২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত কঠিন যুদ্ধে

তাদের বাঁচাতে হবে

-

আয় না বাড়লেও বাংলাদেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত কোটি কোটি মানুষের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে হু হু করে। আগে থেকেই তাদের আয় সীমিত ও স্বল্প। ‘দিনে এনে দিনে খাওয়া’ লোক যেমন অসংখ্য, তেমনি প্রতিনিয়ত গুনে গুনে দেখেশুনে কষ্ট করে খরচ করতে হয় অজস্র মানুষকে। প্রধানত করোনা মহামারীজনিত কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংসারের অপরিহার্য দৈনন্দিন খরচ মেটাতে বহু কষ্টের সঞ্চয়ের অর্থ ব্যয়ে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। এমনকি, বাংলাদেশের অনেক দিনমজুরসহ সাধারণ মানুষ চড়া সুদের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছেন। তা থেকে মুক্তির উপায় কী কিংবা কত দিনে তা সম্ভব, কেউ জানে না।
একটি সহযোগী দৈনিকের সাম্প্রতিক একটি প্রধান প্রতিবেদনে প্রসঙ্গক্রমে আরো বলা হয়েছে, মহামারীর ভীতি অনেকাংশে হ্রাস পেলেও দেশবাসীর মনে ভর করেছে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মহাতঙ্ক। শীতের প্রাক্কালে এ সময়ে অতীতে কোনো সময়ে আলু-সবজি-পেঁয়াজের দাম এতটা বাড়েনি। চাল-ডাল-তেল-মাছ-গোশতের দামও অব্যাহত গতিতে বেড়েই চলেছে। কিন্তু দেশের মানুষের আয় বাড়েনি, বরং তা কমে গেছে গত কয়েক মাসে। তাই কোনোক্রমে ‘দিনযাপন আর প্রাণ ধারণের গ্লানি’ বহন করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এমনিতেই কোভিড-১৯ সংক্রমণে আয়-রোজগারের পথ প্রায় বন্ধ। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিপণি ও বিপণনে মারাত্মক অচলাবস্থা। অনেকে কাজ হারিয়ে দিশেহারা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ক্রমান্বয়ে ঊর্ধ্বগতির সাথে জীবনযাত্রার ব্যয় হু হু করে বাড়ছে। বিশেষত রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোতে খরচ বাড়ছে প্রতিদিন। গতবার পেঁয়াজের দামে ‘আগুন লেগেছিল’। মাঝখানে এটা কিছু কমে আবার বাজার খুব ‘তেতে উঠেছে’ যাতে ‘হাত দেয়া’ নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অসাধ্য। শাকসবজি, মাছ ও আলুসহ কাঁচাবাজারের সব পণ্য দামের দিক দিয়ে রেকর্ড গড়েছে।
সহযোগী দৈনিক পত্রিকায় বলা হয়েছে, বস্তিবাসী, গ্রামের গরিব মানুষ কিংবা শহরের দিনমজুর ও রিকশা শ্রমিকরা অনেকসময়ে ডাল-আলুভর্তা-পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে ভাত খেতে পারতেন; কিন্তু গত ছ’মাসে সেটিও তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে অগ্নিমূল্যের দরুন। তারা রুজির উপায় হারিয়ে ধারকর্জ করে বহু কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। পরিজন নিয়ে তাদের করতে হচ্ছে মানবেতর জীবন যাপন। অনেকে বেঁচে থাকার জন্য নিত্যদিনের বাজেট আরো ছোট করে আনছেন। ফলে জীবন ও সংসার কোনোমতে টিকিয়ে রাখতে গেলেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের বিরতিহীন ঊর্ধ্বগতি তো আছেই, এর সাথে প্রধানত করোনা মহামারীজনিত চিকিৎসায় ব্যয় করতে হচ্ছে অনেক।
এ অবস্থায় চোখে-মুখে আঁধার নেমেছে সীমিত আয়ের অসংখ্য মানুষের। ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে না পেরে তারা ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় ঢাকাসহ বড় শহরগুলো থেকে গ্রামের আরো অনিশ্চিত জীবনে প্রত্যাবর্তন করছেন। দিনমজুরসমেত নিম্নবিত্ত বহু লোক মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে চক্রবৃদ্ধিহারে ঋণ নিয়ে আর শোধ করতে পারছেন না। কারণ তাদের রোজগার কমে গেছে এই করোনাকালে। এমনকি মহামারী অনেকের আয়ের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। অথচ সরকারের ব্যাপক ঢক্কানিনাদ ও বাহারি প্রচারণা সত্ত্বেও নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি। তারা হাত পাততে পারছেন না অন্যের কাছে। এ ক্ষেত্রে তাদের আত্ম সম্মানবোধ ছাড়াও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার জীবিকার্জনে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি হওয়া। বর্তমান অবস্থায় তাই পরস্পর সাহায্য করাও সম্ভব হয়ে উঠছে না। ফলে অনেকে সঞ্চয়ের যৎসামান্য অর্থও ভেঙে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন। তারা জানেন না, এই শেষ সম্বলও শেষ হয়ে গেলে কিভাবে চলবেন আর কেমন করে সংসার চালাবেন।
বিদ্যমান আয়বৈষম্য ও সামাজিক শোষণরোধসহ পর্যাপ্ত আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করে মধ্য ও নিম্নবিত্ত, তথা জনগণের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশকে বাঁচাতে হবে অবিলম্বে। আর সে দায়িত্ব সরকারেরই। তাই ‘তেলা মাথায় তেল’ না দিয়ে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে উদ্যোগ নেয়া জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement
জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলো ভানুয়াতু বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু

সকল