স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে নিজের শাশুড়িকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। নিহত শাশুড়ির নাম শেফালী অধিকারী (৪৮)। এ ঘটনায় ওই পুলিশ সদস্য ছুরিকাঘাত করে তার স্ত্রী ফাল্গুনি অধিকারী, শ্যালক আনন্দ অধিকারী ও শ্বশুর সদানন্দ অধিকারীকেও জখম করে বলে জানা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের আহত স্ত্রী, শ্যালক ও শ্বশুরকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে এলাকাবাসী।
এদিকে শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করে হত্যাকারী ঘাতক জামাইয়ের নাম অসীম কুমার ভট্টাচার্য। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পরপরই তিনি পালিয়ে যান বলে জানা যায়। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সিআইডি বিভাগে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, সিআইডি পুলিশের কনস্টেবল অসীম ও ফাল্গুনি দম্পতি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কলেজপাড়ার একটি ভাড়াবাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। কয়েকদিন যাবত পারিবারিক কলহের কারণে শুক্রবার রাতে পুলিশের কনস্টেবল অসীমের স্ত্রী ফাল্গুনি পার্শ্ববর্তী মাদরাসাপাড়ার বাবার বাড়িতে অবস্থান নেন।
পরে গভীর রাতে অভিযুক্ত অসীম শ্বশুর বাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে ডাকাডাকি করলে ফাল্গুনি দরজা খুলে দেন। এসময় অসীম অতর্কিতে স্ত্রী ফাল্গুনি অধিকারীকে ছুরিকাঘাত করেন। এসময় তার চিৎকারে শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালক ছুটে আসেন। এসময় পুলিশ কনস্টেবল অসীম তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করেন।
এতে শাশুড়ি শেফালী অধিকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এই ঘটনার পরই অভিযুক্ত জামাতা পুলিশ কনস্টেবল অসীম কুমার ভট্টাচার্য ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আলমডাঙ্গা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে অসীম ও ফাল্গুনি দম্পতির মধ্যে মাঝেমধ্যেই বিরোধ তৈরি হতো। শুক্রবার গভীর রাতেও তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে স্ত্রী ফাল্গুনি অধিকারী পাশেই বাবার বাড়িতে চলে যায়।
আহত শ্যালক আনন্দ অধিকারী জানান,‘দিদি আমাদের বাড়িতে আসার কিছুক্ষণ পরই অসীম (জামাই বাবু) আমাদের বাড়িতে আসে। দিদি গেট খুলতেই তাকে উপর্যুপুরী ছুরিকাঘাত শুরু করে অসীম। এ সময় মা শেফালী অধিকারী ও আমি ছুটে গেলে আমাদেরকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আমার মায়ের।’
নিহতের স্বামী ও কনস্টেবল অসীমের শ্বশুর সদানন্দ অধিকারী বলেন, ৯ বছর আগে খুলনার দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বরপাশা গ্রামের মৃত দুলাল ভট্টাচার্যের ছেলে অসীমের সাথে আমার মেয়ে ফাল্গুনির বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই সন্দেহের বশে নানা কারণে আমার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন করতো অসীম। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান আসলেও নির্যাতনের মাত্রা কমেনি।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কলিমুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। গুরুতর আহত ফাল্গুনী ও আনন্দকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত কনস্টেবল অসীম।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ‘পুরো বিষয়টি একটু জটিল মনে হচ্ছে। তবে এটি পরিষ্কার যে ওই দম্পতির মধ্যে কলহ ছিল। অসীমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা