৫২২ রান করে ইনিংস ডিক্লেয়ারের পরও ২১৯ করা মুশফিক বলেছিলেন আমরাই বরং চাপে। কারণ দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ের (২৫/১) আরো ১৯ উইকেট আমাদের নিতে হবে! জিম্বাবুয়ের অ্যাডভান্টেজ সিলেটে জিতে। ড্র করলেও সিরিজ তাদেরই। কাল দিনভর দুশ্চিন্তায় কেটেছে বাংলাদেশের। বিশেষ যে ব্যাটিং করছিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা, তাতে ওই টেনশন কার না ছিল? দিনের একেবারে শেষ ঘণ্টায় জিম্বাবুয়ের সাজানো প্ল্যান এলোমেলো। শেষ ড্রিংকসেও রান ছিল তাদের ২৭০/৬। দিন শেষে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস শেষ ৩০৩ রানে। প্রশ্ন উঠতেই পারে এতগুলো রান করে ফেলল জিম্বাবুয়ে কিভাবে? আসলে যে উইকেটে বাংলাদেশ ৫২২ করেছে সাত উইকেটে। সেখানে জিম্বাবুয়ের অমন ব্যাটিং করা স্বাভাবিক। তবে উইকেটের রঙ পাল্টাতে পারে। সেটা আজ ও কাল। তাহলে আজ সকালে কী করবে বাংলাদেশ? দিনের খেলা শেষ হওয়ার পর থেকে রাতভর এ আলোচনা। যেহেতু জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করানোর সুযোগ। তাহলে কি প্রতিপক্ষকে ফলোঅন করাবে? নাকি সকালে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে লিড নেয়া ২১৮-এর সাথে আরো কিছু রান যোগ করে আবার ইনিংস ডিক্লেয়ার দেবে। উইকেটের যে অবস্থা এখনো ভালোই ব্যাটিং করা সম্ভব। আজ অন্তত দুই ইনিংসে শ’দেড়েক রান করে ছেড়ে দিলে প্রায় চার শ’র কাছাকাছি থাকবে লিড। ফলে বাকি চার সেশনে প্রতিপক্ষকে অল আউট করার টার্গেট নিয়ে নামতে পারবে মাহমুদুল্লাহরা। অনেক হিসাব-নিকাশ। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ সকালে ব্যাটিং করতেই নামবে। ফলোঅন করাবে না এ মুহূর্তে। কারণ চতুর্থ ইনিংসে বা শেষ দিনে যদি ১০০ রানেরও টার্গেট দিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। সেটা চেজ করা কষ্টও হয়ে যেতে পারে। কঠিন সমীকরণে বাংলাদেশ। গত রাতে অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্ট মিলে এ আলোচনা করে আজ সকালে সিদ্ধান্ত দেবে। আর যদি ফলোঅন করেও তাহলে সেটা সকালেই জানাবে জিম্বাবুয়েকে। রাতভর টেনশনে রাখার কৌশলটা কেন ছাড়বেন মাহমুদুল্লাহ।
আসলে ম্যাচ জমে উঠেছে। বাংলাদেশ যা ভেবেছিল, জিম্বাবুয়েকে সহজেই উড়িয়ে দেয়া যাবেÑ সেটা কিন্তু হচ্ছে না। বিশেষ করে ওদের ব্যাটিং ও প্রথম ইনিংসে ৩০৩ সংগ্রহ করার পর। যা-ই করবে অনেক হিসাব কষেই। ভয় আরো একটা আছে। সেটা মিরপুরের রহস্য ঘেরা উইকেট। ধারণা করছেন ক্রিকেটাররা চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে স্পিনাররাই বেশি সহায়তা পাবে। কিন্তু সেটা যদি না হয়? যদি ব্যাটিং উপযোগী হয়ে যায় বা ফ্লাড উইকেট থাকে। হলে হতেও পারে। এমন নজির যে নেই তা নয়। যদিও টেস্টের উইকেট সাধারণত পঞ্চম দিন ভেঙে যায়। টার্ন ধরে। তবু শঙ্কা কাজ করছে। কারণ ম্যাচে হার যেমন মানা যাবে না, তেমনি ড্র’ও। জিততেই হবে ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে।
কাল জিম্বাবুয়ে সত্যিই ভালো ব্যাটিং করে গেছে। আগের দিন মাসাকাদজার উইকেট হারিয়ে ২৫ রান নিয়ে খেলতে নেমে প্রথম সেশনে সংগ্রহ করে ৭৫ রান আরো দুই উইকেট হারিয়ে। অর্থাৎ লাঞ্চ বিরতিতে রান ছিল ১০০/৩। এরপর খেলতে নেমে প্রথম ঘণ্টায় খুব কম রান ওঠে। মাত্র ৩৬ রান সংগ্রহ করে তারা বিনা উইকেটে। চা-বিরতি পর্যন্ত ওই রান নিয়ে যান তারা ১৯৫/৫-এ। এ ঘণ্টায় ডেঞ্জার দুই ব্যাটসম্যান শেন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজাকে আউট করে কিছুুটা হলেও প্রেসার তৈরি করে ফেলে জিম্বাবুয়ের ওপর। তাইজুল নিয়েছিলেন উইকেট দু’টি। কিন্তু কী হবে। এরপর আবার উইকেটে চেপে বসে পিটার মুর ও ব্রেন্ডন টেইলর। আউটই করা যাচ্ছিল না এদের। দেখতে দেখতে ১৩৯ রানের পার্টনারশিপ খেলে দুশ্চিন্তায় ফেলে দেন তারা। শেষ ঘণ্টার ঠিক একটু আগে আরিফুলকে মোকাবেলা করতে যেয়ে ৮৩ রান নিয়ে ব্যাটিং করতে থাকা পিটার মুরকে আউট করেন মেহেদি হাসান। দুর্দান্ত ক্যাচটি ধরেছিলেন তাইজুল। ম্যাচের মোড় সেখানেই ঘুরে যায়। ড্রিংকসের পর টেইলর চাকাবাকে নিয়ে শুরু করলেও মিরাজের বলে এবার আউট সেঞ্চুরি করে এগিয়ে চলা টেইলর। ১১০ করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ যেন ছন্দ খুঁজে পায়। এরপর তাইজুল ও মিরাজ মিলে শেষ করে দেন ইনিংস। চাতারা ইনজুরির জন্য ব্যাটিং করতে না এলে মাভুতা আউটের সাথে সাথে দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়। তাইজুল নেন পাঁচ উইকেট ১০৭ রানে। মেহেদি নিয়েছেন তিনটি। ওই সময় দিনের খেলা বাকি ছিল ২.৩ বল। কিছুটা আলো স্বল্পতাও ছিল। আর খেলা হয়নি। আজ চতুর্থ দিনে নামবে দুই দল।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৫২২/৭ ডি. জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ৩০৩
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা