৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু কুয়াকাটায় উপচে পড়া ভিড়
কক্সবাজার সৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম : নয়া দিগন্ত -

দুর্গাপূজা, সাপ্তাহিক ও ঈদে মিলাদুন্নবী সা:- এর টানা ছুটি উপলক্ষে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে। বুধবার সকাল থেকে মানুষের ঢল নামে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে হাজার হাজার পর্যটক দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায়ও ব্যাপক ভিড় রয়েছে। এতে দেখা দিয়েছে যানবাহন সঙ্কট। গণপরিবহনগুলো রিজার্ভ ট্রিপ ধরতে গিয়ে স্থানীয়দের এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ দিকে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার টানা কয়েক দিনের ছুটিতে কয়েক শত কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে বলে তারা আশা করছেন। প্রচুর পর্যটক আগমনে খুশি হোটেল ব্যবসায়ীরা। হোটেল মোটেল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, অক্টোবরের শুরু থেকে পর্যটক আগমনে ভালো সাড়া দেখা গেছে। সব হোটেলে বুকিং প্রায় শেষ। কক্সবাজারের শালিক রেস্তোরাঁর মালিক নাছির উদ্দীন জানান, বুধবার সকাল থেকে লোকসমাগম দেখা যাচ্ছে। এই চাপ ছুটির শেষদিন পর্যন্ত থাকবে। ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি রেজাউল করিম জানান, টানা কয়েক দিনের ছুটিতে লাখো পর্যটকের সমাগম প্রতি বছর হয়, তবে এবার পূজার বন্ধ একসাথে হওয়ায় আরো বেশি আসছে মানুষ। তবে তিনি সেন্টমার্টিন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে বলেন, প্রতি বছর সহজে অল্প খরচে পর্যটকরা টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যায়। কিন্তু এ বছর একটি চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারছেন না।


ঢাকার সাভার থেকে আসা মনজুর-আফ্রিন দম্পতি জানালেন, কক্সবাজারে বিয়ের পর প্রথম আসছি। আসলে প্রাণ-প্রকৃতি ও আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টি অবলোকন করতে সমুদ্রশহরে আসা দরকার। তবে তারা পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য তদারকি করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান। পাঁচ তারকামানের হোটেল কক্স-টুডের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আবু তালেব জানান, দুর্গাপূজা ও সরকারি ছুটির কারণে কক্সবাজারে অনেক ভিআইপি এসেছেন। হোটেলে অনেক আগে থেকে প্রায় রুম বুকিং ছিল। সামনেও ভালো পর্যটক আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ছুটি ছাড়াও প্রচুর পর্যটক আসবে। কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো: মুজিবুর রহমান বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করা হচ্ছে।
এ দিকে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো: জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় প্রস্তুত। প্রতিটি পয়েন্টে সাদা পোশাকে কাজ করছে পুলিশ। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ট্যুরিস্ট পুলিশের হেলপ ডেস্ক বসানো হয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ বলেন, মোট পাঁচ দিনের ছুটি উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। এ ছাড়া ছুটি না হলেও পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারে হাজার হাজার পর্যটক আসবেন।


কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল শুরু : মিয়ানমার সীমান্তে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির চলমান সংঘর্ষে নিরাপত্তাজনিত কারণে এবার কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএর ঘাট থেকে ছেড়ে গেছে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামে একটি জাহাজ। জাহাজটির কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কর্ণফুলী এক্সপ্রেসে ৭৫০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত শুরু হয়েছে। সি ক্রুজ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের (স্কোয়াব) সভাপতি তোফায়েল আহমদ জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের কারণে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বিকল্প উপায় হিসেবে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম থেকে জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি।
এ দিকে বছরের প্রথম পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনে আসায় খুশি দ্বীপের মানুষ। হোটেল- রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা পর্যটকদের স্বাগত জানাতেও প্রস্তুত রয়েছে। তবে দ্বীপবাসী ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল না করায় হতাশ। সেন্টমার্টিন হোটেল সি প্রবালের পরিচালক আবদুল মালেক জানান, এ বছর টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল না করলে হোটেল ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। কারণ মৌসুম সামনে রেখে অনেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে হোটেল রেস্তোরাঁ করেছে। সেখানে একটি জাহাজে ৬০০-৭০০ পর্যটক গেলে কিভাবে ব্যবসা হবে। দ্বীপ ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিনের লোকজন অপেক্ষা করে কখন পর্যটন মৌসুম শুরু হবে তখনই হাসি ফুটে মানুষের। তিনি আশানুরূপ জাহাজ চলাচলে অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানান।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ। কিন্তু হঠাৎ করে চলতি মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হলেও টিকিটের চাহিদা ছিল অতিরিক্ত। প্রথম দিনে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণ বাধাগ্রস্ত হলে পর্যটন শিল্পের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে পর্যটকরা কক্সবাজার বিমুখ হবে।


ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জাহাজে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি দলও নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, নাব্যতা সঙ্কটের কারণে আপাতত টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেস পরীক্ষামূলক চলাচল করছে। অবস্থা বুঝে পর্যায়ক্রমে আবেদন করা জাহাজগুলোকে অনুমতি দেয়া হবে। তবে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সরকারের দেয়া নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
বিকল্প পথে জাহাজ চালাতে চায় স্কোয়াব ও টুয়াক : নাব্যতার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় নতুন রুটে পর্যটকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করাতে চায় সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক)। তারা মনে করেন, বিকল্প পথ হিসেবে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্কসংলগ্ন সৈকতে অস্থায়ী জেটি করে পন্টুন নির্মাণ করে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করা সম্ভব। গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি তোলা হয়েছে।
স্কোয়াব ও টুয়াক এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেছেন। তারা বলেন, প্রয়োজনে আমরা নিজেদের খরচে অস্থায়ী জেটি ও পন্টুন স্থাপন করব। এটা করা গেলে অল্প খরচে ও অল্প সময়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছানো সম্ভব হবে।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্কোয়াব সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন স্কোয়াব সভাপতি তোফাইল আহমদ। লিখিত বক্তব্যে হোসাইন আহমদ বাহাদুর বলেন, অনেক বছর ধরে নাব্যতাসঙ্কট থাকা সত্ত্বেও আমরা জাহাজ পরিচালনা করে এসেছি। তা ছাড়া নাফ নদীর কয়েকটি অংশে ডুবোচর জেগেছে কয়েক বছর ধরে। মাঝে মধ্যে ওই সব ডুবোচরে পর্যটকবাহী জাহাজ আটকা পড়ার খবর অতীতে আপনারা সংবাদমাধ্যমে প্রচার করেছেন। সম্ভবত এই কারণে সরকার চাইছে আপাতত টেকনাফ- সেন্টমার্টিন নৌপথে এবার জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকুক। আমরা বর্তমানে পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম। তার দাবি, পর্যটকদের চাপ এবং এই শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেখে বিকল্প উপায় খুঁজতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কক্সবাজারে প্রতি বছর ২০-২৫ লাখ পর্যটক আসেন। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশের চাহিদা সেন্টমার্টিন ভ্রমণ। তা ছাড়াও কয়েক শ’ মানুষের বিনিয়োগে টেকনাফ, উখিয়া ও সেন্টমার্টিনে গড়ে উঠেছে উন্নতমানের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও অসংখ্য রেস্তোরাঁ। তাতে সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। তাদের মতে, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ- সেন্টমার্টিন নৌপথে ১০টি জাহাজ চলাচল করে আসছে। কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নেয়া সিদ্ধান্তে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, যা খুবই হতাশাজনক। তারা বলেন, প্রতি বছর অন্তত তিন লাখ পযর্টক টেকনাফ থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যান। সেন্টমার্টিনে ১০ হাজার মানুষ পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল হয়ে আছেন। আয়োজকদের মতে, চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ পরিচালনা করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কিন্তু পর্যটকরা চান অল্প খরচে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ। এই কারণেই স্কোয়াব ও টুয়াক বিকল্প উপায়ে জাহাজ চলাচলের এই উদ্যোগ নিতে চায়।


কুয়াকাটায় উপচে পড়া ভিড়
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, টানা পাঁচ দিনের ছুটি ঘিরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত কুয়াকাটা। গতকাল বিকেল থেকেই সৈকতে দেশী-বিদেশী হাজার হাজার পর্যটকের আগমন শুরু হয়। এমন ভিড়ে বুকিং শেষ হয়ে গেছে কুয়াকাটার অধিকাংশ রিসোর্ট ও হোটেল রুমের। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বেড়েছে পর্যটকদের বাড়তি আনাগোনা। আগতরা সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে মিতালিতে মেতে উঠেছেন। অনেকে আবার উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, সমুদ্রের ঢেউ, সবুজ বনানীর অপার ছোঁয়া আর লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ দেখতে পর্যটকদের এখন বিরামহীন ছুটে চলা। রাখাইন মার্কেট, ঝিনুক মার্কেট, শুঁটকি পল্লী, খাবার হোটেলসহ বাহারি পণ্যের দোকানেও রয়েছে সরব উপস্থিতি। এই পর্যটন নগরীর সবচেয়ে বড় বাধা ছিল সড়কপথে যোগাযোগ না থাকা। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর কেটে গেছে সব বাধা। যোগাযোগ সুবিধার কারণে ভিড় বেড়েছে পর্যটকদের। ছোট বড় মিলিয়ে দেড় শ’ হোটেল রিসোর্ট থাকলেও সরকারি ছুটি কিংবা বিশেষ দিনগুলোতে রুম পাচ্ছেন না পর্যটকরা। আশপাশের বাড়িগুলোকে কমিউনিটি ট্যুরিজমের আওতায় এনে রুম ভাড়া দেয়া হলেও তাতেও জায়গা হচ্ছে না। তাই অনেকে রাত্রি যাপন করে সৈকতে থাকা বেঞ্চ ও মসজিদ-মন্দিরের বারান্দায়। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় পর্যটন স্পটগুলোতে মোতায়েন রয়েছে মহিপুর থানা পুলিশ, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশসহ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement