০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গণপরিবহনে ভাড়া দ্বিগুণ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

-

দেশে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় গণপরিবহনে যাতায়াতের বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে সরকার। ওই নির্দেশানায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের জন্য কিছু শর্ত দেয়া হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলোÑ গাড়িতে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করার বিষয়টি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। নিত্যদিন যাদের গণপরিবহনে চড়তে হয়, তাদের কাছে নির্দেশনাটি এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার কারণও রয়েছে।
লক্ষণীয়, করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলে বর্ধিত ভাড়ার ঘানি টানতে হচ্ছে শুধু যাত্রীসাধারণকে। কিন্তু আদৌ স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি না তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে পারছে না, কিংবা করছে না। অনেকের অভিযোগ, এই না করার পেছনে প্রধান কারণ হলোÑ পরিবহন মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলো সরকার সমর্থক। এ খাতের মালিকপক্ষ এবং শ্রমিকদের স্বার্থ কোনোভাবেই যাতে ক্ষুণœœ না হয়; সে জন্য যাত্রীসাধারণের পকেট হাতিয়ে অর্থ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে খোদ সরকারের তরফ থেকে। তা না হলে শুধু নির্দেশ জারি করে দায়িত্ব শেষ করতে পারে না সরকার; গণপরিবহনের অরাজকতায় লাগাম টানতে কার্যকর পদক্ষেপ নিত। এ কারণে নির্দেশ জারির পরও যাত্রী পরিবহনে গণপরিবহনগুলোর চিত্র একটুও বদলায়নি।
করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের দ্বারপ্রান্তে দেশ। তবু গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। বেশির ভাগ আসন থাকে কানায় কানায় পূর্ণ। কিন্তু অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সরকারি নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে বাসমালিকরা গুরুত্ব না দিয়ে বরং যাত্রীদের থেকে দ্বিগুণ বা তারও বেশি ভাড়া আদায় করছেন। এতে করে যাত্রীরা দুইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একটি আর্থিক, অন্যটি স্বাস্থ্যঝুঁকি। ফলে গণমানুষের ভোগান্তি আগের যেকোনো সময়ে চেয়ে বেড়েছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত এবং শ্রমজীবীরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরের এখনকার চিত্র হলোÑ যাত্রীরা যখন বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন, তখন প্রচুর জনসমাগম হচ্ছে। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি যেমন বাড়ছে; তেমনি কর্মক্ষেত্র কিংবা অফিসে যেতে রাস্তায় অপেক্ষায় থেকে সময়মতো গাড়িতে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। যদিওবা উঠতে পারছেন, ভাড়া গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ, যা সাধারণের জন্য ‘বোঝার উপর শাকের আঁটি’র আপদ ছাড়া আর কিছু নয়।
করোনাকালে দেশের মুষ্টিমেয় মানুষ ছাড়া সবার আয় কমেছে। বিপরীতে, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। এটি স্পষ্ট যে, গণপরিবহনসংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে স্বাস্থ্যবিধি মানার নামে কেবল জনগণের ভোগান্তি বেড়েছে। এক দিকে যেমন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে, অন্য দিকে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সুযোগ কমেছে এবং গণপরিবহনে যাতায়াতে ভাড়া বেড়েছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত বা খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে; যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
দেশের সবকিছু যখন দিব্যি চলছে, তখন শুধু গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার নামে জনগণের ভোগান্তি বাড়ানো এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায় নাগরিক অধিকার হরণেরই নামান্তর। আমরা মনে করি, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষÑ সাধারণ নাগরিকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে বাসমালিকদের প্রণোদনার আওতায় তাদের ক্ষতি পোষানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। একই সাথে সড়কে প্রয়োজনীয় গণপরিবহন চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সহজে কর্মক্ষেত্রে যেতে পারে সাধারণ মানুষ। এসব নিশ্চিত করা গেলে অন্ততপক্ষে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে, ভোগান্তি কমবে। আর করোনার ঝুঁকি কমানোও সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, রিমান্ডে নেয়া হবে : ডিবি বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসকের কপাল ফাটিয়ে দিলেন ইউপি সদস্য ‘পঞ্চপল্লীর ঘটনা পাশবিক, এমন যেন আর না ঘটে’ টি২০ বিশ্বকাপের পিচ পৌঁছেছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে বৃদ্ধের ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার

সকল