০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`


তিন সপ্তাহ পরও ২৫ হাজার পানিবন্দী

ঝড়ের দুর্ভোগ কবে শেষ হবে?

-

কয়েক দিন আগের ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর দরুন ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের সংস্কার না করায় ঝড়ের তিন সপ্তাহ পরও পানিতে বাস করতে হচ্ছে ২৫ হাজার মানুষকে। তারা সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনির প্রতাপনগর ইউপির বাসিন্দা। নদ-নদীর জোয়ার-ভাটায় এলাকার স্যানিটেশন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। খাবার পানির তীব্র অভাব। মোট কথা, মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন এই ইউনিয়নবাসী এবং সর্বাধিক সঙ্কটে পড়েছেন বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা।
নয়া দিগন্তের সাতক্ষীরা প্রতিনিধির পাঠানো সংবাদ এটা। পানিতে নিমজ্জিত এলাকার ছবির পাশাপাশি, এই প্রতিবেদনে কুড়িকাউনিয়া গাঁয়ের অধিবাসীদের সূত্রে জানানো হয়, প্রতাপনগরে ভাঙনের প্রধান তিনটি স্থান এখনো মেরামত না করায় চার দিক পানিতে ডুবে আছে। ঘরেও থাকার উপায় নেই। চলাচল করতে হয় নৌকা দিয়ে। চার দিকে কেবল পানি, কিন্তু কোথাও নেই খাওয়ার পানি।
উল্লেখ্য, এ কথা ইংরেজ কবি স্যামুয়েল টেলর কোলরিজের বিখ্যাত কবিতা জরসব ড়ভ ধহ ধহপরবহঃ সধৎরহবৎ-এর পঙ্ক্তি মনে করিয়ে দেয়- ডধঃবৎ, ধিঃবৎ বাবৎুযিবৎব হড়ঃ ধ ফৎড়ঢ় ঃড় ফৎরহশ (সর্বত্রই পানি, তবে এর এক ফোঁটাও পান করার মতো নয়)।
জানা গেছে, গত বছর প্রায় একই সময়ে এলাকায় হয়েছিল প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়। ‘আমফান’ নামের সে ঝড়ের সময় ভাটায় নেমে যেত জোয়ারের পানি। কিন্তু এ বছর ঝড়ের পর পানি তেমন সরে যাচ্ছে না। এতে নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। এই এলাকায় ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার অবস্থা একই। প্রত্যেক বছর এমন চরম বিপদ ঘটলে লোকজন বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হবেন। অনেকে ইতোমধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে এখান থেকে চলেও গেছেন। অথচ ভাঙন দেখা দেয়ার শুরুতেই প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হলে তা এত ব্যাপক হতে পারত না। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০২০ সালের ২০ মে ঝড়ে বাঁধ ভেঙে জোয়ারে ভেসে গিয়েছিল ফসল, গবাদিপশু, বাড়িঘর ছাড়াও কয়েক কোটি টাকার মাছ। গোটা প্রতাপনগর ইউনিয়নের অবকাঠামোর তখন ক্ষতি হয়েছিল।’ এর পর থেকে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠায় ব্যস্ত ছিলেন উপকূলীয় জনসাধারণ। কিন্তু এর মধ্যেই আঘাত হেনেছে ‘ইয়াস’ নামক সর্বশেষ ঘূর্ণি যা আবার পুরো ইউনিয়ন বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। ইউনিয়নের ছয় ওয়ার্ডের ১৭টি গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবারে ২৫ হাজার সদস্য আজ পর্যন্ত পানিবন্দী। তাদের নেই কাজ, নেই কোনো খাদ্য। এমনকি কবর দেয়ার ঠাঁইও নেই। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়াসমেত পানিবাহী অসুখ-বিসুখ দেখা দিয়েছে। মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহার-অনাহারে। ত্রাণের সামগ্রী দিয়ে তাদের কুলাচ্ছে না।
একজন সমাজসেবক দুঃখের সাথে জানান, ‘প্রতাপনগর আর থাকার অবস্থায় রইল না। স্থায়ী বাঁধ দ্রুত নির্মাণ করা না হলে কেউ আর এখানে বাস করতে পারবে না। কুড়িকাউনিয়া ও হরিষখালীতে পাউবো ঠিকাদার কাজ করছেন অত্যন্ত মন্থর গতিতে। আগামী পূর্ণিমার আগে ভাঙন তিনটি মেরামত করা না হলে প্রতাপনগর ইউনিয়ন ম্যাপ থেকে মুছে যাবে।’ আশাশুনির ইউএনও স্বীকার করেছেন, ‘ইয়াসের ফলে পাঁচ ইউনিয়নে ১৪ জায়গার বাঁধ ভেঙে প্লাবনের সৃষ্টি করে। এর মধ্যে তিনটি পয়েন্টে বাঁধ আর দেয়া যায়নি। প্রতাপনগরে ক্ষতি সর্বাধিক। সেখানে পানি এখনো ঢুকছে এবং পাঁচ-ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দী। অবশ্য সুপেয় পানিসহ ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতে, ‘সাতক্ষীরা ও খুলনার ২৫ জায়গায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছিল। এর ২০টি পয়েন্ট মেরামত করা হয়েছে। ২৬ জুন পূর্ণিমায় পানি বাড়ার আগেই সব বাঁধের কাজ শেষ করার আশা করা হচ্ছে।’
আমরা আশা করি, বেড়িবাঁধ সংস্কার ও নির্মাণ, খাবার পানির সুব্যবস্থা, খাদ্য, গৃহনির্মাণ, চিকিৎসাসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ প্রভৃতি অবিলম্বে নিশ্চিত করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
অর্থনৈতিক-নিরাপত্তা-অভিবাসন অংশীদারিত্ব জোরদারে ঢাকায় যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী জনগণকে বাদ দিয়ে পাতানো উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে : রিজভী জয়পুরহাটে আবু সালাম হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড উগান্ডার বিশ্বকাপ দলে ৪৩ বছর বয়সী ক্রিকেটার রাফায় অভিযান নিয়ে নেতানিয়াহুকে আবারো সতর্ক করলেন বাইডেন ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লে হাসপাতাল খালি রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ইসরাইল ও হামাসকে যুদ্ধবিরতির জন্য ‘আরো প্রচেষ্টা চালাতে’ জাতিসঙ্ঘ প্রধানের আহ্বান পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ নিয়ে সিদ্ধান্ত ১০ জুন সখীপুরে চেতনানাশক স্প্রে করে ব্যবসায়ীর বাড়িতে চুরি ফতুল্লায় হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার প্রধানমন্ত্রীর সাথে আইওএম মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ

সকল