০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ডায়াবেটিস রোগীর দাঁতের যতœ

-

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমান বিশ্বের প্রায় দুই শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। ডায়াবেটিস রোগের সাথে মুখের এবং দাঁতের রোগের উল্লেখযোগ্য মিল খুঁজে পাওয়া গেছে সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায়। ডেন্টাল ক্যারিজ বা দন্তক্ষয়, মাড়ির রোগ, মুখে বিভিন্ন ধরনের ঘা, কোষ প্রদাহ ইত্যাদি রোগগুলো উল্লেখযোগ্য।
ডায়াবেটিস থেকে দাঁতের রোগ :
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জিনজিভাইটিস বা মাড়ির প্রদাহ এবং ডেন্টাল ক্যারিজ বেশি হয়। আমরা জানি, শরীরে রক্তপ্রবাহের কাজ হচ্ছে কোষে অক্সিজেন ও অন্যান্য উপকরণ বহন করা এবং অবশিষ্ট বাজে অংশ বের করে আনা, কিন্তু ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের রক্তনালীগুলো সরু হতে থাকে। ফলে দেহে রক্তের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং অক্সিজেন ও অন্যান্য উপকরণ দেহের সব অংশে পৌঁছায় না। এ অবস্থায় মাড়ি ও দাঁতের স্বাভাবিক রক্তের পরিমাণ ও গতি ব্যাহত হয়। এ সময় মাড়ি ফুলে ওঠে এবং কোনো আঘাত লাগলে প্রদাহ দেখা দেয়, তা ছাড়া মাড়িতে আগের কোনো সমস্যা থাকলে তা আরো বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে আসে। ফলে দাঁতের গোড়ায় প্লাক জমা হলে সহজেই মাড়ির প্রদাহ শুরু হয়। এ ছাড়া শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতি হলে, আমিষেরও ঘাটতি হয়। ফলে কোষ কলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যাহত হয়, তাই মুখের কোনো স্থানে ঘা বা প্রদাহ হলে তা সারতে দেরি হয় বা বিঘœ ঘটে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর মুখের লালার সাথে গ্লুকোজ বাড়তি সংযোজনের ফলে ওই গ্লুকোজ মুখে এক ধরনের আণুবীক্ষণিক জীবাণুর সাথে মিলে এক ধরনের এসিড সৃষ্টি করে। সেই এসিড দাঁতের ওপরের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করতে থাকে এবং ধীরে ধীরে দাঁতের ভেতরে গর্তের সৃষ্টি করে। এভাবেই ডেন্টাল ক্যারিজ বা দন্তক্ষয় রোগ হয়ে থাকে। এ ছাড়া মুখের লালার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়, পরিমাণ কমে যায়, ফলে মুখের অতিরিক্ত শুকনো পরিবেশ খাবারের কণাগুলো ধুয়ে মুছে যেতে পারে না। এ খাদ্য কণাগুলো দীর্ঘদিন দাঁতের গায়ে ও মাড়ির ফাঁকে জমে থেকে দাঁত ক্ষয় রোগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।
ডায়াবেটিস রোগীর দাঁতের যতেœ করণীয় ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখাই হচ্ছে দাঁত ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধের অন্যতম শর্ত। মাড়ির অতিরিক্ত প্রদাহ অনেক সময় ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসুবিধার সৃষ্টি করে। যদি মাড়ির প্রদাহ শুরু হয় তবে ওই ঘা শুকাতে অনেক দেরি হয় এবং দীর্ঘ স্থায়ী প্রদাহের কারণেই দাঁত হারাতে হয়। প্রতি ছয় মাস পর ডেন্টাল সার্জনকে দিয়ে মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করাতে হবে। ডেন্টাল সার্জনকে অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস রোগের কথা বলতে হবে। দাঁত ও মাড়ি যাতে সুস্থ থাকে সেজন্য ডেন্টাল সার্জনের কাছ থেকে আপনার দাঁতের যতেœ কী কী করা প্রয়োজন তা অবশ্যই জেনে নিতে হবে। প্রতিদিন দুইবার সকালে এবং রাতে খাওয়ার পর অবশ্যই দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করতে হবে। আপনার ব্যবহৃত ব্রাশের ব্রিসল অবশ্যই নরম হতে হবে। দুই দাঁতের মাঝ থেকে খাদ্যকণা বের করার জন্য ডেন্টাল ফ্লস বা এক ধরনের সুতা ব্যবহার করতে হবে। যদি দাঁত ব্রাশ করার সময় বা খাওয়ার সময় মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়, তবে সাথে সাথেই একজন ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নেয়া উচিত। যেকোনো খাবার বা পানীয় (পানি ছাড়া) খাওয়ার পর অবশ্যই কুলি করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার দাঁত আপনারই, দাঁত সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন শুধু আপনার একটু সচেতনতা।

 


আরো সংবাদ



premium cement
কুয়াকাটা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১১, আটক ২ মে মাসে ১৩টি বজ্রঝড়ের আভাস চীন যেভাবে মেক্সিকোকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্য প্রবেশ করাচ্ছে মুলাদীর মেঠোপথে শোভা ছড়ানো সোনাইল আজ বিলুপ্তির পথে জয়পুরহাটে ট্রাক্টর-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ পাঁচ বছর পর ইউরোপ সফরে শি জিনপিং যাত্রাবাড়ীতে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২ ইউক্রেনে ইস্টার প্রার্থনার মাঝে ড্রোন হামলা, রণাঙ্গনে রাশিয়ার সাফল্য দাবি যে সব কারণে করের বোঝা বাড়তে পারে আগামী বাজেটে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ‘জেনোফোবিক’ বক্তব্য নিয়ে ভারত-জাপানের আপত্তি আ’লীগ নেতাকে কটুক্তি, ছাত্রলীগ সভাপতিকে শোকজ

সকল