১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫
`


ঢাকাস্থ শীর্ষ আলেমদের জরুরি সভা

ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না করলে কঠোর আন্দোলন : হেফাজত মহাসচিব

-

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ করা যাচ্ছে যে, প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণবিরোধী ঈমানি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চসহ কিছু কুচক্রী মহল অবিরতভাবে আলেম-উলামার বিরুদ্ধে বিষোদগার ও নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। এমনকি বরেণ্য শাইখুল হাদিস আল্লামা আজীজুল হক ও মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীম সম্পর্কেও চরম আপত্তিকর বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা নিয়ে অবাস্তব ও ভিত্তিহীন প্রশ্ন তুলে পানি ঘোলা করার অপচেষ্টা করছে। এই অপতৎপরতা সরকারকে অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। তার সাথে ইসলামবিরোধী প্রাণী বা আবক্ষ মানব ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধান্তও প্রত্যাহার করতে হবে; অন্যথায় দেশবাসীকে সাথে নিয়ে তীব্র গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার জামেয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসায় ঢাকাস্থ শীর্ষ আলেমদের এক জরুরি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি এনামুল হক, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা রশীদ আহমদ, মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসান, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী প্রমুখ।
সভায় উলামায়ে কেরাম বলেন, মসজিদের নগরী ঢাকাকে মূর্তির নগরী বানাতে দেয়া হবে না। তারা বলেন, মূর্তি ও ভাস্কর্যের মধ্যে কূটকৌশলের পার্থক্য তৈরি করে প্রাণী বা আবক্ষ মানব ভাস্কর্য নির্মাণ ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সভায় আমিরে হেফাজত আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী ও হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ বিভিন্ন উলামায়ে কেরামের মাহফিলে বাধা দেয়ার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : সংগঠনের আমির আল্লামা জাফরুল্লাহ খান বলেছেন, যারা ভাস্কর্যের নামে মূর্তি তৈরি করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে তারা সরকার, দেশ ও ইসলামের দুশমন। মূর্তির বিরুদ্ধে কথা বললে যাদের গায়ে লাগে তারা মূর্তিপূজারী। ভাস্কর্য মূর্তির চেয়েও মারাত্মক। মূর্তি থাকে মন্দিরে আর ভাস্কর্য থাকে রাস্তার মোড়ে মোড়ে। শরিয়তে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি নির্মাণ সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও হারাম। ছলে-বলে-কৌশলে মুসলমানদের মূর্তিপূজায় আসক্ত করতে চাইলে আল্লাহর গজব নেমে আসবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর আমির মাওলানা মুহাম্মাদ হোসাইন আকন্দের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আলহাজ আজম খানের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মাদ ইবরাহিম, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খাদেমুল ইমলাম জামাতের মহাসচিব মাওলানা আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী, আলহাজ আবদুল মালেক চৌধুরী, মাওলানা বজলুর রহমান জেহাদী প্রমুখ।
ইসলামী আন্দোলন : সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ভাস্কর্য ও মূর্তিকে আলাদা কিছু নয়। ভাস্কর্য ও মূর্তি একই জিনিস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান জানাতে চাইলে তার নামে ভাস্কর্য স্থাপন নয়, প্রতিষ্ঠান স্থাপন করুন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় তাফসির পরিষদ : জাতীয় তাফসির পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব প্রিন্সিপাল মুফতি বাকিবিল্লাহ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, পবিত্র কাবা শরিফ ও হাজরে আসওয়াদকে মূর্তি সাব্যস্ত করে মৌলভী জিয়াউল হাসান ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে, তাকে আবার ঈমান আনতে হবে। তারা আরো বলেন, মৌলভী জিয়াউল হাসানকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement