০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কর্মজীবী নারীদের আবাসন সুবিধা

ভাড়া পুনর্বিবেচনা করা হোক

-

দেশে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষার প্রসার এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার হওয়ার সাথে সাথে জীবনজীবিকার প্রয়োজনে নারীরা এখন পুরুষের পাশাপাশি আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে সমানতালে পা ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাজেন্ডা। সে জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রের অনেক ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে; যাতে তারা পেছনে পড়ে না থাকে। স্বাভাবিকভাবে চাকরি-বাকরিতে নারীর অংশগ্রহণ বিপুলভাবে বেড়েছে। গার্মেন্টের মতো শ্রমঘন শিল্পের বিকাশে নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে যথেষ্ট এবং তা আরো বাড়ছে। এসব কারণে কর্মজীবী নারীর আবাসনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারীরা চাকরি নিয়ে ঢাকায় আসেন। অনেকের এ শহরে কোনো আত্মীয়স্বজন থাকে না। থাকলেও তাদের সাথে স্থায়ীভাবে বাস করার অবস্থা থাকে না। আবার মেসবাড়ি বা বেসরকারি হোস্টেল অনেকসময় নিরাপদ নয়। সেগুলো যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষও। এ বিষয়ে সরকারের তরফে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে অনেক আগে। ঢাকায় গড়ে তোলা হয়েছে কয়েকটি কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল। প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট না হলেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় এসব হোস্টেলে নারীরা নিরাপদ আবাসনের সুযোগ পাচ্ছেন।
মূলত কর্মজীবী নারীদের নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করে দেয়াই সরকারি উদ্যোগের লক্ষ্য। এটি হওয়ার কথা সেবামূলক একটি কার্যক্রম; কিন্তু সম্প্রতি রাজধানীর নীলক্ষেতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্ভবত সেবামূলক থাকছে না। হয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়িক উদ্যোগের মতো। হোস্টেলটির যে নতুন ভবন তৈরি করা হয়েছে- সেখানে আবাসিকদের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে অস্বাভাবিক হারে।
হোস্টেলের পুরনো দু’টি ভবনে যে ভাড়া মাসে এক হাজার ১২০ টাকা তা-ই নতুন ভবনে নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার ৭৪৬ টাকা। অর্থাৎ নতুন ভবনে ভাড়া তিনগুণের বেশি।
এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে বিস্তারিত রিপোর্ট করা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট, মহিলা অধিদফতরের লক্ষ্য আর সেবা দেয়া নয়; বরং ব্যবসায় করতেই বেশি আগ্রহী। ঝাড়বাতি, এলইডি লাইটের মতো অত্যাবশ্যক নয় এমন কিছু বাড়তি সুবিধা যোগ করে এ বণিকবৃত্তির প্রকাশ ঘটানো হয়েছে। অথচ যেটি অত্যাবশ্যক সেই ক্যান্টিন সুবিধা নেই। খেতে হয় পুরনো ভবনে গিয়ে অথবা বাইরে। বাড়তি ভাড়া দিতে সমস্যা হওয়ায় অনেকে নতুন ভবনের আসন ছেড়ে দিয়ে পুরনো ভবনে যাওয়ার আবেদন করেছেন।
নতুন ভবনে যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সেটি বেসরকারি হোস্টেলের বা নিজেরা বাড়ি ভাড়া করে আবাসনের ব্যবস্থা করলে যে ব্যয় হতো তার চেয়েও বেশি। এটি শুধু অযৌক্তিক নয়, রীতিমতো জুলুম বলে মনে হয়।
এখনকার সময়ে ইন্টারনেট অত্যাবশ্যক চাহিদার মধ্যে পড়ে; কিন্তু এখানে ইন্টারনেট সুবিধা নেই। জিমে কোনো সরঞ্জাম নেই। বিউটি পার্লার থাকবে বলা হলেও নেই। বইশূন্য পাঠাগার তালাবদ্ধ। লন্ড্রি চালু হয়নি। খেলাধুলার সুযোগ রাখার কথা বলা হলেও তা নেই। অথচ ভাড়া বাড়ানো হলো দ্বিগুণ, তিনগুণ। নারীর ক্ষমতায়নের নীতির সাথে এটি সাংঘর্ষিক।
দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীরও ভূমিকা রাখা জরুরি। এটি সর্বজনস্বীকৃত বিষয়। সে জন্য নারীর এগিয়ে আসার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত; কিন্তু বঙ্গমাতার নামে প্রতিষ্ঠিত মহিলা হোস্টেলের নতুন ভবনে ভাড়া নির্ধারণে যে বাণিজ্যিক মনোভাব দেখা যাচ্ছে তা ভিন্ন বার্তা দেয়। নিরাপদ আবাসনের সুবিধা নারীর কর্মসংস্থানের যে আগ্রহ ও উৎসাহ সৃষ্টি করে এটি তার অনুকূল নয়।
আমরা আশা করব, বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা করে যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
সুন্দরবনে জ্বলছে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট শায়েস্তাগঞ্জে সাবেক সেনা সদস্য ট্রাকচাপায় নিহত ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে কায়রোতে জোরদার প্রচেষ্টা ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী আটক গাজীপুরে তুলার গুদামে আগুন স্টপেজের দাবিতে ফরিদপুরে প্রথম দিনই ট্রেনের গতিরোধ সন্দেশখালির ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো, বিজেপি নেতার ভিডিওতে তোলপাড় খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বজ্রপাতে মা-ছেলের মৃত্যু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় পূর্ব আফ্রিকায় মানবিক সঙ্কটের অবনতির হুমকি স্বরূপ এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ ঘোষণা অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে কর্মবিরতিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

সকল