বাংলাদেশে রোগব্যাধি অসংখ্য। প্রতিনিয়ত নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। অথচ আজো দেশে রোগ নির্ণয় ও গবেষণা করার উপযোগী স্বাধীন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ইনস্টিটিউট নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের আওতায় একজন পরিচালকের নেতৃত্বে চলছে এখনকার বহুলালোচিত আইইডিসিআর (রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট)-এর কার্যক্রম। অভিযোগ, গবেষণাকর্মে নানা বাধাবিপত্তির মুখে পড়তে হয় সেখানে। এই প্রতিষ্ঠানকে সত্যিকার অর্থে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের মানে উন্নীত করা উচিত বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত। দেশের সব বিভাগ ও জেলা সদরে এর শাখা থাকাও প্রয়োজন। তাহলে করোনার মতো জীবাণুঘটিত কালব্যাধি কিংবা যেকোনো মহামারীর মোকাবেলায় সাথে সাথে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা যেতে পারে।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, পাশের ভারতসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে রোগতত্ত্ব, নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো জাতির স্বার্থেই পরিচালিত হয়ে থাকে সরাসরি প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়। এসব প্রতিষ্ঠান দেশের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণার পাশাপাশি কোথাও অজ্ঞাত ব্যাধি অথবা নতুন ভাইরাসের প্রকোপ দেখা গেলে তার ওপর গবেষণা করে। এ জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, সাজসরঞ্জাম ও গবেষণাগারসমেত সব কিছু নিশ্চিত করা হয় যথাসময়ে; কিন্তু বাংলাদেশে তা দেখা যায়নি। এ কারণে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাতে হয়। আজো ঢাকায় মহাখালীর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
‘আইইডিসিআর’ নামে সংক্ষেপে পরিচিত এই প্রতিষ্ঠানের জনবল প্রায় সোয়া শ’। তাদের মধ্যে আছেন গবেষক থেকে সাধারণ কর্মচারী পর্যন্ত। এর বাইরে প্রকল্পভিত্তিক লোকজনও রয়েছেন। দরকার অন্তত অর্ধশত যানবাহন (অ্যাম্বুলেন্সসহ)। অথচ তিন-চারটির বেশি যান নেই। নিজস্ব স্বয়ংসম্পূর্ণ মোবাইল ল্যাব প্রয়োজন। বর্তমানে এ জন্য যে ভ্যান আছে, তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রিত। অভিযোগ পাওয়া গেছে, গবেষক নন, অন্য কর্মকর্তাকে বিশেষত অবসরের আগে পদায়ন করা হয় গবেষণাগারে। আইইডিসিআরের পাঁচটি ল্যাব ছোট ছোট কক্ষে চলছে। এখন কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় পাশের নির্মাণাধীন ভবনেও ল্যাবের কাজ চালাতে হচ্ছে। সেখানেই গবেষণা করা হচ্ছে ভাইরোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, এন্টোমোলজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে। তবে জেলাগুলোতে, এমনকি বিভাগীয় পর্যায়ে কোনো গবেষণাগার বা শাখা নেই বলে যানজটের ধকল সয়ে প্রয়োজনে দূরবর্তী স্থানে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আনতে হয়। এরপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করতে হয়। এ দিকে, ভ্রাম্যমাণ গবেষণাগার ভ্যানের অভাবে জীবাণুযুক্ত আলামত স্থানান্তর করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। সূত্রমতে, আইইডিসিআরের পৃথক হাসপাতাল দরকার। তা হলে সন্দেহভাজন ব্যক্তির রোগ নিয়ে গবেষণা আর চিকিৎসাপদ্ধতি প্রদর্শন সহজ হবে। বিশেষত বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান একান্ত অপরিহার্য। আইইডিসিআরকে স্বনির্ভর ও স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হলে গবেষণাসহ জরুরি কাজের জন্য অন্যের ওপর আর নির্ভর করতে হবে না। তখন এ জন্য আর্থিক সমস্যা যেমন হবে না, তেমনি প্রয়োজনে প্রত্যন্ত এলাকায় নিজস্ব যানে দ্রুত গবেষক টিম গিয়ে রোগের নমুনা সংগ্রহ করা সহজ হবে।
বিশেষত করোনাভাইরাস-জনিত মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে এ মুহূর্তে রোগী শনাক্ত করা, তথা ফলপ্রসূ পরীক্ষা-নিরীক্ষা সবিশেষ গুরুত্ববহ। তাই রোগতত্ত্ব, নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণার কার্যকর উদ্যোগ নিতে আর বিলম্ব নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা