২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা যাত্রীরা ভোগান্তিতে

পাইলট সঙ্কটে বিমানের জেদ্দা মাস্কাট ও রিয়াদ রুটের ফ্লাইট

-

ওমানের মাস্কাট, সৌদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কয়েকটি ফ্লাইট শিডিউল তিন দিন ধরেই ঠিক থাকছে না। এতে বিদেশগামীরা শুধু হয়রানির শিকার হচ্ছেন না, বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ পরীক্ষার নেগেটিভ সার্টিফিকেট গ্রহণ করার পরও সেগুলো বাতিল হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে এক দিকে যাত্রীরা যেমন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, তেমনি নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট না ছাড়ার কারণে দুই দেশের বিমানবন্দরে এসব যাত্রীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল রাতে এ প্রসঙ্গে জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোকাব্বির হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরও তিনি টেলিফোন ধরেননি। তবে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান) জরেন্দ্রনাথের সাথে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অপারেশনাল, পাইলট-সংক্রান্তসহ যেকোনো বিষয়ে এমডি অথবা অপারেশনাল কেউ কথা বলবেন। তারাই এ ব্যাপারে বলবেন। বিমান মন্ত্রণালয় থেকে এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৫ জানুয়ারি রাত পৌনে ১০টায় মাস্কাটগামী ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল; কিন্তু নির্ধারিত সময় সেটি ছেড়ে যায়নি। সেই ফ্লাইটটি গতকাল বেলা ১১টায় (বোয়িং-৭৭৭-৩০০) ছেড়ে যাবে বলে যাত্রীদের জানানো হয়। পরে নির্ধারিত সময়ে সেটি গন্তব্যর উদ্দেশে উড়ে যায়। একইভাবে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশে বিমানের যে ফ্লাইটটি ছাড়ার কথা ছিল সেটিও নির্ধারিত সময়ের পরিবর্তে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ছেড়ে যায়। আবার সোমবার রাত ১২টা ৩০ মিনিটে রিয়াদের উদ্দেশে ঢাকা থেকে ফ্লাইটটি ছাড়ার শিডিউল থাকলেও সেটি গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাড়বে বলে নতুন শিডিউল যাত্রীদের জানানো হয়। তা ছাড়া গতকাল রাতে ঢাকা-রিয়াদ ও ঢাকা-মাস্কাট রুটের ফ্লাইট দু’টি যথাসময়ে ছাড়বে কি না সেটি নিয়েও কর্তৃপক্ষ অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনালের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, মূলত পাইলট-সঙ্কটের কারণে গত তিন দিন (২৫,২৬,২৭ জানুয়ারি) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাস্কাট, জেদ্দা ও রিয়াদ রুটের ফ্লাইটগুলো ছেড়ে যেতে পারছে না। শুধু তাই নয়, ক্রু-সঙ্কটের কারণে গতকাল রাতের দু’টি ফ্লাইটও ছেড়ে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। এসব রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর দিয়ে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, শুনেছি পাইলট-সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে বিমান কর্তৃপক্ষ অবসরে যাওয়া ১০ জন পাইলটকে এক্সটেনশন দিয়েছে। এক্সটেনশন পাওয়া পাইলটদের মধ্যে রফিক, মঞ্জুর, অরবিন্দ, হাসান ঈমাম, ইসহাক, খাজার নাম জানা গেছে। এদের মধ্যে অরবিন্দ গতকাল রাতের রিয়াদ ফ্লাইট নিয়ে রওয়ানা দিয়েছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, তিন দিন ধরে ফ্লাইট শিডিউল ওলটপালট হওয়ায় যেসব বিদেশগামী যাত্রী ফ্লাই করার আগেই বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ পরীক্ষার সার্টিফিকেট নিয়েছেন, তাদের সনদও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যদি ফ্লাইট বিলম্ব হয় তাহলে সেটিও বাদ হয়ে যাবে। এটি শুধু ঢাকা বা চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের জন্য নয়; মাস্কাট, জেদ্দা ও রিয়াদের স্টেশন থেকে আসা যাত্রীদেরও ভোগান্তির শিকার হতে হবে। তাদের মতে, হঠাৎ করে নির্ধারিত ফ্লাইটের পাইলটরা ফ্লাই করে কর্তৃপক্ষের কাছে অসুস্থ হওয়ার আবেদন (সিক রিপোর্ট) করার কারণে পাইলট-সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement