বরগুনার পাথরঘাটায় বিষখালী নদীর ভাঙনে বের হয়ে আসা এক ব্যক্তির অক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি লাশটি ২৪ বছর আগে মারা যাওয়া স্থানীয় মোতাসসের আলীর। এ ঘটনায় জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল সোমবার উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের বিষখালী নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, মৃতুকালে মোতাসসের আলীর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের প্রথম দিকে কাকচিড়া কালিবাড়ী গ্রামের খলিফা বাড়ির মোতাসসের আলীর মৃত্যু হয়েছে। তার একছেলে ও এক মেয়ে ছিল। মোতাসসের আলী জীবিত থাকা অবস্থায়ই তার ছেলে মারা যায়। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পর স্ত্রী ও মেয়ে মারা যায়। মৃত মোতাসসের আলীর মেয়ের ঘরে এক নাতি আছেন এবং তিনি সৌদি প্রবাসী।
মোতাসসের আলী জীবনের প্রথম দিকে সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং ছারছীনা দরবার শরীফের অনুসারী ছিলেন। পরে বামনা উপজেলার চলাভাংগা দরবার শরীফের পীর মৃত মাওলানা আব্দুর রশিদের নৌকার মাঝি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু জানান, সোমবার স্থানীয় কিছু লোক নদীর তীরে ভাঙ্গা কবরস্থানে সাদা কাপড় দেখতে পেলে স্থানীয় লোকজনের সহাতায় কবর থেকে মোতাসসের আলীর লাশটি কবর থেকে উদ্ধার করে। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয় মোকসেদ আলী মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের পাশে নতুন কবরে দাফন করা হয়।
আরো পড়ুন :
পায়রা ও বিষখালী নদীর জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙ্গে ১০ গ্রাম প্লাবিত
বরগুনা সংবাদদাতা, ১৭ জুলাই ২০১৮
অমাবস্যার জোঁ’র প্রভাবে পায়রা ও বিষখালী নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকুলীয় বরগুনা পৌর শহর, আমতলী, পাথরঘাটা, বেতাগী, বামনা ও তালতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তেতুলবাড়িয়া ও বালিয়াতলীর বাঁধ ভেঙ্গে ১০ গ্রাম তলিয়ে গেছে। কৃষককদের আমন মৌসুমের বীজতলা পানিতে তলিয়ে পচে যাচ্ছে।
জানা গেছে, অমাবস্যার জোয়ারের প্রভাবে পায়রা ও বিষখালী নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকুলীয় বরগুনা পৌর শহরে হাঁটু পানি, আমতলী, বেতাগী, পাথরঘাটা, বামনা ও তালতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। তারা কষ্টে জীবনযাপন করছেন।
তালতলীর নিশানবাড়িয়া, ফকির হাট, সোনাকাটা, নিদ্রাসকিনা, তেতুলবাড়িয়া, আশার চর, নলবুনিয়া, তালুকদারপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, মৌপাড়া, ছোটবগী, জয়ালভাঙ্গা, পচাঁকোড়ালিয়া ও আমতলীর ঘোপখালী, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম আমতলী, ফেরীঘাট, পুরাতন লঞ্চঘাট, আমুয়ার চর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুরকাটা, গুলিশাখালী ও হরিদ্রবাড়িয়া নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
তালতলীর তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের নজরুল হাওলাদার বলেন, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে সেলিম চৌকিদার বাড়ির নিকট থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি প্রবেশ করে তেতুঁলবাড়িয়া ও নলবুনিয়া গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
বালিয়াতলী গ্রামের বাকী বিল্লাহ বলেন, বয়াতি বাড়ির পাশ দিয়ে ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে এলাকা তলিয়ে গেছে। কৃষকরা আমন ধানের বীজতল তৈরি করতে পারছে না।
গাবতলী আবাসনের জহিরুল ইসলাম বলেন, জোয়ারের পানিতে ঘর তলিয়ে গেছে। সন্তানদের নিয়ে ওয়াবদায় অবস্থান নিয়েছি।
আমতলীর পৌর শহরের আমুয়ার চর গ্রামের ফাতেমা বেগম বলেন, জোয়ারের পানিতে ঘর তলিয়ে গেছে।
বরগুনা পানি উন্নয়র বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মশিউর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।