২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আমি চাই সবাই ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকুক : মাহি

আমি চাই সবাই ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকুক : মাহি - ছবি : সংগৃহীত

দেশীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নাম মাহিয়া মাহি। করোনার কারণে সিনেমার কাজে তিনি খুব একটা ব্যস্ত না থাকলেও ব্যক্তিগত জীবনের নানা ইস্যুতে বেশ আলোচনায়। প্রতিদিনই ফেসবুকে ব্যক্তিগত নানা বিষয় নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট দেন। তারই ধারাবাহিকতায় জানিয়েছেন ১৩ সেপ্টেম্বর সারপ্রাইজ দেবেন তিনি। কী সারপ্রাইজ সেটা জানতে প্রশ্ন করেছিল নয়া দিগন্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির


ইদানীং প্রায়ই ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট দেন। এর কারণ কী?
কারণ যদি বলেই দেই তাহলে সেটা আর ইঙ্গিতপূর্ণ থাকবে না। ইঙ্গিতের বিস্তারিত জানতে অপেক্ষা করতে হবে। আমাদের চলার পথে সবসময় সবকিছু খোলামেলাভাবে বলা যায় না। তখনই আসলে এ ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে হয়। তবে এসব পোস্টের গভীরে নেগেটিভ কিছু নেই সেটা কথা দিলাম।

১৩ সেপ্টেম্বর সারপ্রাইজ দেয়ার কথা বলেছেন। এই বিষয়ে কি বিস্তারিত কিছু বলবেন?
বিস্তারিত বলার থাকলে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে বলতাম না। আমি চাই এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সবাই ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকুক।

কেউ কেউ ধারণা করছেন ওই দিন আপনি নতুন সম্পর্কের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন। আসলে কি তাই?
যারা ভাবেন তাদেরকে সুযোগ দিন। ইচ্ছেমতো ভাবতে থাকুক। কল্পনার পৃথিবীতে সবাই নিজের জায়গায় রাজা। যা ইচ্ছে ভাবতে থাকুক এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।

অপুর সাথে আপনার সম্পর্ক ভাঙার দুই বছর পর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে ফেসবুককে এত প্রাধান্য দিচ্ছেন কেন?
এর কারণ খুব সহজ। অন্যভাবে জানলে লোকজনের কাছে বিষয়টি এত দ্রুত পরিষ্কার হতো না। আমি সবসময় স্বচ্ছ থাকতে পছন্দ করি। ব্যক্তিগতভাবে ঝামেলায় থাকতে চাই না কোনো দিন। অপুর সাথে সংসার ভাঙার পর অনেকেই জানতে চেয়েছেন সিদ্ধান্তটি হঠাৎ নিয়েছি কি না। আমি আসলে সিদ্ধান্ত হঠাৎ নেইনি। প্রায় দুই বছর আগে আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা দুই পরিবার ছাড়া কেউ জানত না। বলতে পারেন, সবাইকে জানানোটা হঠাৎ করেই। জানানোর কারণও আছে। বিচ্ছেদের পরও গত দুই বছর আমরা দু’জন বিভিন্ন জায়গায় একসাথে ঘুরেছি, আড্ডা দিয়েছি। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। এসব দেখে মানুষ আসল ঘটনাটা জানতে পারেনি। এই ছবি দেখে সবাই ভাবেন, আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আমাকে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করে, আমি ঢাকায় না কি শ্বশুরবাড়ি সিলেটে। এটা শুনতে নিজের কাছেই পেইন লাগে, অস্বস্তি লাগে। আমার মনে হয়, অপুকে আরো বেশি অস্বস্তিতে পড়তে হয়। কারণ, মানুষ তো জানেন না আমাদের বিচ্ছেদ আগেই হয়ে গেছে। আমার মনে হয়েছে বিষয়টি সবার জানা উচিত। অপুর জন্যই সেটা বেশি দরকার। কারণ, বিষয়টি পরিষ্কার না হলে সে তো এগোতে পারবে না। আমি হয়তো আমার মতোই থেকে যাবো। নিজের মতো করে মানিয়ে নিতে পারব। আমি অপুর পরিবারকে বেশি ভালোবাসি। তাই মানবিক কারণেই বিষয়টি পরিষ্কার করে দিলাম।

