১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫
`


নভেম্বর থেকে পর্যটকদের ঢল নামার সম্ভাবনা

-

করোনা মহামারী শুরুর পর এই প্রথম নতুন সাজ নিচ্ছে দেশের সব পর্যটনকেন্দ্র। ট্যুর অপারেটররা জানিয়েছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় আগামী শীত মৌসুম ঘিরে প্রায় ১৯ মাস পর নতুন উদ্যমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। তাদের মতে ইতোমধ্যে নভেম্বর জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় অগ্রিম প্যাকেজ নিতে পর্যটকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। তাই প্রায় ৬০ শতাংশ হোটেল, বাস ও এয়ার টিকিট ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে। তাদের ধারণা বিরাজমান অবস্থা বলে দিচ্ছে আগামী মাস থেকে দেশজুড়ে পর্যটকদের ঢল নামবে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দেশের ভেতরে পর্যটক তিনগুণ বাড়বে বলে তাদের ধারণা। তিনি বলেন, এখন করোনা কমে এলেও দেশের বাইরে পর্যটক যাতায়াতে নানান জটিলতা রয়েছে। তাই আপাতত মানুষ দেশের বাইরে না গিয়ে দেশের ভেতরেই বেড়াতে যাচ্ছেন। যার কারণে অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের সংখ্যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে।
নভেম্বর থেকে পর্যটকদের ঢল নামবে এমন আশা ব্যক্ত করে নিজাম উদ্দিন বলেন, এ খাতে ব্যবসায় সময় হলো শীতকাল। তাই নভেম্বর থেকে জানুয়ারি ঘিরে তাদের প্রস্তুতিও থাকে ভিন্ন। গেল প্রায় দেড় বছর করোনার কারণে তাদের যে লোকসান হয়েছে সামনের সময়ে তারা এ ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা করছেন। কারণ ইতোমধ্যে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত হোটেল মোটেল বাস অভ্যন্তরীণ এয়ার টিকিট তার প্রায় ৬০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আগামী মাস শুরুর আগেই তা ৯০ শতাংশে চলে যাবে বলে তাদের ধারণা।
তিনি বলেন, মানুষের বুকিংয়ের প্রবণতায় মনে হচ্ছে নভেম্বরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে পর্যটকদের ঢল নামবে। বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভো এয়ার ও ইউএস বাংলার কর্মকর্তারা জানান, নভেম্বর থেকে তাদের বিভিন্ন গন্তব্যর প্রতিটি ফ্লাইটের অগ্রিম প্রায় ৬০ শতাংশ বুকিং ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে সবচাইতে বেশি কক্সবাজার ও সিলেটের। একই কথা জানিয়েছেন গ্রিন লাইন বাস কর্তৃপক্ষ।
এ দিকে হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতি জানিয়েছে পর্যটন এলাকাগুলোতে তাদের হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজের বেশির ভাগই ইতোমধ্যে অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। তারা জানান, করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতির পর মানুষ এখন ঘরের বাইরে বের হতে চায়। করোনা আতঙ্ক কমাতে বেড়ানোর প্রতি মানুষের অগ্রহ বাড়ছে। আর সামনে শীত মৌসুম ঘিরে পর্যটকদের হার কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
এ দিকে সুন্দরবন প্যাকেজ ট্যুরের মালিক সুমন পারভেজ জানান, এমনিতেই নভেম্বর থেকে সুন্দরবনে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। আর গত প্রায় দেড় বছর যেহেতু মানুষ বেড়াতে তেমন বের হয়নি তাই এবার এ সময়টা তাদের বুকিং চাপ অনেক বেশি। যার ফলে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের সুন্দরবন বেড়ানোর অগ্রিম বুকিং ইতোমধ্যে প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
করোনা মহামারীর শুরুতে গত বছরের মার্চে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল সব বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্র। সংক্রমণ কমলে গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে পর্যটনকেন্দ্র খুলতে শুরু করে। চলতি বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে গত এপ্রিল থেকে আবার বন্ধ হয়ে যায় পর্যটনকেন্দ্র। সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ খাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা।


আরো সংবাদ



premium cement