২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দানব সরকারকে সরালেই নারীর স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে : ফখরুল

-

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ থেকে নারীদের বেরিয়ে এসে নেতৃত্ব দিতে হবে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সোমবার সকালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের র্যালিপূর্ব সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য এই জাতির পঞ্চাশ বছর পরেও আমরা এ কথা বলতে পারি না যে, আমরা স্বাধীন। আমাদের মা-বোনেরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে না। তারাও বলতে পারে না যে, তারা স্বাধীন। এই সরকার সবার স্বাধীনতাকে হরণ করে নিয়েছে, বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে, তাদের মৌলিক স্বাধীনতা-গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে নিয়েছে। তিনি বলেন, তখনই নারীদের অধিকার সংরক্ষণ করা যাবে যখন সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। আজকে এই দিনে আমি নারীদের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করছি এবং এই কথা বলতে চাই, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ থেকে বেরিয়ে এসে অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোতে আসতে হবে সবাইকে এবং আপনাদের নেতৃত্ব দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আজকে পুরুষ-নারী সবাই যদি আমরা সমবেতভাবে উদ্যোগ নিয়ে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে সরানোর জন্য কাজ করি তাহলে অবশ্যই আমরা দেশকে মুক্ত করতে পারব, নারীদের মুক্ত করতে পারব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সত্যিকার অর্থে একটা আলোকিত বাংলাদেশ আমরা উপস্থাপন করতে পারব।
বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়াকে স্মরণ করে তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া এই উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশে নারীদের উন্নয়নের জন্য, তাদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসার জন্য তিনি প্রতিকৃতের ভূমিকা পালন করেছিলেন। এর পরে যে নারী নেত্রীকে, যে রাজনীতিবিদকে সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা আমি জানাতে চাই, তিনি হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া এই দেশের মহিলাদের উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় কাজটি করেছিলেন যে, মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ-সুবিধা করে দেয়ার জন্য বিনা বেতন তিনি গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত পড়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এটা একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই প্রথম দেশে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এবং মহিলা অধিদফতর তৈরি করেছিলেন। তখনো পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে করা হয়নি, তারা অনেক দিন পরে মহিলাদের জন্য আলাদা কনভেনশন হয়েছিল সেখানে মহিলাদের একটা স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই র্যালি করে। মহিলা দলের নেতাকর্মীরা ‘নারী নির্যাতন বন্ধ কর’, ‘বিনামূল্যে বেতনে পড়ালেখার সুযোগ নারীদের জন্য খালেদা জিয়ার উদ্যোগ’সহ বিভিন্ন সেøাগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এই র্যালিতে অংশ নেন। কাকরাইল নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁ হয়ে র্যালিটি বিএনপি কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
‘প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সঠিক, কিন্তু প্রশ্ন’ : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, খবরটি আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলার শুনানিতে তিনি বলেছেন, অনেক কথা বলেছেন। প্রধান বিচারপতি আদালতের পাঠ্যক্রমের মধ্যে এটা উনি বলতেই পারেন এবং তিনি যে পরামর্শ যেটা দিয়েছেন সেটা শিরোধার্য। কিন্তু এটি যখন গণমাধ্যমে আসে, তখন যদি কিছু পাবলিক ডিবেট তৈরি হয়। তিনি বলেছেন, সামাজিক গণমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়া ঠিক নয়। আপনার এই পরামর্শ সঠিক। আমি এটা অস্বীকার করছি না। আবার বলছেন যে, অন্যান্য দেশেও ব্যঙ্গচিত্র হয় কিন্তু বাংলাদেশেও ব্যঙ্গ চিত্র ভিন্নরকম।
রিজভী বলেন, আমি একটা প্রশ্ন রাখতে চাই মাননীয় প্রধান বিচারপতি। যখন কোনো নাগরিকের কথা বলা, কোনো নাগরিকের মুক্ত কণ্ঠে আওয়াজ তোলা, কোনো নাগরিকের কোনো চিত্রাঙ্কন সে যদি করে, ব্যঙ্গচিত্র করে, তাকে যদি সরকারি হেফাজতে খুন করা হয় তাহলে সেটাতে কি দেশের ভাবমর্যাদা বৃদ্ধি পায় কিনা এটা তো জনগণ জানতেই পারে। পুলিশ বাহিনীকে ‘দলীয়করণ’ এবং পুলিশ প্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করেন রিজভী।
সভাপতির বক্তব্যে মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, আজকে এই সরকারের আমলে আমরা নারীরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, বঞ্চিত ও নির্যাতিত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আমাদের অবশ্যই জেগে উঠতে হবে।
মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় র্যালিপূর্ব সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, মহিলা দলের সাবেক সভাপতি নুরে আরা সাফা, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, কেন্দ্রীয় নেত্রী নেওয়াজ হালিমা আরলি, নিলোফার চৌধুরী মনি ও জাহান পান্না বক্তব্য রাখেন।


আরো সংবাদ



premium cement