১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


শুধু পানি দিয়ে সেহরি ইফতারও অনিশ্চিত

করোনার চেয়ে ক্ষুধা যাদের কাছে ভয়ঙ্কর-৩
-

‘পানি দিয়ে সেহরি খেয়েছি। ইফতারেরও কিছুই নেই। কিছু পাবো তাও অনিশ্চিত। সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ যদি কিছু দিয়ে না যায় তবে ইফতারও পানি দিয়েই করতে হবে’। নিজেদের অসহায়ত্ব এভাবেই প্রকাশ করলেন প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই তসলিমা।
ভাসমান তসলিমা থাকেন মতিঝিল কলোনির প্রধান রাস্তার পাশের ফুটপাথে ঝুপড়ি ঘরে। জানালেন গতকাল প্রথম রোজার সেহরি পানি দিয়েই সেরেছেন। সকাল থেকে অপেক্ষায় আছেন যদি কেউ কিছু নিয়ে আসে। কিন্তু অর্ধদিনেও কোনো খাবার পাননি। এখন ঘরে পানি ছাড়া আর কোনো খাবার নেই। ইফতার পর্যন্ত কেউ যদি কিছু না দিয়ে যায় তবে পানি দিয়েই ইফতার সারবেন।
তসলিমা জানান, আগে কাগজ কুড়িয়ে তা বিক্রি করে যা পেতেন তা দিয়েই প্রতিদিন কোনোমতে প্রাণরক্ষার চেষ্টা করতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে কাগজও নেই। আর যা ঘরে আছে তা বিক্রিরও সুযোগ নেই। বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই প্রতিদিন খেয়ে না খেয়েই আছেন। যেদিন কেউ কিছু দিয়ে যায় সে দিন হয়তো একবেলা খেয়ে পরের দিনের অপেক্ষায় থাকেন। আর না দিয়ে গেলে পানি খেয়েই জীবন রক্ষার চেষ্টা করেন।
তসলিমা ছাড়াও এখানে বসবাস করেন আরো প্রায় শতাধিক ভাসমান মানুষ। এদের সবাই পরিবার নিয়ে আছেন। কয়েকজন জানালেন তসলিমার মতো তাদেরও একই অবস্থা। কেউ যদি সামান্য কিছু নিয়ে আসে তবে তা নিয়ে সবার মধ্যে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। এতে কেউ পায় তো কেউ পায় না। যারা পান তারা একবেলা খাবারের স্বাদ নিলেও বাকিদের তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না। আর এখন রমজানে অবস্থা আরো করুণ। সারা দিন রোজা পালনের পর কী দিয়ে ইফতার করবো আবার ইফতারের পর কি দিয়ে সেহরি খাবো তার চিন্তায় স্বাভাবিক থাকা দায়।
আর শিশুদের অবস্থা অবর্ণনীয়। ক্ষুধায় তাদের কান্না থামানোর ব্যর্থ চেষ্টায় প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হন বাবা-মা। কি বলে অবুঝ শিশুকে সান্ত্বনা দেবেন এত দিন সেই ভাষাও তারা হারিয়ে ফেলেছেন। এখানে অবস্থানরতদের অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে সহযোগিতা চেয়েও তারা পাননি। তাদের বলা হয়েছে এখানের ভোটার না হলে তারা কোনো সহযোগিতা পাবে না। আবার কোনো কোনো ওয়ার্ড কমিশনার বলেছেন পরিচিতজন ছাড়া তারা কাউকে কোনো সহযোগিতা দেবে না। এ নিয়ে একাধিকবার গিয়েও তারা খালি হাতে ফেরত এসেছে। এখন সব রাস্তা বন্ধ। একমাত্র সাধারণ মানুষ পাশে দাঁড়ালে তাদের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে।
তসলিমা ছাড়াও একাধিক নারী জানান, তাদের অনেকে বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও কাজ করতেন। এখন সব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনিশ্চিত তাদের জীবন। এমন অবস্থায় করোনার ভয়াবহতা তাদের কাছে এখন তুচ্ছ। ক্ষুধা নিবারণের যুদ্ধে তাদের ঘুম হারাম। দিনের বেলায়ও অনিশ্চিত জীবনের অন্ধকারে ডুবে আশার আলো হারিয়েছে তারা। এভাবে কত দিন চলবে, এমন যাত্রার শেষ গন্তব্য তাদের জানা নেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
৪২ বছর পর স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে জানতে পারলেন তিনি মুসলিম, অতঃপর...! নুসিরাতে ইসরাইলি হামলায় ২০ জন নিহত চেলসিতেই যাচ্ছেন মেসিনিয়ো! প্রতিকূল ফ্রান্স ছাড়ছেন মেধাবী মুসলিম পেশাজীবীরা রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ, বাসে হামলা সোনাতলায় শ্বশুরবাড়িতে জামাই খুন : স্ত্রীসহ আটক ২ এডব্লিউএস কমিউনিটি ডে বাংলাদেশ উদযাপন কাঁচের ভবনের কারণে তাপদাহ বাড়ছে? কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলা, নিহত সাবেক বিজেপি নেতা উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার তীব্র আক্রমণের আশঙ্কা জেলেনস্কির মেট্রোরেল টিকেটে ভ্যাট আরোপ পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : সেতুমন্ত্রী

সকল