বিষয়টি দীর্ঘ দুই বছর গোপন রাখা কি ঠিক হয়েছিল?
মনে হয়েছিল এই সময়টার মধ্যে সব জাগতিক ঝামেলাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব। কিন্তু পারিনি। অপু আমাকে খুব ভালোবাসে। সে বেশি করে চাইত সম্পর্কটা ধরে রাখতে। সেই ভালোবাসা থেকেই অপু চেয়েছিল ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য। সে ভেবেছিল, হয়তো একটা সময় সব ঠিক হয়ে যাবে। তার কারণেই এতদিন ঘটনাটি কাউকে জানাইনি। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে মনে হচ্ছিল, বিষয়টি গোপন রেখে অপুর ক্ষতি করে যাচ্ছি। আমার কোনো রাইট নেই তার ক্ষতি করার। আসলে এতদিন ধরে জানানো, না জানানোর দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে বের হতে চেয়েছি আমি।

আপনাদের দু’জনের কি আবারো এক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?
এখন পর্যন্ত সেটা নেই। তবে ভবিষতে কী হবে, তা বলা মুশকিল। কারণ, নিয়তি কাকে কখন কোথায় কিভাবে নিয়ে দাঁড় করায়, সেটা কেউই বলতে পারে না। আমাদের দু’জনের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মানের কমতি নেই। সবই ঠিক ছিল, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে আমাদের একসাথে থাকা হলো না।

অনেক দিন ধরে শোনা যাচ্ছিল আপনি অন্য আরেকজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। ঘটনাটি কি সত্যি?
না না, এসব সত্যি না। আপাতত এসবে জড়াচ্ছি না। এখন আমি ক্যারিয়ারের দিকে নজর দিচ্ছি। কাজে ব্যস্ত থাকব। অনেক দিন ধরেই ভাবছি দেশের বাইরে যাবো। দেশের বাইরে স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছা আছে। সিনেমার কাজের ফাঁকে ফাঁকে সেই প্রক্রিয়াটিও চলবে।

সিনেমার কী খবর বলেন?
এই মুহূর্তে ‘নরসুন্দরী’, ‘বুবুজান’, ‘যাও পাখি বলো তারে’, ‘আবির্ভাব’, ‘গ্যাংস্টার’ ছবিগুলোতে কাজ করেছি। এর মধ্যে দু’-একটি ছবির কাজ প্রায় শেষ।

আপনার মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ ছবিতে বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান। তার সাথে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
পার্থক্য হচ্ছে উনি অনেক অভিজ্ঞ। উনি আমাদের সমসাময়িক যেসব হিরো আছেন, তাদের চেয়ে অভিজ্ঞ এবং তিনি সিনিয়র, দ্যাটস ইট। এ ছাড়া আমি আর কোনো পার্থক্য দেখি না। অবশ্যই অনেক বছর আগে থেকে উনি কাজ করছেন এবং একটা পর্যায়ে। উনাকে বাংলাদেশের শীর্ষ হিরো বলা হয়, তার অভিজ্ঞতার দিক থেকে আমাদের এখনকার কেউই যায় না।

আপনার সিনেমাটি এসেছিল ওটিটি প্লাটফর্মে। সিনেমা মুক্তির এই মাধ্যম সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
সময়ের প্রয়োজনে অনেক কিছুই তৈরি হয়। ওটিটি তেমনই একটি প্রয়োজন। করোনাকালে প্রায় সব সিনেমাই মুক্তি পাচ্ছে ওটিটিতে। এটা যুগের সাথে তাল মেলানো হচ্ছে। তবে আমি যদি পারসোনালি বলতে যাই, আমার ভালো লাগে না। কারণ, হলভর্তি মানুষের সামনে নিজের কাজ দেখাটা একটা ডিফারেন্ট ফিলিংস। (যদি) আমার মনের কথা বলতে যাই, আমার মন খারাপ হয়। চিন্তা করতে কষ্ট হয়, আর কোনোদিন হলভর্তি দর্শক পাব কি পাব না। শুধু হলের জন্য কাজ করাটা, বড় পর্দার জন্য কাজ করাটা, সেটা আসলে অন্যরকম। ওটা দুঃখের বিষয় একটা, কিন্তু সবাই যেদিকে যাবে... যুগ যেদিকে যাবে, আমাদেরও তো সেদিকে যেতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement