২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বছরে এক হাজার মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত হচ্ছে

আজ বিশ্ব এইডস দিবস
-

বাংলাদেশে প্রতি বছর এক হাজারের কাছাকাছি মানুষ নতুন করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছে। রক্তের সাথে সম্পর্কিত এ রোগটি প্রতিরোধে আরো বেশি গুরুত্বের সাথে ব্যবস্থাপনা না করলে তা শুধু বাড়তেই থাকবে। বাংলাদেশে দেখা যায়, প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবসকে ঘিরেই নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এরপর এনজিও কার্যক্রম ছাড়া সরকারিভাবে কার্যক্রম খুব চোখে পড়ে না। কোভিড সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর (২০২০ ও ২০২১) দিবসটি যথাযোগ্য গুরুত্বের সাথে পালিত না হলেও এ বছর বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হতে যাচ্ছে অন্যান্য বারের চেয়ে বেশি গুরুত্বের সাথে।


এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ইকুয়ালাইজ’ (সবাইকে সমান চোখে দেখা)। বাংলাদেশেও দিবসটি গুরুত্বের সাথে পালিত হবে আজ। এ উপলক্ষে সরকারিভাবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গত এক বছরে বাংলাদেশের এইচআইভি/এইডসের তথ্য তুলে ধরা হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এইচআইভি/এইডসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কার না হলেও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নানা ধরনের ওষুধ আছে। ট্যাবলেট আকারের এসব ওষুধ নিয়মিত খেলে একজন এইচআইভি/আক্রান্ত সুস্থভাবেই সারাজীবন বেঁচে থাকতে পারেন। তবে এসব ওষুধের উচ্চ দামের কারণে নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষের পক্ষে এসব ওষুধ প্রতিদিন কিনে খাওয়া সম্ভব হয় না। সাধারণত এইচআইভি/এইডস আক্রান্তের রক্ত অন্যের দেহে বিনা পরীক্ষায় দেয়া হলে অথবা এ ধরনের রোগীর সাথে দৈহিক মিলনের ফলে এইচআইভি হয়ে থাকে। রক্ত পরীক্ষা না করে রক্ত নেয়ার মাধ্যমে বিশালসংখ্যক মানুষ এখন এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এইচআইভি/এইডসের রোগীদের সাথে একসাথে চলাফেরা করলে রোগটি হয় না।


প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ১৯৮৯ সাল থেকে এইচআইভি/এইডসের প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হয়। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে বাংলাদেশে ৭২৯ জন মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে এবং একই সময়ে বাংলাদেশে ১৮৮ জন মানুষ এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে বাংলাদেশে ৮ হাজার ৭৬১ জন এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত ছিল। তবে বাংলাদেশে মোট ১৪ হাজার এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত আছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু এদের ৩৭ শতাংশকে চিহ্নিত করা যায়নি। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ মানুষের মধ্যে মোট এইচআইভি আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে ২৬ শতাংশ। এ ছাড়া অভিবাসী শ্রমিকদের (বাইরের দেশে কাজ শেষ করে ফেরত আসা) মধ্যে ২০ শতাংশ, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ২৬ শতাংশ, শিরায় মাদকসেবনকারীদের মধ্যে ৮ শতাংশ, সমকামীদের মধ্যে ৯ শতাংশ, পুরুষ যৌনকামীদের ৭ শতাংশ, হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২ শতাংশ এবং পতিতাদের মধ্যে ২ শতাংশ এইচআইভি/এইডস রয়েছে। ইউএনএইডসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের মোট এইডস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ৭৯ লাখ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক লোক তিন কোটি ৬২ লাখ। মোট আক্রান্তের এক কোটি ৮৮ নারী এবং ১৭ লাখ শিশু। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিলিয়ন (সাড়ে তিন কোটি) মানুষ এ মরণঘাতী রোগে মৃত্যুবরণ করেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement