০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


স্পট মার্কেট থেকে কেনা হচ্ছে আরো ৩৬৭ কোটি টাকার এলএনজি

-

স্পট মার্কেট থেকে আরো ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) কেনা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এক কোম্পানির কাছ থেকে এই পরিমাণ এলএনজি কেনার জন্য ব্যয় করতে হবে ৩৬৭ কোটি দুই লাখ টাকা। চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। প্রতি ইউনিট এলএনজির একক দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১০.৯৯০০ডলার/ এমএমবিটিইউ।
আজ বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপনের কথা রয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকটি ওয়েবিনারে অনুষ্ঠিত হবে। জানা গেছে, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০’ (২০১৮ সালের সর্বশেষ সংশোধনীসহ)-এর আওতায় মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ১৬তম এলএনজি কার্গো আমদানির মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য কাতার গ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের (ওকিউটি) সাথে দু’টি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে এলএনজি আমদানির পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি কেনা হচ্ছে। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার লক্ষ্যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ‘এমএসপিএ’ প্রস্তুত করে আইন ও সংসদবিষয়ক বিভাগের ভেটিং (আইনগত মতামত) নেয় জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগ। সে পরিপ্রেক্ষিতে এমএসপিএ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
পরবর্তীতে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদনের ভিত্তিতে পেট্রোবাংলা এমএসপিএ অনুস্বাক্ষরকারী ১৪টি প্রতিষ্ঠানের সাথে চূড়ান্ত এমএসপিএ স্বাক্ষর করে।
সূত্র জানায়, করোনার কারণে সরাসরি অথবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দরপ্রস্তাব গ্রহণ না করে এলএনজি স্পট পারচেজ (এলএসপি) সফটওয়্যারের মাধ্যমে দরপ্রস্তাব নেয়া হচ্ছে। ২০২১ সালে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কার্গো নেয়ার জন্য সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইতঃপূর্বে ১৫টি দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে ১০টি এলএনজি কার্গো নেয়ার জন্য সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, ১৮টি কার্গোর মাধ্যমে ৫,৮২,৪৩,৮৪৯ এমএমবিটিইউ এলএনজি সংগ্রহের জন্য চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি কার্গোর মাধ্যমে ৩,২৬,৪৩,৮৪৯ এমএমবিটিইউ এলএনজি সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি আটটি কার্গোর মাধ্যমে ২,৫৬,০০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি সংগ্রহের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বছর জুলাই মাসে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য স্পট মার্কেট থেকে কমপক্ষে ২টি এলএনজি কার্গো সংগ্রহ করা প্রয়োজন। গত ১৭ মে আরপিজিসিএল থেকে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছে জুলাই মাসের প্রথম স্পট কার্গোর জন্য এলএনজি সরবরাহের দরপ্রস্তাব আহ্বান করে ইমেইল করা হয়। এতে নীতিমালা অনুযায়ী বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। এর অন্যতম শর্ত হচ্ছে আগামী ১ জুলাই থেকে ০৩ জুলাইয়ের মধ্যে এলএনজি সরবরাহ করতে হবে। এ বিষয়ে এক সার-সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়, দরপ্রস্তাব গ্রহণকারী কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন মূল্যায়ন কমিটির কাছে পাঠায়। কমিটি দর উন্মুক্ত করে কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়নকৃত সুপারিশ সংবলিত একটি প্রতিবেদন প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটির (পিপিসি) কাছে দাখিল করে। দাখিল করা তিনটি প্রতিষ্ঠানের দরপ্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মেসার্স এক্সেলারেট এনার্জি এলপির দর গ্রহণযোগ্য বলে সুপারিশ করে।
সংস্থাটি প্রতি ইউনিটের একক দর (১০.৯৯০০ডলার/এমএমবিটিইউ) উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েছে। সে হিসাবে ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির জন্য ব্যয় হবে ৩৬৭ কোটি এক লাখ ৭০ হাজার ২৮৫ টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট (১৫ শতাংশ) ও ট্যাক্স (২ শতাংশ) রয়েছে ৫৩ কোটি ৩২ লাখ ৭২ হাজার ৬০৫ টাকা। আগামী ১৭ জুন বেলা ১২টার মধ্যে বিড ভ্যালিডিটির মেয়াদ শেষ হবে। তার আগেই নিয়ম অনুযায়ী সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। এ জন্য আজকের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।


আরো সংবাদ



premium cement