববন্ধনের ব্যানারে আয়োজক হিসেবে লেখা ছিল, ‘রাজবন্দীদের স্বজন’।

দুই শিশুর বাবা আবদুল হামিদ ভূঁইয়া বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। দুই শিশুর দাদা আবদুল হাই ভূঁইয়া ২৯ নভেম্বরের মানববন্ধনে অভিযোগ করে বলেছিলেন, তার বড় ছেলে হামিদকে পুলিশ খুঁজছে। তাকে না পেয়ে ছেলের স্ত্রী হাফসাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। অথচ হাফসা রাজনীতির সাথে জড়িত নন।


আরো সংবাদ



premium cement