০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি পুতিনের, শেষ প্রহর গুনছে মারিউপোল

মারিউপোলের স্টিল কারখানা - ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেনের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় শহর মারিউপোল দখলের দ্বারপ্রান্তে রুশ বাহিনী। শহরটির সামান্য অংশই ইউক্রেনের হাতে রয়েছে। ইস্পাত কারখানার নিচের বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। তাদের সাথে রয়েছে কয়েক হাজার বাসিন্দা।

সেখান থেকেই ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের মেরিন কমান্ডার সেরহি ভলনা বলেন, ‘পৃথিবীর কাছে এটা আমাদের শেষ বার্তা। হয়তো এটাই আমাদের শেষ কথা। সম্ভবত আমাদের হাতে মাত্র কয়েকটা দিন বা কয়েক ঘণ্টা বাকি আছে।’

এদিকে প্রাণে বাঁচতে হলে রোববারের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল মস্কো। মঙ্গলবার ফের তারা শেষবারের মতো সুযোগ দিয়ে জানিয়েছে, অস্ত্র নামিয়ে ধরা দিলে ভয় নেই। অর্থহীন প্রতিরোধ বন্ধ করার কথাও বলে দেয় মস্কো।

কিন্তু মারিউপোলের সেনাবাহিনী জানিয়ে দেয়, তারা আত্মসমর্পণ করবে না। গোটা বিশ্বের কাছে সাহায্য চেয়ে মেজর ভলনা জানিয়েছেন, তাদের ৫০০ সেনা আহত অবস্থায় রয়েছেন। কয়েক হাজার সাধারণ বাসিন্দা রয়েছেন তাদের সাথে। এর মধ্যে কয়েকশত মহিলা ও শিশু, কারখানার নিচে পাতাল গুহায় বন্দি।

ইউরোপের অন্যতম এই বৃহৎ ইস্পাত কারখানা ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। কারখানার মাটির নিচে রয়েছে বহু টানেল ও অসংখ্য ঘর। রুশ বোমার হাত থেকে বাঁচতে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছিল মানুষ।

ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক মস্কোর কাছে মহিলা, শিশু ও প্রবীণদের ইস্পাত কারখানা থেকে বের করে আনার আবেদন জানিয়েছেন। রাশিয়ার পাল্টা দাবি, কারখানার নিচে ২৫ হাজার ইউক্রেনীয় যোদ্ধা ও ৪০০ বিদেশি ভাড়া করা সৈন্য রয়েছে। মারিউপোলবাসীদের অবিলম্বে শহর ছেড়ে পালানোর আবেদন জানিয়েছেন মেয়র বাদিম বয়চেঙ্কো।

এই পরিস্থিতিতে অপ্রত্যাশিতভাবে বুধবার কিয়েভে আসেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। ইউক্রেনের প্রেসিডন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের দেশের বড় বন্ধু। তিনি দাবি করেন ইউক্রেনে প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য করা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।

ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, সম্প্রতি কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সেটি ছিল একপ্রকার ইউরোপসহ গোটা বিশ্বকে বার্তা দেয়া, কিয়েভও নিরাপদ নয়। কিয়েভের মূল প্রশাসনিক কেন্দ্রে হামলা চালানোর হুমকিও দিয়ে রেখেছে মস্কো।

কিছুদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডনে ইউক্রেনকে ৮০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য দেয়ার ঘোষণা করেছিলেন। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা করেছে, একাধিক যুদ্ধবিমান ও বিমানের যন্ত্রাংশ পেয়েছে ইউক্রেন। তবে কী পরিমাণ পাঠানো হয়েছে তা খোলসা করেনি ওয়াশিংটন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই রাশিয়া ঘোষণা করেছে তারা সারমাট অন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করেছে। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম প্লেসেৎস্ক অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। সেখান থেকে পূর্বদিকের বহু দূরের কামচাটকায় নির্দিষ্ট স্থানে আঘাত করে সেটি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যারা রাশিয়াকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, তাদের জন্য খাবার পৌঁছে দেবে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

সূত্র : আনন্দবাজার


আরো সংবাদ



premium cement