২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারতকে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

-

সবার জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাপ্তাহিক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আহ্বান জানান। তিনি বলেছেন, ধর্মীয় স্বাধীনতাকে এগিয়ে নিতে তারা যেন পদক্ষেপ নিতে পারে সে বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের নিয়মিত সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে। জিয়ো নিউজ।
গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে নেড প্রাইসকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘এটা দক্ষিণ এশিয়ার ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা। এ নিয়ে পর পর তিন বছর ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত মার্কিন কমিশন এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে সিপিসিভুক্ত দেশগুলোর তালিকায় ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছে। এবং এটি কেবল মুসলিম, খ্রিষ্টান, অন্যদের নির্যাতন বা হত্যার বিষয়ে নয়। এটি বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকার এবং তাদের নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কেও যা শুধু পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা অমুসলিম অভিবাসীদের দ্রুতগতিতে নাগরিকত্ব প্রদান করে।’


জবাবে নেড প্রাইস বলেন, বিশ্বের দু’টি বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একটি স্থায়ী প্রকল্পের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার ভাষায়, ‘এটি সেই প্রজেক্ট, যে বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন আগেই কথা বলেছেন। এটি আমাদের উভয় দেশের জন্য একটি প্রকল্প। আমরা একসাথে কাজ করেছি এবং আমরা একসাথে কাজ করতে পারি এটাই দেখানোর জন্য যে, আমাদের গণতন্ত্র আমাদের জনগণের চাহিদা মেটাতে পারে। আমাদের অবশ্যই মূল্যবোধগুলোকে ধরে রাখতে হবে, যার মধ্যে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বিশ্বাস বা মত প্রকাশের স্বাধীনতার মতো মানবাধিকারের প্রতি সম্মানের বিষয়টিও রয়েছে। এগুলো আমাদের নিজ নিজ গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করে তুলবে।’
নেড প্রাইস আরো বলেন, সব তথ্য এবং পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন স্থির করেছেন, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে যেসব উদ্বেগ রয়েছে তার ফলে দেশটিকে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক কোনো উপাধি বা বিশেষ নজরদারি তালিকায় স্থান নির্ধারণের নিশ্চয়তা দেয় না। তবে অবশ্যই এসব বিষয়ে আমরা আমাদের ভারতীয় অংশীদারদের সাথে কথা বলছি এবং সেই সাথে সারা বিশ্বের অংশীদারদের সাথেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
তার ভাষায়, ‘যখন ভারতের কথা আসে, (আমরা বলব) ভারত অবশ্যই বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র। দেশটি ধর্মীয় বিশ্বাসের বিশাল বৈচিত্র্যের আবাসস্থল। ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম সম্পর্কিত আমাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে আমরা ভারতের বিষয়ে কিছু উদ্বেগ উল্লেখ ও তার কিছু রূপরেখা তুলে ধরেছি।’


নেড প্রাইস বলেন, ‘আমরা সব দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও পরিস্থিতির ওপর সতর্কতার সাথে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছি এবং এর মধ্যে ভারতও রয়েছে। সকলের জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে ভারত সরকারকে তার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে আমরা উৎসাহিত করেছি এবং করতে থাকব। এ ছাড়া আমরা এসব পদক্ষেপে নিয়মিতভাবে কর্মকর্তাদের নিযুক্ত করি, যারা ধর্মীয় স্বাধীনতা এগিয়ে নিতে পারে।’
সম্প্রতি চীন, ইরান ও রাশিয়াসহ আরো বেশ কিছু দেশকে ধর্মীয় স্বাধীনতায় গুরুতর লঙ্ঘনের কারণে রিলিজিয়াস ফ্রিডম অ্যাক্ট (ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন) এর অধীনে বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ হিসেবে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পরে এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ হিসেবে অভিহিত দেশগুলো ধর্মীয় স্বাধীনতা গুরুতর লঙ্ঘনে অভিযুক্ত। এমন দেশগুলোর মধ্যে চীন-রাশিয়া ছাড়াও রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও মিয়ানমার।
এ ছাড়া পর্যবেক্ষণের তালিকায় আলজেরিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কমোরোস ও ভিয়েতনামকে রাখা হয়েছে। ১৯৯৮ সালের ইউএস রিলিজিয়াস ফ্রিডম অ্যাক্ট অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে এমন সব দেশকে বিশেষ উদ্বেগজনক হিসেবে অভিহিত করতে হবে, যারা নিয়মতান্ত্রিক ও চলমান নানা প্রক্রিয়ায় ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করছে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই দায়িত্ব পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়ে থাকেন। আর এই কারণে আইনটি ব্লিংকেনকে বেশ কিছু নীতিগত পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ দেয়। যার মধ্যে রয়েছে- নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা তাতে ছাড় দেয়া। তবে এসব পদক্ষেপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরোপিত হয় না।

 


আরো সংবাদ



premium cement