২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুই দিনের মধ্যে আলেম ও রাজবন্দীদের মুক্তি দিন : ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

-

অবিলম্বে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ আলেম-ওলামা ও সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবি জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তা না হলে এই দাবিতে ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আজকে আমাদের একটা মাত্র দাবি দুই দিনের মধ্যে সব আলেম, রাজনৈতিক কর্মী, খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করব। ওদের জামিন ছাড়া এবার হাইকোর্টে কোনো ঈদের জামাত হবে না। গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘হয়রানিমূলক মামলায় রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের দীর্ঘ কারাবাস, নাগরিক সমাজের উদ্বেগ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে গণমতামত কেন্দ্র। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও সমন্বয়ক মোহাম্মদ শামসউদ্দিনের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, আইনজীবী গণঅধিকার পরিষদের বিপ্লব কুমার পোদ্দার, গণমতামত কেন্দ্রের সমন্বয়ক মোর্শেদ সিদ্দিকী প্রমুখ।
কারাবন্দী হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ আলেমদের মুক্তির দাবি জানিয়ে ডা: জাফরুল্লাহ বলেন, মামুনুল হকের আইনি অধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তার পরিবারকে গত ১৫ মাসে একবার মাত্র দেখা করতে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ কিন্তু এসব ক্ষমা করবেন না। সুতরাং কোরবানির ঈদের আগেই আলেম ও রাজবন্দীদের মুক্তি দাবি করছি। বিচারকদের বলছি- আপনারা হাসিনার চাকর নন, জনগণের খাদেম। আপনারা পদক্ষেপ নেন। অবিলম্বে তাদেরকে মুক্তি দিন। আগামী দুই দিনের মধ্যে তাদের মুক্তি না হলে আমরা সবাই মিলে হাইকোর্ট ঘেরাও করব। প্রয়োজনে ঈদের জামায়াত হবে না। আমরা শুয়ে থাকব সেখানে।
ডা: জাফরুল্লাহ বলেন, আজকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যেভাবে দাম বেড়েছে তাতে কোরবানির ঈদ মানুষ স্বস্তিতে করতে পারবে না। আজকে বাজেটের নামে ফাজলামি করা হয়েছে। বাজেটে চানক্যের চালাকি করা হয়েছে। আজকে দেশে প্রায় ৭ কোটি শ্রমিক রয়েছে। তাদের জন্য বাজেটে কিছু দেয়া হয়নি।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এই মুক্তির জন্য লড়াইকে যতদূর নেয়া উচিত আমি যেতে রাজি আছি। আমি যাদেরকে পারব তাদের নিয়েই লড়াই করতে চাই।
তিনি বলেন, এই সরকারের সাথে ন্যূনতম আপসের চিন্তা করে যারা যেকোনো আন্দোলন করছেন তার সাথে আমি নাই। এরা শুধু ভোট চোর, ভোট ডাকাত তা নয়। এর বড় প্রতারক, মিথ্যুক, এদের কোনো ধর্ম নেই। অথচ এরা সবচেয়ে বেশি ধর্মকে ব্যবহার করেছে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আমার দৃষ্টিতে সরকার সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি না থাকার কারণে তারা রিলাক্সে পার পেয়ে যাচ্ছে। আগামীতে যখন ডাক আসবে পরিস্থিতি তৈরি হবে আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে থাকব।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানকে ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডের পাথর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। গত ৫০টি বছরে সংবিধানে এত বেশি কাটাছেঁড়া হয়েছে যে মানুষের মনের চাহিদা, আইনের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। একটাই রাস্তা আছে হয় সংবিধানকে সংশোধন করো অথবা পুনরায় আগের জায়গায় নিয়ে যাও অথবা নতুন করে সংবিধান রচনা করো। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দাবি করছে, সংবিধানের বাইরে এক পা যাবো না। এক চুলও যাবো না। শক্তি ব্যতীত বিএনপি আমলে দাবি আদায় হয়নি। এখনো হবে না।
তিনি আরো বলেন, আজকে সব রাজবন্দীকে অবিলম্বে কোরবানির আগেই জামিনে মুক্তি দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষার পুনর্বহাল করতে হবে। তা না হলে দেশে এক সময় মসজিদে মাইকে আজান দেয়া নিষিদ্ধ করা হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সুতরাং সাধু সাবধান।


আরো সংবাদ



premium cement