০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বন্দুকযুদ্ধ প্রকৃত সমাধান নয়

অভিযান চলুক দুর্নীতির বিরুদ্ধে

-

বন্দুকযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এবার বন্দুকযুদ্ধের কারণ দেখানো হচ্ছে ‘মাদকবিরোধী’ অভিযান। দেশে প্রতিদিন অভিযান চলছে। দিন শেষে নিহতের একটা সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। সরকার এ ক্ষেত্রে সাফল্য দাবি করছে। মাদকবিরোধী অভিযান অবশ্যই প্রয়োজন। শুধু প্রয়োজন কেন, জরুরি বটে। তবে বন্দুকযুদ্ধের যে ‘সংস্কৃতি’ চালু করা হয়েছে তা বোধকরি, কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।
রাষ্ট্র তার সন্তানতুল্য নাগরিকদের এভাবে অভিযান চালিয়ে হত্যা করলে, সেটি বিচারবহির্ভূত হত্যার নামান্তর। এটা দেশের আইন, নীতিশাস্ত্র ও ধর্মাচার কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। মাদকঅপরোধীদের হত্যা করা যেতে পারে ঘটনাক্রমে, কিন্তু যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে এটা বৈধতা পেতে পারে না। একবার আইনের মুখোমুখি করে বিচার করে, তা যত সংক্ষিপ্তই হোক, তারপর তার চূড়ান্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। প্রয়োজনে এ লক্ষ্যে নতুন আইনের ব্যবস্থা করা সম্ভব।
মাদক যেভাবে আমাদের সমাজকে গ্রাস করে চলেছে, তাতে অভিযান চালানো সবাই সমর্থন করে। কিন্তু এমন অভিযানে গুলি করে বিনা বিচারে হত্যার ফল শেষ পর্যন্ত ভালো হয় না। বরং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সমাজকে অন্যভাবে গ্রাস করে ফেলে। ভিন্ন ধরনের নেতিবাচক পরিণতি ডেকে আনে। মানুষের ভেতর নিষ্ঠুরতার জন্ম নেয়। এটা শেষ পর্যন্ত সমাজের ক্ষতি ছাড়া উপকার করে না। তা ছাড়া আপাতত বাহবা পাওয়া সম্ভব হলেও এর রাজনৈতিক অপব্যবহার শেষ পর্যন্ত নিন্দার ক্ষতের সৃষ্টি করে; যার ‘চিকিৎসা’ নেই। আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হলে সমাজের যে ক্ষতি ডেকে আনা হয়, তার প্রতিবিধান করার কোনো সুযোগ থাকে না।
অপরাধ সব যুগে ছিল। সব অপরাধ নৈতিক আহ্বান দিয়ে সমাধান করা যায় না। তাই বলে, নৈতিকতা উপেক্ষা করা হলে মানুষের সমাজ টিকে থাকে না এবং সেটা একধরনের বর্বর যুগকে আমন্ত্রণ করে আনে। তা ছাড়া তরুণদের মনে বিচারবহির্ভূত হত্যা সব সময় ভীতির জন্ম দেয় না। বরং তারা একধরনের দ্রোহ লালন করে; যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য নতুন এক সঙ্কট জন্ম দেয়।
আমরা জানি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছিল বাম চরমপন্থী উৎপাত ঠেকানোর জন্য। সেটি হয়েছিল স্বাধীনতার পরপরই। তারপর বিভিন্ন বাহিনী এ ধরনের হত্যার শিকার হয়েছে। সম্প্রতি চরমপন্থী ধর্মীয় সন্ত্রাস দমনের স্বার্থে এ ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে। এতে লাভ হয়েছে, তারা কেউ প্রকাশ্যে নেই, কিন্তু সমাজ থেকে তারা নির্মূল হয়েছে, এটা বলা কঠিন।
আমাদের সমাজে দুর্নীতির যে অপ্রতিহত প্রভাব, তা তো মাদকের মতোই ক্ষতিকর। কোনো কোনো দুর্নীতি তার চেয়েও ভয়াবহ রূপ নিয়ে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জেঁকে বসেছে। এ কারণেই মাদক ছড়িয়ে পড়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারের অভিযান দুর্নীতির বিরুদ্ধে হওয়াই অধিকতর যুক্তিযুক্ত। কারণ সব কিছুই দুর্নীতির উদর থেকে জন্ম নিচ্ছে। তাই আশা করি, বিচারবহির্ভূত হত্যার ব্যাপারে এত উৎসাহ না দেখিয়ে দুর্নীতিবিরোধী আইনের শাসন নিশ্চিত করাই প্রথম কর্তব্যরূপে গণ্য হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠল : এবারে কেমন হবে উৎপাদন টাঙ্গাইলের আ.লীগের সাধারণ সম্পাদককে নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইতে বললেন এমপি জয় সাঁথিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান মিরাজুল বিশ্বাস গ্রেফতার মিল্টন সমাদ্দার আটক ভূরুঙ্গামারীতে অটোরিকশার ধাক্কায় শিশু নিহত শ্রমিকের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে : অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান গাজায় যুদ্ধ বন্ধে রাজি হবো না : ব্লিনকেনকে নেতানিয়াহু আর ইশারা নয়, সরাসরি মুসলিমদের নিশানা করেই ভোট প্রচারে মোদি বিএনপির হাতে শ্রমিকের রক্তের দাগ : ওবায়দুল কাদের নিপীড়িতরাই বিজয়ী হ‌বে : রিজভী ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের ওপর ইসরাইলি সমর্থকদের হামলা

সকল