০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


হ্যালো ভিসি সাহেব, প্লিজ সরে যান

- সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অপসারণ চেয়ে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তার আগে সন্ত্রাসীদের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছেন তারা। শিক্ষকদেরও একটি বড় অংশ এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন। অর্থাৎ, শুধু ছাত্রছাত্রীরাই নয়, সহকর্মীরাও ভিসির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার অপসারণ চাইছেন।

সম্প্রতি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করেন ভিসি নাসিরউদ্দিন। সমালোচনার মুখে ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তার আগে সারাদেশের মানুষ শুনেছে সন্তানতুল্য ওই শিক্ষার্থীকে শাসিয়ে কোন ভাষায় কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সর্বোচ্চ অভিভাবক।

মাননীয় ভিসি, আপনার পরিকল্পনাতেই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে বলে আপনার সহকারী প্রক্টর ড. হুমায়ুন কবির অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিবেকের তাড়নায় পদত্যাগও করেছেন তিনি। এখন কী বলবেন আপনি? পদ আকড়ে থাকতে আপনি শিক্ষার্থীদের ওপর যত জুলুম চালানো যায় তার সবই চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কী মগের মুল্লুক বানাতে চাইছেন?

ভিসি মহোদয়, মনে রাখুন গায়ের জোরে, পেটোয়া বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে কেউ কখনো পদে টিকে থাকতে পারেনি। ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া বাঘা বাঘা ভিসিদের মুখগুলো স্মরণ করুন। এখনো সময় আছে, প্লিজ সিদ্ধান্তে আসুন।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে নিজের বুক পেতে দিয়ে ছাত্রদের রক্ষা করেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা। পাকিস্তানি জোয়ানদের হাত থেকে নিজের ছাত্রদের বাঁচাতে তিনি বলেছিলেন,‘ডোন্ট ফায়ার, আই সেইড, ডোন্ট ফায়ার! কোনো ছাত্রের গায়ে গুলি লাগার আগে যেন আমার গায়ে গুলি লাগে।’ কথা রেখেছিলেন ড. জোহা। গুলিতে ঝাঁজড়া হয়ে শহীদ হয়েছিলেন তিনি। মাননীয় ভিসি, দেরি করবেন না, প্লিজ, এখনই সরে পড়ুন। যাদের জন্য আপনি ভিসি হতে পেরেছেন, সেই শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে কখনো ওই পদে থাকা যায় না।

দলীয় লোক না হলে ভিসি হওয়া যায় না, এটা আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য। কিন্তু সব শিক্ষক এক রকমের না, সব ভিসির চরিত্রও এক না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের মানসম্মান নষ্ট করবেন না, প্লিজ। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আর পানি ঘোলা না করে পদ ছেড়ে দিন।

শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, দীর্ঘ দিন ধরে অস্থিরতা চলছে জাহাঙ্গীরনগর এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চার বছরের জন্য ভিসি নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে প্রজ্ঞাপন জারি করে, সেখানে বলা থাকে, রাষ্ট্রপতি প্রয়োজন মনে করলে যেকোন সময় এই নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে পারবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলর দয়া করে এই প্রয়োজনটুকু মনে করুন। কারণ, ওই চেয়ারের লোভ ছেড়ে স্বেচ্ছায়-সসম্মানে তিনি বিদায় নেবেন বলে মনে হচ্ছে না। সূত্র : ডয়চে ভেলে।


আরো সংবাদ



premium cement