২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হঠাৎই অবসরের ঘোষণা স্বপ্নার, থাকছেন না কোচ ছোটনও

সিরাত জাহান স্বপ্না ও গোলাম রব্বানী ছোটন - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবলে হঠাৎই তোলপাড়। দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাফজয়ী দলের অন্যতম স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না। সেইসাথে খবর এলো জাতীয় নারী দলের সফল কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও সরে যাচ্ছেন।

গত সেপ্টেম্বরে সাফ শিরোপা বিজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন ২২ বছর বয়সী সিরাত জাহান স্বপ্না। চার গোল করেছিলেন। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি।

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ক্যাম্প থেকে তিনি নিজ জেলা রংপুরে চলে যান। এরপর আজ শুক্রবার ফেসবুকে এসেছে তার অবসরের ঘোষণা।

অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে এক পোস্টে স্বপ্না লিখেন, ‘আমি নিজ ইচ্ছায় পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিলাম। প্রায় আট বছর পেশাদার ফুটবল খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। ফুটবল ক্যারিয়ারে আসার পর আমি অনেক কিছু পেয়েছি। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই মহান আল্লাহ তাআলার প্রতি। খেলার সুবাদে অনেকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে। তাই জেনে বা না জেনে যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, প্লিজ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

এদিকে, কোচ গোলাম রব্বানী আজ শুক্রবার একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি আর কোনো টুর্নামেন্ট করব না জাতীয় দলের হয়ে। বিষয়টি আমি অফিসিয়ালি চিঠি দিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে জানিয় দেব বাফুফেকে। বলতে পারেন আমি আর এ মাসটা আছি। আগামী মাস থেকে নারী দলের দায়িত্বে আর থাকছি না।’

দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতিনিয়ত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। একটার পর একটা টুর্নামেন্ট। এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে আমি অনেক ক্লান্ত। পরিবারকে সময় দিতে পারি না, ব্যক্তিগত কোনো জীবন নেই। সারাদিন কাজ। কাজের পরিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। জবাবদিহিতা বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমি দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

দেশের নারী ফুটবলকে আজকের অস্থানে আনার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা গোলাম রব্বানী ছোটনের।

স্বপ্নার অবসরে অবাক জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “খুব সম্ভবত কোনো হতাশা থেকেই সে অবসরের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা তার সাথে কথা বলে বুঝিয়েছি। কিন্তু লাভ হয়নি। সে বলে, ‘স্যার খেলে কী হবে! সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর কেটে গেছে আট মাস। কিন্তু কোনো খেলা নেই। ফ্রাঞ্চাইজি লিগ শুরু হওয়ার কথা, সেটারও কোনো খবর নেই।’”

পারিবারিক কোনো কারণে স্বপ্না খেলা ছাড়ছেন কিনা- এমন প্রশ্নে ছোটন বলেন, ‘আমরা তাকে বারবার এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি। সে বলেছে, বিয়ের কোনো চাপ নেই। এমনকি কোনো পারিবারিক কারণেও সে ফুটবলকে বিদায় বলেনি।’

২০১১ সালে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে যাত্রা শুরু স্বপ্নার। খেলেছেন বঙ্গমাতা টুর্নামেন্টের দুটি আসর। এরপর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী দলে ডাক পান। ২০১৪ সালে ঢাকায় খেলেন আঞ্চলিক বাছাইপর্ব। ২০১৫ সালে নেপালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলের আঞ্চলিক পর্বে বাংলাদেশ শিরোপা জিতেছিল। স্বপ্না ছিলেন সে দলের সদস্য। অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি বাছাইয়েও খেলেছেন ২০১৬ সালে। সে বছরই শিলং-গুয়াহাটি এসএ গেমসে জাতীয় নারী দলের জার্সি পরেন। ২০১৭ সালে নারী সাফে ৫ গোল করেছিলেন। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফে ৮ গোল করেছিলেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement