২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কক্সবাজারে নারীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই এসআইসহ ৩ পুলিশের

-

সাদা পোশাকধারী পুলিশ পরিচয়ে এক নারীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তিন লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে এক এসআইসহ তিন পুলিশকে গ্রেফতার করেছে কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ। একই সাথে গ্রেফতার হওয়া তিন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে বিভাগীয় ব্যবস্থা।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তারা হলেনÑ উপপরিদর্শক (এসআই) নুর-ই খোদা ছিদ্দিকী, কনস্টেবল আমিনুল মমিন ও মামুন মোল্লা। তারা তিনজনই কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত।
গত মঙ্গলবার গতকাল দুপুরে তাদেরকে কক্সবাজার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রফিকুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, বিষয়টির সাথে পুলিশের ভাবমূর্তি জড়িত। আমরা কোনোভাবেই পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হতে দিতে পারি না।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, একজন নারী তার কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন। যেটি ফৌজদারি অপরাধ। অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত সোমবার বিকেলে কক্সবাজার শহরের মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী রিয়াজ আহমদের স্ত্রী রোজিনা খাতুন এই ছিনতাইয়ের শিকার হন। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়। পরে ৯৯৯-এ ফোন করে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। এরপর আরো দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোজিনা খাতুন দোকান করার জন্য সোমবার তার আত্মীয়-স্বজন থেকে তিন লাখ টাকা সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরেন। বিকেল ৪টার দিকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় পাঁচ-ছয়জন সাদা পোশাক পরা লোক তার বসতবাড়িতে যায়। পরে তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে টাকা দাবি করে। রোজিনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বেধড়ক মারধর করে সাদা পোশাক পরিহিত লোকজন।
একপর্যায়ে রোজিনা তার কাছে থাকা তিন লাখ টাকা সাদা পোশাকধারী পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় রোজিনার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে অটোরিকশা থেকে একজনকে ধরে ফেলে।
পরে ট্রিপল নাইনে ফোন করে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক ব্যক্তিকে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে কক্সবাজার জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সবাইকে বিষয়টি অবগত করে তদন্তে নামে। একপর্যায়ে সোমবার রাতে এ ঘটনার সাথে জড়িত তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা নিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ছিনতাইয়ের শিকার রোজিনা খাতুনের স্বামী রিয়াজ আহমেদ জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে গ্যাসের দোকান করার জন্য আমার স্ত্রী এই টাকাগুলো তার আত্মীয়-স্বজন থেকে সংগ্রহ করেন। পরে বাড়ি ফিরলে সিএনজি করে পাঁচ-ছয়জনের একটি দল বাসায় ঢুকে তাকে মারধর করে পিস্তল ঠেকিয়ে টাকাগুলো ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানানো হলে ঘটনাস্থলে আটককৃত একজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। গ্রেফতার পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি বিধিমতো সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement